ঝালকাঠির মেয়রের বিরুদ্ধে ১০ কাউন্সিলরের অপসারন-অনাস্থা বিষয়ে মন্ত্রনালয়ের নির্দেশে তদন্ত শুরু করেছে জেলা প্রশাসক

ঝালকাঠি পৌরসভার মেয়র আফজাল হোসেনকে অপসারনের দাবীতে ১০ কাউন্সিলরের আনিত অনাস্থা প্রস্তাবের বিষয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয় নির্দেশে তদন্ত শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। পূর্বক মতামত সহ প্রতিবেদন প্রদানের জন্য দিয়েছে। মন্ত্রনালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের পৌর-১ শাখার উপসচিব মোঃ খলিলুর রহমান স্বাক্ষরিত ফ্যাক্স বার্তায় নির্দেশ ক্রমে ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ জহিরুল ইসলাম প্রথম দিন রবিবার সকাল সাড়ে ১০ টা থেকে পৌনে ১টা পর্যন্ত তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করেন।

মন্ত্রনালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের পৌর-১ শাখার ৪৬.০৬৩.০২৭.০১.০০.০০৭.২০১৩-৮৩ নং স্মারকে প্রেরীত পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ৩০ নভেম্বর ২০১৪ তারিখ বিভিন্ন অনিয়ম-স্বেচ্ছাচারীতার অভিযোগে ঝালকাঠি পৌর মেয়র আফজাল হোসেনকে অপসারনের জন্য ১০ কাউন্সিলর অনাস্থা ও অপশারনের আবেদন করেন। তাই স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন, ২০০৯ এর ৩৮ ধারা অনুযায়ী কাক্রম গ্রহন পূর্বক মতামত সহ প্রতিবেদন প্রেরনের জন্য ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক কে নির্দেশ দেন।

জেলা প্রশাসক মোঃ শাখাওয়াত হোসেন তদন্ত কর্মকর্তা হিসাবে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ জহিরুল ইসলাম কে দায়িত্ব প্রদান করলে তিনি ১৫ ফেব্রুয়ারী রবিবার শুনানীর দিন ধার্য করে অভিযুক্ত মেয়র আফজাল হোসেন ও অনাস্থা সহ অপশারন আবেদনকারী প্যানেল মেয়র কাউন্সিলর লতিফা হেলেন সহ ১০ কাউন্সিলর কে নির্ধাতির দিন-সময়ে তাদের সাক্ষ্য-প্রমান ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে উপস্থিত থাকতে ১০ ফেব্রুয়ারী একপত্র প্রেরন করেন।

কাউন্সিলররা অভিযোগে উল্লেখ করেছে, মেয়র আফজাল ঝালকাঠি পৌরসভার ১০ কাউন্সিলরকে উপেক্ষা করে ২০১৪ সালের ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার গরীব-অসহায় মানুষের জন্য সরকারের বরাদ্দকৃত ভিজিএফ চাল নামমাত্র বিতরন করে সিংহভাগ চাল আত্মসাৎ করেছেন। ক্ষমতার অপব্যবহার করে ১০ কাউন্সিলরের বিগত ১৫ মাসের সম্মানী ভাতা প্রদান বন্ধ করে গুরুত্বর অসৎ আচারন করে আসছেন। বিগত ১৫ মাসে পৌর পরিষদের মাসিক সভায় অংশ গ্রহন না করে দুই কাউন্সিলরকে হাতে রেখে খেয়াল খুশী মতো মুলতবি সভা করে পৌরপরিষদ কে অকার্যকর করে রেখেছেন।

পৌর বিধি ও আইন লংঘন করে পৌরপরিষদের সিদ্ধান্ত ছাড়াই ক্ষমতার অপব্যবহার করে দরপত্র কমিটি, ইজারা টোল ইত্যাদি আর্থিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। তিনি ২০১৪-১৫ অর্থ বছরের বাজেট প্রনয়নের জন্য পৌরপরিষদের কোন বিশেষ সভা না করে একক সিদ্ধান্ত বলে সম্পূর্ন বেআইনী ভাবে নিজের খেয়াল-খুশী মতো বাজেট প্রনয়ন করেছেন। এছাড়া মেয়র আফজাল ‘আর্থিক সাহায্য প্রদানের নামে’ দীর্ঘ পনের মাসে বৈধ পৌরপরিষদের সিদ্ধান্ত-অনুমোদন উপেক্ষা করে কয়েক কোটি টাকা প্রদানের নামে আত্মসাৎ সহ উপরোক্ত অভিযোগে মেয়র আফজাল কে অপসারনের জন্য অনাস্থা প্রস্থাব গ্রহন করেন।

প্রসঙ্গত, মেয়র আফজাল পৌরপরিষদের সিদ্ধান্ত বা মতামতকে তোয়াক্কা না করে বেআইনী ভাবে পৌরসভার তহবিল থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে আসছেন।সম্প্রতি মেয়র আফজাল গ্রুপ ও ১০ কাউন্সিলর গ্রুপের মধ্যে ঝালকাঠি পৌর কার্যালয়ে সংঘর্ষ ও মেয়রের বিরুদ্ধে শহরে ঝাড়– মিছিল করা হয়। এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে মেয়র আফজাল তাকে হত্যা চেষ্টার নেপথ্যে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের অন্যতম উপদেষ্টা শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুর বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন। তিনি ঝালকাঠি পৌরসভায় নরসিংদির লোকমান ট্রাজিডির আশংকা প্রকাশ করেন।



মন্তব্য চালু নেই