ওসি-এসপির ভয় দেখিয়ে ৩২ হতদরিদ্রদের ৪৭ হাজার টাকা

ঝালকাঠির কাইউম মৃধা ও রফিক মেম্বারের নেতৃত্বে একটি চক্রের হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ

ঝালকাঠির পারমহর ও বাউকাঠি এলাকার হতদরিদ্র মানুষকে অর্থসহায়তা প্রদানের কার্যক্রম হানা দিয়ে ইউপি সদস্য-সন্ত্রাসী-দালাল-এক টিভির প্রতিনিধি ও দুই পুলিশ সদস্য মিলিত একটি চক্র ওসি, এএসপি সার্কেল টেলিভিশনে সংবাদ প্রকাশের ভয় দেখিয়ে নাম ভাংগিয়ে ৪৭ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

টাউট-বাটপারদের চক্রটি ঢাকা থেকে আগত সোসাইটি অফ সোস্যাল এন্ড টেকনোলজিক্যাল সাপোর্ট বাংলাদেশ এর দুই কর্মকর্তাকে গালাগাল, শারীরিক লঞ্চিত করে ও জামায়াতের চক্র সাজিয়ে পুলিশে সোপর্দ করার ভয়ভীতি দেখিয়ে ২লাখ টাকা দাবীর পর নিরুপায় হয়ে এ টাকা দিতে বাধ্য হয়েছে বলে অভিযোগে জানিয়েছে।

উক্ত চক্রটি নানারকম বাকবিতন্ডা ও গালাগাল সত্বেও কোন টাকা না দিলে তারা এক পুলিশ কনেষ্টবল সহ এএসআই মিনহাজ কে ডেকে আনলে এবং ঢাকা থেকে আগত কর্মকর্তাদ্বয়কে আটক করে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দিলে তাদের ৪৭ হাজার টাকা তুলে এ চক্রের হাতে দিতে বাধ্য হয়েছে বলে অভিযোগে জানা গেছে।

জানা গেছে, বাউকাঠি ওয়ার্ডের মহিলা মেম্বার সাফিয়া বেগম ও পারমহর গ্রামের সন্তান ঢাকার একটি বেসরকারী সংগঠনে চাকুরিরত খলিলুর রহমানের মাধ্যমে এলাকার ৩০/৩২ টি হতদরিদ্র, অসহায় ও ভিটেমাটিহীন পরিবারকে তালিকাভূক্ত করে ঢাকার উত্তরা সোসাইটি অফ সোস্যাল এন্ড টেকনোলজিক্যাল সাপোর্ট বাংলাদেশ কার্যালয়ে আর্থিক সহায়তার আবেদন জানায়।

উক্ত আবেদনের প্রেক্ষিতে সংগঠনটি তাদের হতদরিদ্র সহায়তা ও দারিদ্র বিমোচন প্রকল্পের আওতায় এক বছর পূর্ব থেকে নিয়োমানুযায়ী নগদ আর্থিক সহায়তা প্রদান করে আসছে। সংখ্যায় খুবই সীমিত হওয়ার কারনে অনেক হতদরিদ্র পরিবারই তালিকাভূক্ত না হওয়ায় তাদের মধ্যে ক্ষোভ থাকায় তার বিভিন্ন মহলে অভিযোগ করলেও তালিকাভূক্তরা এতে দারুন ভাবে উপকৃত হয়ে আসছিল বলে তাদের সাথে আলাপকালে জানায়।

এ সহায়তা আনায়নকারী উক্ত সংস্থার গাড়ী চালক পদে কর্মরত খলিলুর রহমান, মহিলা মেম্বার সাফিয়া বেগমের ছেলে ব্যবসায়ী শাহিন সিকদার, পরমহল গ্রামের বাসিন্ধা মঞ্জু খলিফা ও তার ভাই গিয়াস খলিফা সহ বেশ কয়েকজন জানায়, শনিবার বেলা ১২ টায় বাউকাঠি বাজারে নবগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের পূর্ব পাশের এক বাড়ীতে ৩য় দফায় ৬মাসের অনুদান বাবদ জনপ্রতি ১২ হাজার টাকা বিতরনকালে বাউকাঠির চিহ্নিত সন্ত্রাসী কাইউম মৃধা বাসন্ডা ইউনিয়নের দারাখানা ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রফিক হাওলাদার, শাহিন ওরফে পুলিশ শাহিন ও একটি টিভির প্রতিনিধি সহ এ দলটি হানা দিয়ে বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধূমকি ও পুলিশের ভয়-ভীতি দেখাতে শুরু করে।

গিয়াস খলিফা আরো জানায়, বিকাল ৪ টায় এ চক্রটি পুনরায় টাকা পয়সার দাবী করলে ও এসআই মিনহাজ, এক কনেষ্টবল মোবাইল ফোনে করে ডেকে এনে ওসি-এএসপি সার্কেল কে ম্যানেজের কথা বলে চাপ সৃষ্টি করে। নিরুপায় হয়ে খলিলের কাছ থেকে টাকা নিয়ে এএসআই মিনহাজকে ১০ হাজার, সন্ত্রাসী কাইউম মৃধা এএসপি সার্কেলের নাম বলে ৭ হাজার, একজন টিভি প্রতিনিধি ও তার সঙ্গীকে ১০ হাজার টাকা, রফিক মেম্বার বাকীদের জন্য ২০ হাজার টাকা সহ মোট ৪৭ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়।

এ ব্যাপারে রফিক মেম্বার কে জানতে চাইলে তিনি ঘটনাস্থলে যাওয়া বা কোন প্রকার টাকা পয়সা লেনদেনের কথা অস্বীকার করেন। কাইউম মৃধা বলেন, সে এধরনের কোন ঘটনার সাথে জড়িত নয়। তাকে বাউকাঠি বসে ২ হাজার টাকা সেধেছিল কিন্তু তিনি নেন নি জানিয়ে সে অভিযোগকারীদের গালাগাল করেন। শাহিন বলেন, আমি এধরনের ঘটনা জানিনা বা কারো কাছ থেকে একটি টাকা নিয়েছি বলতে পারলে যেকোন শান্তি মাথা পেতে নিব। আর উক্ত টিভির প্রতিনিধি বলেন, তিনি ১২ টার দিকে নিউজের প্রয়োজনে সেখানে গিয়ে ১টার দিকে চলে এসেছি। তাই বিকালে কিছু ঘটে থাকলে আমি তা বলতে পারবোনা।



মন্তব্য চালু নেই