জুট মিলের ১০৪ জন শ্রমিক-কর্মচারী অবসরকালীন ভাতা পাননি

রাজশাহী : ২০১০ সালে রাজশাহী জুট মিল থেকে অবসর গ্রহণ করেছেন শ্রমিক শুকুর আলী। সংসারে তার ৭ জন সদস্য। অবসর গ্রহণের ৫ বছর হয়ে গেলেও এখনো অবসরকালীন ভাতার টাকা পান নি। তখন থেকে তিনি এর ওর দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। ঘুরছেন অফিসের এক বারান্দা থেকে আরেক বারান্দায়। খরচ করে ফেলেছেন চাকরি থাকাকালীন জীবনের যা কিছু সঞ্চয়।

শুকুর আলী বলেন, এতো বড় সংসার নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছি। আগে চাকরি করতাম, তখন তবু কোনো মতে টেনেটুনে সংসার চলত। আশা ছিলো চাকরি শেষে কিছু টাকা পাবো তা দিয়ে কষ্ট করে হলেও জীবনটা কেটে যাবে। কিন্তু পাঁচ বছর পার হলেও টাকা পাই নি।

২০১৪ সালে চাকরি থেকে অবসরে যান কাটাখালী ইমাইদপুর এলাকার রুব্বান আলী। তিনি ২ বছর হলো মারা গেছেন। তার ছেলে শাহজাহান বলেন, বাবা মারা যাওয়ার আগে কিছু টাকা পেয়েছিলাম। তারপর আর কোনো টাকা পাই নি। মিলে গেলে কর্মচারীরা বলেন, অন্যদের টাকা দেয়া হলে তোমাদেরও টাকা দেয়া হবে।

কাটাখালী পালপাড়া এলাকার খলিল আলী চাকরির তিন বছর থাকতেই মারা যান। সংসারের হাল ধরেন তার স্ত্রী শরীফা। তিনি বলেন, দুই ছেলে দুই মেয়ে নিয়ে সংসারের ৫ জন সদস্য আমাদের সংসারে। এর মধ্যে দুই মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। দুই ছেলে এখনও লেখাপড়া করে।

স্বামী মারা যাবার পরে কিছু টাকা পেয়েছিলাম, কিন্তু বাকি টাকা এখনো পাই নি। টাকা দিবে বলে কারখানা থেকে আবেদন করতে বলেছিল ৩ মাস আগে। আবেদন করা হলেও এখনো পর্যন্ত কোনো টাকা পাই নি বলে জানান তিনি।

রাজশাহী জুট মিল থেকে ২০০৯ সালে অবসরে যাওয়া ১০৪ জন শ্রমিক-কর্মচারীর সদস্যরা অবসরকালীন ভাতা না পাওয়ায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তারা আশায় আছেন কবে এ টাকা পাবেন। তাদের ছোট্ট স্বপ্ন পূরণ করবেন।
রাজশাহী জুট মিলের শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি এমদাদুল হক জানান, মিলের শ্রমিক-কর্মচারী-কর্মকর্তার তিন মাসের বেতন বকেয়া আছে। এর মধ্যে এ মাসের বেতন দেয়া হয়েছে। ২০০৯ সালের অবসরে যাওয়া ১০৪ জন শ্রমিক-কর্মচারীরা তাদের অবসরকালীন ভাতা এখনো পান নি।

রাজশাহী জুট মিলের উপব্যবস্থাপক (প্রশাসন) জাফর বায়েজীদ বলেন, গ্র্যাচুইটির টাকা ২০০৯ সাল থেকে বাকি রয়েছে। ফান্ড না থাকায় টাকা দেয়া সম্ভব হয় নি। সরকার থেকে ফান্ড দেয়া হলে তাদের টাকা দিয়ে দেয়া হবে।



মন্তব্য চালু নেই