‘জিয়া দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি’, ঢাবির রেজিস্ট্রারকে অব্যাহতি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) দিবস উপলক্ষে প্রকাশিত স্মরণিকায় জিয়াউর রহমানকে দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি উল্লেখ করে প্রবন্ধ লেখায় ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রেজাউর রহমানকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার (০১ জুলাই) বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ রেজাউর রহমানকে অব্যাহতি দিয়ে অফিস আদেশ জারি করেছে। এতে সই করেছেন উপ-রেজিস্ট্রার মুন্সি শামসুদ্দীন আহমেদ।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক সাংবাদিকদের বলেন, ‘স্মরণিকায় লেখাটি রেজাউর রহমানের নিজের লেখা। যেহেতু এটা ভারপ্রাপ্ত রেজাউর রহমানের ‘বাইলাইন লেখা’ তাই এর দায়-দায়িত্ব লেখককে বহন করতে হবে। এ কারণে রেজাউর রহমানকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।’
ঢাবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রেজাউর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ৯৫ বছর উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব। তিনি ‘স্মৃতি অম্লান’ শিরোনামে একটি নিবন্ধ লিখেছেন। সেখানে তিনি মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের পরিচিতি অংশে লিখেছেন, জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি, সাবেক সেনাপ্রধান ও একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা।
বিষয়টি নজরে এলে শিক্ষার্থীরা এর প্রতিবাদ জানান। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান উদ্বোধন ও শোভাযাত্রা শেষে টিএসসিতে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় বিষয়টির প্রতিবাদ জানান বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই সদস্য সুভাষ সিংহ রায়। পরে উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক প্রসপেক্টাসটি বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করেন এবং তদন্ত কমিটি গঠন করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন।
জিয়াউর রহমানকে বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি লেখায় ক্ষোভে ফুসতে থাকে ছাত্রলীগ কর্মীরা। শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে পৌনে ১টা পর্যন্ত সৈয়দ রেজাউর রহমানকে তার নিজ কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আমজাদ আলী রেজাউর রহমানকে মুক্ত করেন।
এরপর উত্তেজিত বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু করেন। দুপুরের দিকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি আবিদ আল হাসান ও সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্স নেতাকর্মীদের নিয়ে মধুর ক্যান্টিন থেকে একটি মিছিল নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে এসে বিক্ষোভ শুরু করেন। তাদের দাবি, রেজিস্ট্রারের পদত্যাগ। বিকেল ৩টার দিকে বিক্ষোভ থেকে উপাচার্যের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে।
উপাচার্যের গাড়ি ভাঙচুরের পরও চলতে থাকে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ। এ পরিস্থিতিতেই রেজাউর রহমানকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। রেজাউর রহমানকে অব্যহতি দেওয়ার পর ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা তাদের আন্দোলন স্থগিত করে। একই সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতারা ঘোষণা দিয়েছে আগামী ১৭ জুলাইয়ের মধ্যে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাকিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া না হলে আবারও আন্দোলন নামবেন।
মন্তব্য চালু নেই