জিম্বাবুয়ে আবারও হোয়াইটওয়াশ

সিরিজের শেষ ওয়ানডেও জিতে জিম্বাবুয়েকে তিন ম্যাচের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করল বাংলাদেশ। মুস্তাফিজুর রহমানের দুর্দান্ত বোলিংয়ে শেষ ম্যাচে জিম্বাবুয়েকে ৬১ রানে হারিয়েছে মাশরাফি বিন মুর্তজার দল।

সর্বশেষ বাংলাদেশ সফরেও ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল জিম্বাবুয়ে। গত বছরের নভেম্বরে জিম্বাবুয়ে ৫-০ ব্যবধানে হারায় টাইগাররা। সব মিলিয়ে এবার নিয়ে তৃতীয়বার জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশ করল টাইগাররা।

বুধবার মিরপুরে আগে ব্যাট করে তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস ও মাহমুদউল্লাহর ফিফটিতে ৯ উইকেটে ২৭৬ রান করে বাংলাদেশ। জবাবে মুস্তাফিজুর রহমানের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ৪৩.৩ ওভারে ২১৫ রানে অলআউট হয় যায় জিম্বাবুয়ে। ৫ উইকেট নেন মুস্তাফিজ।

২৭৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে মুস্তাফিজুর রহমানের করা ইনিংসের প্রথম বলেই চার মেরে শুরু করেছিলেন চামু চিবাবা। তবে পরের বলেই চিবাবার মিডল স্টাম্প উপড়ে দেন মুস্তাফিজ। সঙ্গে সঙ্গে উল্লাসে ফেটে পড়ে মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের হাজার হাজার দর্শক।

এরপর নিজের চতুর্থ ওভারে এসে আরেক ওপেনার রেগিস চাকাভাকেও বিদায় করেন মুস্তাফিজ। কাভারে চাকাভার (১৭) ক্যাচ নেন নাসির হোসেন।

ইনিংসের নবম ওভারে নাসিরকে আক্রমণে আনেন মাশরাফি। আর নিজের প্রথম ওভারের তৃতীয় বলেই দলকে সফলতা এনে দেন নাসির। ২১ রান করা ক্রেইগ আরভিনকে এলবিডব্লিউ করেন এই অফ স্পিনার। ফলে ৪৭ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে জিম্বাবুয়ে।

দ্রুত ৩ উইকেট হারানোর পর চতুর্থ উইকেটে শন উইলিয়ামস ও এল্টন চিগুম্বুরা মিলে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। বার বার বোলার পরিবর্তন করেও যখন সফলতা আসছিল না, তখন সাব্বির রহমানের হাতে বল তুলে দেন মাশরাফি। আর নিজের দ্বিতীয় ওভারেই চিগুম্বুরাকে (৪৫) ফিরিয়ে ৮০ রানের জুটি ভাঙেন সাব্বির। জিম্বাবুইয়ান অধিনায়ককে বোল্ড করেন এই লেগ স্পিনার।

চিগুম্বুরার বিদায়ের পর ম্যালকম ওয়ালারকে নিয়ে আরেকটি ফিফটি রানের জুটি গড়েন উইলিয়ামস। তবে দলীয় ১৮৬ রানে ওয়ালারকে (৩২) ফিরিয়ে ৫৯ রানের জুটি ভাঙেন আল-আমিন। কাভারে দারুণ এক ক্যাচ নেন নাসির। এর পরের ওভারেই উইলিয়ামসকে বিদায় করে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরান অধিনায়ক মাশরাফি। সাব্বিরের হাতে ধরা পড়েন ৬৪ রান করা উইলিয়ামস।

এরপর দলীয় ২০৭ রানে একই ওভারে সিকান্দার রাজা ও লুক জংউইকে ফিরিয়ে সফরকারীদের ম্যাচ থেকে ছিটকে ফেলেন মুস্তাফিজ। রাজার দুর্দান্ত এক ক্যাচ নেন সাব্বির। রাজা-জংউইকে পর পর দুই বলে আউট করে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও তৈরি করেছিলেন মুস্তাফিজ। হ্যাটট্রিকটা শেষ পর্যন্ত না হলেও নিজের পরের ওভারে এসে তিনাশে পানিয়াঙ্গারাকে ফিরতি ক্যাচ বানিয়ে ইনিংসে নিজের পঞ্চম উইকেট তুলে নেন মুস্তাফিজ। আর ইনিংসের পরের ওভারে মুজারাবানিকে ফিরতি ক্যাচ বানিয়ে হোয়াইটওয়াশের শেষ কাজটা সারেন আরাফাত সানী।

৩৪ রানের বিনিময়ে ৫ উইকেট নেন মুস্তাফিজ। মাত্র ১০ ম্যাচের ক্যারিয়ারে তৃতীয়বারের মতো ইনিংসে ৫ উইকেট পেলেন বাংলাদেশের এই তরুণ তুর্কি।

এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে তামিম ও ইমরুল ১৪৭ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়ে তিন’শর বেশি সংগ্রহের স্বপ্নই দেখিয়েছিলেন। তবে মাঝে দ্রুত বেশ কয়েকটি উইকেট হারানোয় সে স্বপ্ন আর পূরণ হয়নি। তবে মাহমুদউল্লাহর দারুণ ব্যাটিংয়ে শেষ পর্যন্ত ২৭৬ রানের সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ।

টানা দুই ম্যাচে ফিফটি করা ইমরুল ও সিরিজে প্রথম ফিফটির দেখা পাওয়া তামিম- দুজনের ব্যাট থেকেই রান আসে ৭৩ করে। ৯৫ বলে ৬টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৭৩ রানের ইনিংসটি সাজান ইমরুল। তামিমের ৯৮ বলে করা ৭৩ রানের ইনিংসে ছিল ৭টি চার ও একটি ছক্কা মার।

আর মাহমুদউল্লাহ ৪০ বলে ৫টি চার ও এক ছক্কায় ৫২ রানের ইনিংস খেলেন। এ ছাড়া মুশফিকুর রহিম ২৮ ও লিটন দাস ১৭ রান করে দলের সংগ্রহে অবদান রাখেন।

জিম্বাবুয়ের পক্ষে লুক জংউই ও গ্রায়েম ক্রেমার ২টি করে উইকেট নেন।



মন্তব্য চালু নেই