জামালপুরে এইডস’র ওষুধ আবিষ্কারের দাবি

মরণব্যাধি এইডস’র নিরাময় সম্ভব বলে দাবি করেছেন জামালপুরের মোস্তাফিজুর রহমান মোহন নামের এক কবিরাজি চিকিৎসক। তার বাড়ি জামালপুর শহরের মধ্য বাগেরহাটা এলাকায়।

মোহন তার পূর্বপূরুষদের কবিরাজি চিকিৎসা পদ্ধতির ওপর গবেষণা চালিয়ে দেশীয় গাছ-গাছালি ও লতা-পাতার নির্যাস দিয়ে এইডস নিরাময়ের ওষুধ আবিষ্কার করেছেন বলে দাবি করেছেন। তার আবিষ্কৃত ওষুধ এম এইডস কাট ১ সেবন করে ইতিমধ্যে তিনজন এইডস রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেছেন এবং চারজন রোগী ক্রমেই সুস্থ হতে থাকার প্রমাণপত্র পাওয়া গেছে। এ ছাড়া এইচআইভি আক্রান্ত দেশের বিভিন্ন এলাকার আরো পাঁচজন রোগীর চিকিৎসা সম্প্রতি শুরু করা হয়েছে বলে মোস্তাফিজুর রহমান জানিয়েছেন।

এইডস নিরাময়ের ওষুধ আবিষ্কারের দাবিদার মোহন জানান, তার পিতা ও পিতামহ দুইজনই কবিরাজ ছিলেন। তারা জীবদ্দশায় দেশীয় গাছ-গাছালি ও লতা-পাতার নির্যাস দিয়ে বিভিন্ন রোগের ওষুধ তৈরি করে রোগাক্রান্ত হাজার হাজার মানুষকে চিকিৎসা সেবা দিয়ে সুস্থ করেছেন। তিনি তার পূর্ব পুরুষদের ঔষধি তথ্যসূত্রের ওপর গবেষণা চালিয়ে দেশীয় গাছ-গাছালি ও লতা-পাতার নির্যাস দিয়ে আবিষ্কার করেছেন এইডস নিরাময়ের ওষুধ। পরীক্ষামূলকভাবে তিনি সেই ওষুধ সেবন করিয়ে ইতিমধ্যে চট্টগ্রামের স্বপন, ঢাকার আশরাফ এবং কুমিল্লার জেবুন্নাহার নামের তিনজন এইচআইভি-তে আক্রান্ত রোগীকে শতভাগ এইচআইভিমুক্ত করেছেন। এ ছাড়া ঢাকা মিরপুরের জামাল উদ্দিন, চট্টগ্রাম শহরের নাছির উদ্দিন, কুমিল্লা শহরের এম আর মামুন এবং নোয়াখালির মানিক মিয়াকে এইডসমুক্ত করতে তিনি গত তিন মাস ধরে নিয়মিত ওষুধ সেবন করাচ্ছেন।

মোহন আরো জানান, তিনি নিজের উদ্ভাবিত ওষুধ দিয়ে বিনামূল্যে এইডস রোগের চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রথমে কিছু প্রচারপত্র বিলি করেছিলেন। ওই প্রচারপত্রের সূত্র ধরে পর্যায়ক্রমে সাতজন এইডস রোগী তার কাছে চিকিৎসা নিতে আসেন। তিনি তাদেরকে চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য আগন্তুকরা এইডসে আক্রান্ত কিনা- তা নিশ্চিত করেন। এ জন্য আগন্তুকদের প্রথমে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অথবা ঢাকা ধানমন্ডি এলাকার পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পাঠিয়ে রোগীদের রক্ত পরীক্ষা করিয়ে জেনে নিয়েছেন রোগীর দেহে কী পরিমাণ এইচআইভি’র উপস্থিতি বিদ্যমান। পরে রোগীর শারীরিক অবস্থা এবং রোগের পরিধি জেনে সেই অনুপাতে নিজের উদ্ভাবিত ওষুধ বিনামূল্যে প্রদান করে তাদের চিকিৎসা শুরু করেন। এরপর তিন মাস ওষুধ সেবনের পর দ্বিতীয় দফায় রক্ত পরীক্ষা করান এবং চিকিৎসা শেষে তৃতীয় দফায় রক্ত পরীক্ষা করে রোগীর শরীর থেকে এইচআইভি এইডস রোগ নিরাময়ের বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছেন। একইভাবে গত এক বছরে তিনি তিনজন রোগীকে শত ভাগ সুস্থ করে মরণব্যাধী এইডস রোগের কবল থেকে রক্ষা করেছেন।

মরণব্যাধী এইডস থেকে মুক্তি পাওয়া চট্টগ্রামের স্বপন, ঢাকার আশরাফ ও কুমিল্লার জেবুন্নাহারের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলে জানা গেছে, তারা প্রত্যেকেই ঢাকার বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে রক্ত পরীক্ষা করে এইডস রোগী হিসেবে শনাক্ত হওয়ার পর মোহনের কাছে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছেন। এরপর দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আরো চারজন এইডস আক্রান্ত রোগী তার কাছে চিকিৎসা নিতে পর্যায়ক্রমে জামালপুরে আসেন। ওই নতুন চারজন রোগীর পরীক্ষা নিরীক্ষার প্রমাণপত্রের ভিত্তিতে তারা এইডস আক্রান্ত রোগী হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার পর তিনি তাদেরকে বিনামূল্যে এইডস নিরাময়ের ওষুধ প্রদান করেন। এসব রোগীদের প্রত্যেকেই তার দেওয়া ওষুধ টানা তিন মাস সেবন শেষে অনেকটাই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। ওই চারজন রোগী তার দেওয়া এইডস নিরাময়ের ওষুধ সেবনের তিন মাস পর ঢাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় অথবা ঢাকা ধানমন্ডি এলাকার পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে তাদের শরীর থেকে এইচআইভি’র মাত্রা বহুগুণে কমে আসার নিশ্চিত প্রমাণ পেয়েছেন এবং তারা প্রত্যেকেই শারীরিকভাবে সুস্থ্য হয়ে অকেটাই স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছেন বলে জানা গেছে।

মোহনের দাবি, তার উদ্ভাবিত ওষুধ এম এইডস কাট ১ সেবন করানোর মাধ্যমে এইডস আক্রান্ত প্রত্যেক রোগীকে সুস্থ করে তোলা সম্ভব। তাই তিনি সরকারি বা বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় একটি অত্যাধুনিক ল্যাবরেটরি স্থাপনের মাধ্যমে এইচআইভি আক্রান্ত রোগী শনাক্তকরণ ও তার উদ্ভাবিত এইডস নিরাময়ের ওষুধের মান নিয়ন্ত্রণ ও গুণাগুণ যাচাই করে তা বিশ্বমানের ব্যবহার উপযোগী করে গড়ে তুলতে চান। এ ছাড়া তিনি বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব এইডস আক্রান্ত রোগীদের বাঁচাতে তার উদ্ভাবিত ওষুধ প্রয়োগের জন্য বাংলাদেশের স্বাস্থ‍্য বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেছেন।-কালের কণ্ঠ



মন্তব্য চালু নেই