জনপ্রিয়তা প্রমাণ করতে চান বিদ্রোহীরা

আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থীরা তাদের জনপ্রিয়তা প্রমাণ করতে চান।

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করার শেষ দিন আজ রোববার। ইতিমধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে বলা হয়েছে বিদ্রোহী প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করার জন্য। অন্যথায় তাদের দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করার ঘোষণাও দেওয়া হয়েছে। তারপরও কিছু কিছু বিদ্রোহী প্রার্থীরা প্রমাণ করতে চান যে, দল থেকে যাদের মনোনয়নপত্র দেওয়া হয়েছে, তাদের থেকে জনপ্রিয়তা বেশি বিদ্রোহীদের।

কথা হয় যশোরের নওয়াপাড়া পৌরসভার আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থী ফারুখ হোসেনের সঙ্গে। তিনি রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘কোনো চাপের কাছে আমি নতি স্বীকার করব না। পৌর আওয়ামী লীগসহ তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা আমাকে সমর্থন দিয়েছে। আশা করি জনগণ আমাকে সমর্থন ও ভোট দিয়ে বিজয়ী করবেন।’

তবে একই পৌরসভার অন্য বিদ্রোহী প্রার্থী প্রাক্তন পৌর মেয়র সরদার ওলিয়ার রহমান তার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীকে সমর্থন দিয়েছেন।

অন্যদিকে একই পৌরসভার বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী মোশিয়ার রহমান এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেননি।

আমাদের সিলেট প্রতিনিধি জানিয়েছেন, সিলেট গোলাপগঞ্জ পৌরসভার আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করবেন না। তারা বলেছেন, দলের নেতা-কর্মীদের দেখিয়ে দিতে চান মনোনীত প্রার্থী থেকে তাদের জনপ্রিয়তা বেশি।

এদিকে পৌর নির্বাচনকে সামনে রেখে গত বুধবার রাতে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের বৈঠক হয়। ওই বৈঠকের পর বিদ্রোহী প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের জন্য ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেওয়ার কথা জানানো হয়।

পৌরসভা নির্বাচনে দল সমর্থিত প্রার্থীদের বাইরে প্রায় অর্ধশত আওয়ামী লীগ নেতার মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ে টিকে যায়। দলের দেওয়া আল্টিমেটামের পর তাদের অর্ধেকের বেশি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন বলে বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানান দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন।

এরপর গত শুক্রবার মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘আজ পর্যন্ত ৬০ শতাংশ বিদ্রোহী প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। যারা আজকের মধ্যে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেননি তাদের দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হবে। ১৩ তারিখের পর তাদের প্রথমে কারণ দর্শানোর নোটিশ এবং পরে আজীবন বহিষ্কারের চিঠি দেওয়া হবে।’

অন্যদিকে ইসির ব্যবস্থাপনা শাখা থেকে জানানো হয়, এবারের পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে ১ হাজার ২১৩ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। এতে দলীয় প্রার্থী ছিল ৭১০ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিল ৫০৩ জন। যাচাই-বাছাইয়ের সময় ৩৯ জন দলীয় প্রার্থী এবং ১১৮ জন স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। এখন বৈধ দলীয় প্রার্থী ৬৭১ জন এবং বৈধ স্বতন্ত্র প্রার্থী ৩৮৫ জন।

ইসি সূত্র থেকে আরো জানা যায়, ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা ২৩১ জন। আর বিএনপির বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা ২২৪ জন এবং জাতীয় পার্টির ৮৫ জন।

অন্যদিকে কাউন্সিলর পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন ১৩ হাজার ৬২৬ জন প্রার্থী। এদের মধ্যে মনোনয়ন বাতিল হয়েছে ৮৯৮ জনের। মোট বৈধ কাউন্সিলর প্রার্থীর সংখ্যা ১২ হাজার ৭২৮ জন। এর মধ্যে সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ২ হাজার ৫১৩ জন ও সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৯ হাজার ১৫৯ জন প্রার্থী বৈধ হয়েছেন।



মন্তব্য চালু নেই