জনগণ রক্ত দিয়ে এদের বিদায় করবে

অবরুদ্ধ খালেদা জিয়া অনির্দিষ্টকালের অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে বলেছেন, ‘এ সরকার দুর্বল ভীতু। তারা গদি রক্ষার জন্য রক্ত দিয়ে ক্ষমতায় থাকতে চায়। কিন্তু জনগণ রক্ত দিয়ে এদের বিদায় করবে।’

সোমবার বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে তিনি গুলশান কার্যালয় থেকে বেরিয়ে গাড়ি উঠে বাইরে যাওয়ার চেষ্টা করলে ‍পুলিশ বাধা দেয়। প্রধান ফটক আগে থেকেই বন্ধ করা ছিল। নেতাকর্মীরা ফটক ঝাঁকাতে থাকলে পুলিশ তাদের লক্ষ্য করে পিপার স্প্রে ছোড়ে। এসময় সাংবাদিকরাও আক্রান্ত হন।

এরপর খালেদা জিয়া গাড়ি থেকে নেমে সাংবাদিকদের উদ্দেশে কথা বলেন। ৫টা ৫ মিনিটে তিনি আবার কার্যালয়ে ফিরে যান।

তিনি বলেন, ‘আপনাদের কাছে জানতে চাই, এটা কি অবরুদ্ধ নয়? তাহলে মিথ্যা কথা কেন বলছে তারা? কেন আমাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। তালা গাড়ি পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে। জলকামান কীসের জন্য আনা হয়েছে? আমি নামলে নেতাকর্মীরাও রাস্তায় নামবে, তারা এটাকেই ভয় পায়। সেজন্য তারা আমাদের কর্মসূচি বানচাল করতে চায়।’

তিনি আরো বলেন, ‘মিডিয়ার উপর নির্যাতন চলছে। সম্প্রচারে নিষেধাজ্ঞা চলছে। ঢাকায় যতো ঘটনা ঘটেছে, সেগুলো যদি দেখাতে পারতো…। সারা ঢাকায়, সারা দেশে এ অবস্থা হয়েছে। এ সরকার দুর্বল ও ভীতু হয়ে গেছে। নিজেদের গদির রক্ষার জন্য রক্ত দিয়ে ক্ষমতায় রাখা যাবে না। রক্ত দিয়ে জনগণ এদের বিদায় করবে।’

খালেদা জিয়া বলেন, ‘আজকে আমি যখন প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম, অসুস্থ রিজভী আহমেদকে দেখতে যাবো বলে গাড়িতে বসেছি। পুরিশ গেট বন্দ করে রেখেছে। অবরুদ্ধ করে রেকেছে। সরকার বলেছে, তাকে আমরা বন্দি করি নাই। যদি তা-ই না করে, তাহলে বের হতে দেয়া হচ্ছে না কেন? আমাকে কী কারণে এখানে বন্দি করা হয়েছে। আমরা একটা সমাবেশ করতে চেয়েছিলাম। আমরা শান্তিপূর্ণ অনেক সমাবেশ করেছি। কোথাও কোনো ঝামেলা হয়নি। তারা করতে চাইলেও করতে পারতো। তারা আমাদেরকে সমাবেশ করতে দিল না। তার কারণ কী? আজকের দিনটি সবাই জানে।’

৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘গত বছরের এই দিনটিতে নির্বাচনের নামে একটা প্রহসন হয়েছে। যে নির্বাচনে এ দেশের মানুষ ভোট দেয় নাই। কাজেই যারা এখন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত না। তারা অবৈধ, অগণতান্ত্রিক। মানবাধিকার নেই, আইনের শাসন নেই। সুশাসন বলে কিছু নেই।’

তিনি বলেন, ‘শুধু আমি না, গোটা দেশ অবরুদ্ধ। এ সরকার জালেম সরকার। তারা এদেশেকে কারাগারে পরিণত করেছে। এ অবস্থা চলতে পারে না।’

বিনা উসকানিতে পুলিশের পিপার স্প্রে ছোড়া প্রসঙ্গে তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা সবাই ইনজুরড হয়েছেন। কী ঘটেছে, যার জন্য পেপার স্ত্রে করতে হলো? সেটা কীসের জন্য। আজকে কোনো স্বাভাবিক অব্স্থা নেই। অস্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করছে। জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাস্তায় নামতে চেয়েছে। আওয়ামী লীগের লোকজন, গুন্ডা পান্ডা নিয়ে অস্ত্রসজ্জিত হয়ে পুলিশের সহায়তায় জনগণের উপর ও আমাদের নেতাকর্মীর উপর হামলা করেছে। এ দেশকে বসবাসের অনুপযোগী করে ফেলেছে।’

তিনি বলেন, ‘নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে। সেটা আলোচন করে নিতে পারি। বাংলাদেশ পুলিশ রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। এখানে জলকামান। দেশে যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে নাকি? যারা ক্ষমতায় বসে আছে, এর জন্য তারা দায়ী। সাংবাদিক ও সাধারণ মানুষের উপর হামলা করা হয়েছে। এ অবস্থা তাদের চোখে পড়ছে না। মানুষ চায় পরিবর্তন, শান্তি ও উন্নয়ন। এ অবস্থা চলতে পারে না। আমরা শুনেছি, কিছুক্ষণ আগে নাকি একুশে টিভির সম্প্রচার বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এগুলো কোনো সমাধান নয়। তারা কথা বলবে, অন্যরা বললে টেলিকাস্ট করতে দেয়া হবে না, এটা গণতন্ত্র নয়।’



মন্তব্য চালু নেই