ছাত্রীর সঙ্গে দৈহিক সম্পর্ক: সেই শিক্ষকের দৌড়ঝাঁপ!

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে ছাত্রীর সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে দৈহিক সম্পর্কের ভিডিও চিত্র ধারণের পর বরখাস্ত হওয়া শিক্ষককে স্বপদে বহাল রাখার জন্য শোভাগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে নির্দেশপত্র পাঠিয়েছেন বিদ্যালয় পরিদর্শক।

দিনাজপুর মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক রবীন্দ্র নারায়ণ ভট্টাচার্যের পাঠানো ওই পত্রে যদিও কোনো স্মারক নম্বর উল্লেখ নেই।

অভিযোগ উঠেছে, বরখাস্ত হওয়া শিক্ষক সফিউল ইসলাম বিদ্যালয় পরিদর্শককে ম্যানেজ করে এই কাজ করেছেন। ঘটনার পরে যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিলো সেই কমিটির প্রধান মরুয়াদহ এইচএমকে দাখিল মাদরাসার প্রধান শিক্ষক ছদরুল আমিনকে ভয় ভীতি দেখিয়ে বিদ্যালয় পরিদর্শকের সঙ্গে প্রতিবেদন সম্পর্কে মিথ্যে কথা বলাতে করে বাধ্য করেছেন সফিউল।

এ ব্যাপারে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ছদরুল আমীনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি বলেন- তদন্তে ঘটনার সত্যতা প্রমাণ হওয়ায় সফিউল ইসলামকে বরখাস্ত করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

এরপর শিক্ষক সফিউল ইসলাম লোকজন নিয়ে আমার বাড়িতে আসেন। তারা জোর করে আমার ছবি ও স্বাক্ষর নেয়। এমনকি আমি তদন্ত প্রতিবেদনে স্বাক্ষর ও সীলমোহর প্রদান করিনি মর্মে লিখিত নিয়ে দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডে পাঠায়। বিদ্যালয়ে পরিদর্শক সাহেবকে এ বিষয়ে মোবাইল ফোনে কথা বলতে বাধ্য করায়। আমি পরিস্থিতির স্বীকার হয়েছি।

জানতে চাইলে বৃহস্পতিবার বিকালে দিনাজপুর মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক রবীন্দ্র নারায়ণ ভট্টাচার্য বলেন, সফিউল ইসলাম সংশ্লিষ্ট আপরাধে অপরাধী বটে। কিন্তু মহামান্য হাইকোর্টের আদেশের প্রেক্ষিতে তাকে স্বপদে বহাল রাখার নির্দেশক্রমে অনুরোধ জানিয়ে পত্র দিয়েছি।

ওই পত্রে তো কোনো স্মারক নম্বর উল্লেখ নেই- এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি সন্তোষজনক কোনো জবাব দিতে পারেননি।

রবীন্দ্র নারায়ণ ভট্টাচার্য বলেন, জেনেছি শিক্ষক সফিউল গিল্টি (অপরাধী)। বাট (কিন্তু) কোর্ট তাকে প্রুভড (প্রমাণ) করেনি। আমি ওউ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষককে আদালতে আশ্রয় নিতে বলেছি। বাট (কিন্তু) তারা তা করেনি।

তিনি জানান, তদন্ত কমিটির প্রধান ছদরুল আমিন তদন্ত প্রতিবেদনে স্বাক্ষর করেনি মর্মে আমার কাছে তার লিখিতপত্র আছে এবং মোবাইল বাতার্ তো আছেই।

অপর প্রশ্নোত্তরে তিনি বলেন, তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ছদরুল আমিন কেন এটি করেছেন, আর কোনটি সঠিক তা আমি জানি না। তবে এ ব্যাপারে মহামান্য হাইকোর্ট থেকে এক আইনজীবী আমাকে মোবাইল ফোনে একই প্রশ্ন করেছেন।

এ বিষয়ে শোভাগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের বরখাস্ত হওয়া শিক্ষক সফিউল ইসলামের সঙ্গে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

সূত্রমতে, উপজেলার শোভাগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক (গণিত) সফিউল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে বেশকিছু ছাত্রীকে জিম্মি করে ওইসব ছাত্রীর সঙ্গে চালিয়ে আসেন অবৈধ দৈহিক মেলামেশা। এসবের মধ্যে বেশকিছু ঘটনা মিমাংসা হলেও এক ছাত্রী অবিভাবক মামলা করেন। যার জিআর মামলা নং- ৪১৭/০৩, গাইবান্ধা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের এনএস মামলা নং- ১৭০/০৩। এর পরবর্তীতে আর এক ছাত্রীর সঙ্গে চলে আসা দৈহিক সম্পর্কের বেশ কিছু ভিডিওচিত্র শিক্ষক তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে ধারণ করে নেন আরেক ছাত্রীর মাধ্যমে। এক দোকানে গান ডাউনলোড করতে গেলে তা প্রকাশ পায়। এ নিয়ে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। ছাত্রীর পিতা দেলোয়ার বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেন। পরে তদন্তে কমিটির প্রতিবেদনে ঘটনার সত্যতা মেলায় সফিউল আলমকে চূড়ান্তভাবে বরখাস্ত করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।-ঢাকাটাইমস



মন্তব্য চালু নেই