ছাত্রলীগের ওয়েবসাইটের এই হাল!
জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য সভায় উপস্থিত থাকতে হবে।—‘লেটেস্ট নিউজ’ হিসেবে ওয়েবসাইটের স্ক্রলে দেওয়া জরুরি সভার সময়টি প্রায় আড়াই বছর আগের। এটি ২০১৩ সালের ৩১ জানুয়ারির নোটিশ। চলতি খবরে ২০১৩ সালের জানুয়ারি ও মার্চ মাসের সভা সংক্রান্ত খবর। তবে ইংরেজিতে ফন্ট সমস্যা থাকায় তাও অস্পষ্ট। সাম্প্রতিক খবরেও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের বৈঠকসংক্রান্ত খবর। তবে এতে কোনো তারিখই উল্লেখ নেই।
এটি আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ওয়েবসাইটের (http://www.bsl.org.bd/) চিত্র। ওয়েবসাইটে ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না। পরবর্তী কর্মসূচি শিরোনামটি থাকলেও তাতে কোনো কর্মসূচির উল্লেখ নেই।
চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগের ৬৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি ছাড়া এ সংগঠনের আর কোনো কর্মকাণ্ডের উল্লেখ নেই। তবে এ সংক্রান্ত খবর শুরুর তারিখের জায়গায় লেখা হয়েছে ২০১৪ সালের ৬ ডিসেম্বর। ফলে এ রক্তদান কর্মসূচি এক বছর আগের কি না, তা বোঝা যায় না।
ওয়েবসাইটে স্বাগতম শিরোনামে ক্লিক করলে রক্তদান কর্মসূচির খবরসহ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে মতবিনিময়ের আরেকটি খবর আছে। প্রধানমন্ত্রীর ছেলে এবং তাঁর তথ্য ও প্রযুক্তি-বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে অভিবাদন জানানো এবং তাঁর সঙ্গে গত বছর মতবিনিময়ের আরেকটি খবর আছে। এ ছাড়া গত বছরের জেলহত্যা দিবস নিয়ে একটি খবর আছে।
আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ওয়েবসাইটটি হালনাগাদ করা হয় না।২০১৪ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন আর স্বপ্ন নয়, বাস্তব। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল ব্যবস্থাপনায় উন্নয়ন এবং শিক্ষা বিস্তারের জন্য গত বছর জাতিসংঘের ‘সাউথ সাউথ কো-অপারেশন ভিশনারি অ্যাওয়ার্ড’ অর্জন করেছেন। কিন্তু ক্ষমতাসীন দলের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগের ওয়েবসাইট হালনাগাদ না থাকা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সংগঠনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলমও তাঁদের ওয়েবসাইটটি দীর্ঘদিন ধরে আপডেট করা হয়ে ওঠেনি বলে স্বীকার করলেন। তিনি বলেন, ‘ওয়েবসাইটটি দুই-তিনবার হ্যাক হয়েছে। এ ছাড়া জাতীয় সম্মেলন, জেলায় জেলায় সম্মেলন করাসহ বিভিন্ন কারণে ওয়েবসাইটটি হালনাগাদ করা হয়নি। তবে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এটি হালনাগাদ করা হবে।’
সিদ্দিকী নাজমুল আলম বলেন, ‘ডিজিটাল সরকারের আমলে আমাদের কমিটি থেকে আমরাই প্রথম ২০১২ সালে ওয়েবসাইটটি তৈরি করেছি। আশা করছি আমাদের পরের কমিটি এ ক্ষেত্রে আরও অগ্রগতি করবে।’
ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক শাহরুক মিরাজ বলেন, দপ্তর থেকে মোবাইল ফোনে ম্যাসেজ দিয়ে সবাইকে আপডেট খবর জানানো হয়। ফলে ওয়েবসাইটে আপডেট তথ্য না থাকলেও সাংগঠনিক কাজে কোনো সমস্যা হচ্ছে না।
আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ওয়েবসাইটটি হালনাগাদ করা হয় না। সংগঠনের উপপ্রচার সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম জানালেন, একটি দলকে ওয়েবসাইট হালনাগাদ করা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আলাদা একটি পেজ করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। সেই দলের অনেকে চাকরি পেয়ে চলে গেছেন। ফলে যেভাবে কাজটি করার কথা ছিল, তা করা সম্ভব হয়নি।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির আরেকজন নেতা বললেন, ‘চাইলেই তো আর কাজ করা যায় না। এখানে অনেকের মতামত দেওয়ার বিষয়ও থাকে।’
ছাত্রলীগের এই ওয়েবসাইটটি এ পর্যন্ত ৩২ হাজার ৯৬৯ জন দেখেছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এই সাইটে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও আরও কিছু ওয়েব পোর্টালের লিংক দেওয়া আছে। সূত্র : প্রথম আলো
মন্তব্য চালু নেই