চুরির ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত চায় বিএনপি
ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্ক থেকে হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনার জন্য শুধু গভর্নরের নয়, প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রীসহ সরকারের সংশ্লিষ্টদেরও পদত্যাগ দাবি করেছে বিএনপি। একই সঙ্গে বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে দলটি।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনষ্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির ষষ্ঠ কাউন্সিলের জন্য নির্ধারিত ভেন্যু পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমের কাছে এই দাবি জানান দলটির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারনী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আ স ম হান্নান শাহ।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকে বাংলাদেশের সঞ্চিত ১০ কোটি ডলার চীনা হ্যাকাররা হাতিয়ে নেয় বলে ফিলিপিন্সের একটি সংবাদপত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তাতে বলা হয়, ব্যাংক চ্যানেলে ফিলিপিন্সে ওই অর্থ নিয়ে সেখান থেকে ক্যাসিনোসহ একাধিক হাত ঘুরে অন্য দেশে নিয়ে যাওয়া হয় বাংলাদেশের এই অর্থ।
লোপাট অর্থের একটি অংশ উদ্ধারের কথা সোমবারই জানায় বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে কী পরিমাণ অর্থ সরানো হয়েছিল এবং তার কতটুকু উদ্ধার হয়েছে, ‘তদন্তের স্বার্থে’ সে বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।
তবে হ্যাকারদের এই অর্থ লোপাটে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো দায় দেখছেন না অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। অর্থ ফেরতে প্রয়োজনে মামলা করবেন বলেও জানান তিনি।
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের এই অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনা তদন্তে যুক্তরাষ্ট্রের সাইবার নিরাপত্তা কোম্পানি ফায়ারআইয়ের ম্যানডিয়েন্ট ফরেনসিক বিভাগের সহযোগিতা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
হান্নান শাহ বলেন, ‘আমার কাছে যে তথ্য আছে সেটা ৮শ কোটি টাকা নয়, ৮’শ মিলিয়ন ডলার। এই ঘটনার জন্য গভর্নর একা দায় নেবেন কেন? তার ওপরে মন্ত্রী আছেন, সরকার আছে। এটা যদি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা হতো তাহলে গভর্নরকে দায়ী করতাম। এই যে দেশের সম্পদ অন্যরা অথবা সরকারের পৃষ্টপোষকরা নিয়ে যাচ্ছেন এই জন্য সরকারের পদত্যাগ করা উচিত।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের যোগসাজস ছাড়া এই ধরনের চুরির ঘটনা সম্ভব নয় দাবি করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের যারা কর্মকর্তা আছেন, তাদের একটি তালিকা দেখেছি। সেই তালিকা গনমাধ্যমের বন্ধুরা চেক করবেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের কিছু কর্মকর্তার যোগসাজস না হলে এই ঘটনা ঘটতো না। বড় কথা সরকার দায়িত্ব এড়াতে পারে না।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘শুধু গভর্নরকে দায়ী করা যাবে না। ওনার সঙ্গে যে ডেপুটি গভর্নর, জেনারেল ম্যানেজার আছেন; তাদের যদি সত্যিকার অর্থে দেশপ্রেম থাকত এমন ঘটনা ঘটত না। তারা কারা এদের চিহ্নিত করুন।’
এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা রুহুল আলম চৌধুরী, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, প্রাক্তন ছাত্রনেতা নুরুল ইসলাম নয়ন, ছাত্রদলের সভাপতি রাজিব আহসানসহ শৃঙ্খলা ও সেবা উপ-কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য চালু নেই