চারদিন না খেয়ে তারা!
দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে খাবার সরবরাহে বাধা দেওয়ায় সরকারের প্রতি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিএনপি। চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার দলের পক্ষে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমাদের কি বেঁচে থাকার অধিকার নেই? আমরা না খেয়ে মারা যাব?’
শনিবার বিকেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘চার দিন ধরে কার্যালয়ে খাবার সরবরাহ করতে দেওয়া হচ্ছে না। আমরা শুকনো খাবার খেয়ে বেঁচে আছি। গণমাধ্যমের মাধ্যমে জানতে চাই- আমরা কি কারারুদ্ধ? যদি তা-ই হয়, তাহলেও তো তিন বেলা খাবার পাওয়ার অধিকার আছে। কিন্তু তা দেওয়া হচ্ছে না। সরকারের কাছে প্রশ্ন- কার্যালয়ে অবস্থানকারীদের জন্য নতুন কোনো আইন করা হয়েছে কি, যেখানে খাবার দেওয়ার বিধান নেই।’
উল্লেখ্য, গত বুধবার থেকে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশন কার্যালয়ে খাবার সরবরাহে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে।
শনিবার ১২টা ১০ মিনিটের দিকে স্টার কাবাবের ৪০টি খাবারের প্যাকেট নিয়ে কার্যালয়ের সামনে আসেন হিমেল নামের এক ব্যক্তি । এ সময় পুলিশ খাবার নিয়ে তাকে কার্যালয়ের ভেতরে প্রবেশে বাধা দেয়।
কার্যালয়ে অবস্থানরত নেতা-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য আনা খাবার গত বুধবার রাত থেকে ভেতরে নিতে দিচ্ছেন না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। তবে শুক্রবার কার্যালয়ে অবস্থানরত বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমানের বাসা থেকে অল্প পরিমাণে আনা খাবার ভেতরে নিতে দেওয়া হয়। ভেতরে খাবার নেওয়ায় বাধার কারণে কার্যালয়ে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় স্বল্প পরিসরে রান্নার আয়োজন করা হয়েছে। অবশ্য বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জন্য আনা খাবার ভেতরে নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো বাধা দেওয়া হচ্ছে না।
বিএনপির প্রধানের সঙ্গে কার্যালয়ে আছেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুল কাইয়ুম, প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান, বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, মাহবুব আলম ডিউ, নিরাপত্তা সমন্বয়কারী অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল আবদুল মজিদ, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা প্রমুখ। এ ছাড়া রয়েছে অফিস স্টাফ, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঠিক দুদিন আগে রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে নিজ কার্যালয়ে ‘অবরুদ্ধ’ হয়ে পড়েন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। সেই ৩ জানুয়ারি রাত থেকে এখনো কার্যালয়েই অবস্থান করছেন তিনি। এ অবস্থায় প্রতিদিনই তার ভাইয়ের বাসা থেকে তার জন্য খাবার আসে। আর কার্যালয়ে অন্যদের, দায়িত্বরত গণমাধ্যমকর্মী, বিএনপির চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী (সিএসএফ) এবং প্রটোকলের দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যদের জন্য বাইরে থেকে খাবার নিয়ে আসা হতো।
কিন্তু বুধবার রাতে একটি ভ্যানে করে খাবার নিয়ে আসার পর সেই খাবার ফেরত পাঠানো হয়। ওই দিন রাত ৮টার দিকে তিন চাকার ভ্যানে করে ১১০ প্যাকেট খাবার এবং পানির বোতল কার্যালয়ের সামনে আনার পরপরই সাদাপোশাকের পুলিশ প্রথমে ভেতরে প্রবেশে বাধা দেয়। পরে খাবারসহ ভ্যানটি তারা থানায় নিয়ে যায়।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বর্ষপূর্তির ঠিক দুদিন আগে ৩ জানুয়ারি রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে নিজ কার্যালয়ে ‘অবরুদ্ধ’ হয়ে পড়েন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। ৫ জানুয়ারি কার্যালয় থেকে বের হতে চাইলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বাধায় তা পারেননি। পরে কার্যালয়ের ভেতরে থেকেই অনির্দিষ্টকালের জন্য অবরোধের ডাক দেন তিনি।
মন্তব্য চালু নেই