চাঁদে অবতরণের ঘটনা কি মিথ্যা ছিল ?
অ্যাপোলো মহাশূণ্য মিশন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাসা পরিচালিত একাধিক মহাকাশ মিশনের প্রকল্পের নাম। এই প্রকল্পের অ্যাপোলো ১১ মিশনের মাধ্যমেই চাঁদে প্রথম মানুষের পা পড়ে। মার্কিন রাষ্ট্রপতি জন এফ. কেনেডির পরিকল্পনা থেকে এই মিশনের শুরু ১৯৬১ সালের ২৫শে মে থেকে।
এই প্রকল্পের ৫টি মহাশূণ্য খেয়া যান চাঁদে সফল ভাবে অবতরন করে। এই মিশন থেকেই চাঁদে ১২ জন মানুষের পা পড়েছে। ১৯৬১ থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত চালানো হয়েছে বিখ্যাত এই মহাকাশ মিশন। এই মহাকাশ প্রকল্পের অ্যাপোলো ১১ এর নভোচারীরা ১৯৬৯ সালের ২০শে জুলাই চাঁদে অবতরণ করে।
পৃথিবীর ইতিহাসে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। আর এই অভিযানের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন নীল আর্মস্ট্রং, মাইক কলিন্স এবং বাজ অলড্রিন।
তবে চাঁদে প্রথম অবতরনের এই মিশন সম্পর্কে কিছু তথ্য রয়েছে যা এখনো অনেকেরই অজানা। আজ আপনাদের সামনে এমনই কিছু তথ্য তুলে ধরা হলো:
১. যে রকেটে চেপে তিন নভোচারী চাঁদে গিয়েছিলেন, এখন পর্যন্ত সেটিই সবচেয়ে লম্বা এবং ভারী নভোযান। এটি প্রায় ৩৬৫ ফিট লম্বা এবং এটি সংযোজন করতে প্রয়োজন হবে Vehicle Assembly Building in the Kennedy Space Centre এ থাকা সবচেয়ে বড় বিল্ডিং। মজার ব্যাপার হল এই বিল্ডিং এতই দীর্ঘ যে এখানে মেঘ জমে থাকে।
২. চাঁদের বুকে পান করা প্রথম পানীয় ছিল ‘ওয়াইন’।
৩. যদিও চাঁদের উদ্দেশ্যে তিনজন পৃথিবী ত্যাগ করেছিল, কিন্তু দুইজনের পদচিহ্ন অংকিত হয়েছে চাঁদের বুকে। কারন কলিন্স ছিলেন অরবিটিং মডিউলে। আর তাদের পায়ের ছাপ এখনো রয়ে গেছে চাঁদে।
৪. চাঁদের পরিবেশে ছিল একটি অন্য রকম গন্ধ। এমনকি দুই নভোচারী যখন চাঁদের বুকে হেঁটে মূল স্পেসশিপে ফিরে আসলেন, তখনো তাদের স্পেসশ্যুটে ছিল সেই গন্ধ। তাদের মতে এটি এটি ছিল ব্যবহৃত গানপাউডার এবং ভেজা ছাইয়ের মত।
৫. নীল আর্মস্ট্রং কেন প্রথম চাঁদের বুকে অবতরন করেছিলেন, এই ব্যাপারটি নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে। তবে যেহেতু নভোযানের দরজার পাশেই ছিলেন তিনি, তাই তিনিই প্রথম নেমেছিলেন বলেই ধরে নেওয়া হয়। আর এ ব্যাপারে অল্ড্রিনেরও কোন আক্ষেপ নেই।
৬. যদিও মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার ব্যয় করে স্পেসশিপ তৈরি করা হয়েছিল, কিন্তু সেখানে দেখা দিয়েছিল সমস্যা। লুনার মডিউলে ফিরে আসার পর অল্ড্রিন ভুলবশত ইগনিশন বাটন ভেঙ্গে ফেলেন। আর এটি ছাড়া ইঞ্জিন চালু করা সম্ভব ছিল না। সে মুহূর্তে তাদের বিপদ থেকে উদ্ধার করে একটি বল পয়েন্ট কলম। কলম ব্যবহার করে কাজটি করার বুদ্ধি মাথায় আসে অল্ড্রিনেরই এবং ভাগ্যবশত সেটি কাজ করেছিল।
৭. এই ঘটনা টিভিতে দেখার জন্য প্রায় ৬০০ মিলিয়ন মানুষ তখন অপেক্ষা করছিলেন। আর এই রেকর্ড টিকে ছিল পরবর্তী ১২ বছর।
মানবজাতির এই ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী থাকেন অলড্রিন এবং নিল আর্মস্ট্রং। অথচ কিছু বিতর্ক রয়েই গেছে। বেশ কয়েকজন তাত্ত্বিক এই ঘটনাকে এখন পর্যন্ত মিথ্যা ঘটনা বলে যুক্তি তুলে ধরেন।
ইন্টারনেটে একটি ওয়েবসাইট ইতিহাসের সেই ঘটনাকে দেখাচ্ছে, ঠিক যখন এটি ঘটছে। http://firstmenonthemoon.com নামের ওয়েবসাইট সত্যিকার ভিডিও ফুটেজ, মিশন নিয়্ন্ত্রণের অডিও বার্তা এবং ট্রান্সক্রিপ্টগুলো তুলে ধরেছে। এই ওয়েবসাইটে প্রবেশের পর উইন্ডোজের একটি প্যানেলের মাধ্যমে আপনাকে স্বাগত জানাবে। এর বামে রয়েছে ‘এয়ার-টু-গ্রাউন্ড লুপ’। বামেই আছে ফ্লাইট পরিচালকের অডিও বার্তা। আর মাঝখানের উইন্ডোজে দেখানে হবে স্পেসফ্লাইটের ভিডিও ফুটেজ।
এই সাইটটি ২০১২ সালে চালু করা হয়। কিন্তু ইন্টারনেটে সম্প্রতি সবার নজরে চলে এসেছে। এটি বানিয়েছে ‘থামটেক’ নামের এক সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট কম্পানি। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, আমাদের লক্ষ্য হলো ঐতিহাসিক মুহূর্তগুলো পরবর্তী প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়া। এখান থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবেন সবাই।
সূত্র : হাফিংটন পোস্ট
মন্তব্য চালু নেই