চাঁদা না পেয়ে এক গৃহবধূর শ্লীলতাহানি করেছেন আ.লীগ নেতা
চাঁদা না পেয়ে দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে মোছা. ফাইমা বেগম নামে এক গৃহবধূর শ্লীলতাহানি করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা। এ ঘটনায় মামলা হলেও অজ্ঞাত কারণে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করছে না।
বুধবার দুপুর ১২টায় দিনাজপুর প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন গৃহবধূ ফাইমা বেগম।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ফাইমা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী মজিবর রহমান চিরিরবন্দর থানার রাণীরবন্দরে নাবিল পরিবহনের কমিশন এজেন্ট হিসেবে ২০-২৫ বছর যাবত কাজ আসছেন। কিন্তু সেখান থেকে তাকে সরানোর লক্ষ্যে উপজেলার নশরতপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সুলতান আলম দীর্ঘদিন ধরে ষড়যন্ত্র করে আসছিলেন। এতে সফল হতে না পেরে গত ২৪ জুন বিকেলে নাবিল কাউন্টারে গিয়ে আমার স্বামীর কাছে ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন তিনি। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে তোমাকে দেখে নেব বলে হুমকি দিয়ে যান সুলতান আলম।’
তিনি বলেন, ‘ওইদিন আমি প্রয়োজনীয় কেনাকাটা শেষে আমি রাণীরবন্দর থেকে ভ্যানযোগে বাড়ি উদ্দেশ্যে রওনা দেই। ভ্যানটি রাণীপুর গ্রামের বাহাদুর বাজার নামক স্থানে আসলে সুলতান আলম অজ্ঞাত দুই ব্যক্তিকে সঙ্গে নিয়ে আমার পথরোধ করে। এ সময় সুলতান আমাকে জোরপূর্বক ভ্যান থেকে নামিয়ে শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেন এবং বলেন, ‘তোর স্বামীর কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা চাঁদা চেয়েছি দেনি। এবার চাঁদার বদলে তোর ইজ্জত নেব।’ এক পর্যায়ে সুলতান আমাকে অপহরণের উদ্দেশ্যে জোরপূর্বক মোটরসাইকেলে তুলে নেয়ার চেষ্টা করেন। বাধা দিলে সে আমাকে কিলঘুষি মেরে জখম করে। আমার সঙ্গী গোলাপী বেগম বাধা দিলে তাকেও কিল ঘুষি মারে। শোরগোল শুনে বাজারের লোকজন সেখানে চলে আসলে সুলতান তার দুই সঙ্গীসহ মোটর সাইকেলযোগে পালিয়ে যান।’
ফাইমা বেগম বলেন, ‘এ ঘটনায় আমি চিরিরবন্দর থানায় মামলা দিতে গেলে পুলিশ মামলা গ্রহণে অস্বীকৃতি জানায় এবং আদালতে গিয়ে মামলা করতে বলে। আমি পুলিশের কথা অনুযায়ী গত ২ জুলাই দিনাজপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে একটি মামলা দায়ের করেছি। কিন্তু মামলার পর সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ সুলতান আমাকে এবং আমার স্বামীকে মামলা প্রত্যাহার না করলে জানে মেরে ফেলবে বলে হুমকি দিচ্ছেন। এমনকি আমাদের সন্তানদের অপহরণ করবেন বলেও হুমকি দিয়ে আসছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার স্বামীকে কোনোভাবেই রাণীরবন্দরে পরিবহন ব্যবসা করতে দেবেন বলেও হুমকি দিচ্ছেন সুলতান ও তার পোষ্য বাহিনী। এ অবস্থায় তিন মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি এবং আমাদের রুটি রুজির পথ বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা করছি। তাই আমি সরকার ও প্রশাসনের কাছে আমাদের নিরাপত্তা ও রুটি রুজির নিশ্চয়তা এবং সন্ত্রাসী সুলতানকে গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।’
এ সময় প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, জাতীয় সংসদের হুইপ, রংপুর বিভাগীয় কমিশনার, পুলিশের ডিআইজি, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, চিরিরবন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে জীবনের নিরাপত্তা চান ভূক্তভোগী মজিবর রহমান ও তার স্ত্রী ফাইমা বেগম।
সংবাদ সম্মেলনে স্বামী মজিবর রহমান ছাড়াও তাদের সন্তানেরা উপস্থিত ছিল।
মন্তব্য চালু নেই