চলেই গেলেন কিংবদন্তী হানিফ মোহাম্মদ
তিন বছর ধরে মরণব্যাধি ক্যান্সারের সঙ্গে লড়ছিলেন হানিফ মোহাম্মদ। সেই লড়াইটা আর দীর্ঘায়িত করতে পারলেন না পাকিস্তানের কিংবদন্তী ক্রিকেটার। আজ বৃহস্পতিবার ভুবনের মায়া ত্যাগ করে চলেই গেলেন তিনি। ৮১ বছর বয়সে মারা গেছেন পাকিস্তানের এই সাবেক ব্যাটসম্যান।
২০১৩ সালে হানিফের ফুসফুসে ক্যান্সার ধরা পড়ে। সম্প্রতি সেই রোগ আবারো মাথাচাড়া দিয়ে উঠে। শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত সমস্যা বেড়ে যাওয়ায় গত রোববার করাচির একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। আজ বৃহস্পতিবার চিকিৎসা চলাকালীন হঠাৎ তার হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে পড়ে। দীর্ঘ ৬ মিনিটের জন্য তা পুরোপুরি স্তব্ধ ছিল। তার পরও ডাক্তাররা জানিয়েছিলেন, বেঁচে আছেন হানিফ মোহাম্মদ!
পরে সেই চিকিৎসকরাই জানালেন, হানিফ মোহাম্মদ আর নেই। ক্রিকেটের ইনিংসে বোলারদের বিপক্ষে অপরাজিত থাকলেও জীবনের ইনিংসে যমদূতের কাছে হার মানলেন পাকিস্তানের সাবেক এই লিটল মাস্টার। হানিফের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে ক্রিকেট দুনিয়ায়।
মোহাম্মদ হানিফের জন্ম ভারতের গুজরাটে। তবে ব্যাট হাতে লড়েছেন পাকিস্তানের হয়ে। মজার বিষয়, ১৯৫২ সালের ১৬ অক্টোবর জন্মভূমি ভারতের বিপক্ষেই টেস্ট অভিষেক ঘটেছিল হানিফের। এরপর ১৭ বছর পাকিস্তান জাতীয় দলের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছেন এই ব্যাটসম্যান। ১৯৬৯ সালের ২৪ অক্টোবর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সবশেষ টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন তিনি। বর্ণিল ক্যারিয়ারে রেখে গেছেন বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য স্মৃতি।
প্রসঙ্গত, পাকিস্তানের হয়ে ৫৫টি টেস্ট খেলে ৪৩.৯৮ গড়ে ৩ হাজার ৯১৫ রান করেন হানিফ। এর মধ্যে রয়েছে ১২টি সেঞ্চুরি। তবে তিনি ক্রিকেট ইতিহাসে অমর হয়ে আছেন তার দুটো ইনিংসের সুবাদে। এক. ১৯৫৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ব্রিজটাউন টেস্টে তিনি ৯৭০ মিনিট ব্যাট করে ৩৩৭ রানের এক অনবদ্য ইনিংস খেলেন। টেস্ট ইতিহাসে হানিফের এই ইনিংসটি এখন পর্যন্ত দীর্ঘতম হিসেবে বিবেচিত।
পরের বছরই প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে করাচির হয়ে তিনি খেলেন ৪৯৯ রানের ইনিংস। ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত এটাই ছিল প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত সংগ্রহ। ৫০১ রান করে হানিফের সেই রেকর্ডটি ভেঙে দেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের তারকা ব্রায়ান লারা।
মন্তব্য চালু নেই