চলচ্চিত্রে সন্ত্রাস ও ধর্ষণ দেখানো যাবে না
‘জাতীয় চলচ্চিত্র নীতিমালা-২০১৭’ অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। নীতিমালায় বলা হয়েছে, চলচ্চিত্রে সন্ত্রাস ও সরাসরি ধর্ষণ দেখানো যাবে না। সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের জানান, ‘জাতীয় চলচ্চিত্র নীতিমালা-২০১৭’ অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। বিদেশি চলচ্চিত্র আমদানি ও প্রদর্শনের ক্ষেত্রে সরকারের আগাম অনুমোদন নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে নীতিমালায়। তথ্য মন্ত্রণালয় এ নীতিমালার খসড়া তৈরি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পেশ করে।
খসড়া নীতিমালায় চলচিত্রের সংজ্ঞা এবং এটি নির্মাণে সরকারি অনুদান প্রদান, চলচিত্রের কাহিনী ও সামাজিক প্রেক্ষাপট, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ইত্যাদি বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। নীতিমালার ৬ নম্বর ধারার ৮ নম্বর উপধারায় বলা হয়েছে, ‘চলচ্চিত্রে মাত্রাতিরিক্ত সন্ত্রাস ও সহিংসতা প্রদর্শন করা যাবে না। সন্ত্রাস ও সহিংসতা প্রদর্শনের ক্ষেত্রে বিদ্যমান সেন্সর আইনসহ প্রযোজ্য অন্যান্য আইন ও বিধান প্রযোজ্য হবে।’
একই ধারার ১১ নম্বর উপধারায় বলা হয়েছে, ‘চলচ্চিত্রে সরাসরি কোনো ধর্ষণ দেখানো যাবে না।’ ১২ নম্বর উপধারায় বলা হয়েছে, শিশু বা নারী কিংবা উভয়ের প্রতি সহিংসতা, বৈষম্যমূলক আচরণ বা হয়রানিমূলক কর্মকাণ্ডকে উদ্বুদ্ধ করে এমন কোনো ঘটনা ও দৃশ্য চলচ্চিত্রে প্রদর্শন করা যাবে না।’
এ ছাড়া চলচ্চিত্র নির্মাণে প্রমিত বাংলা ভাষাকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে নীতিমালার। চলচ্চিত্রের মাধ্যমে নৈতিকতাবোধের উন্নয়ন, দুর্নীতি দমন, সামাজিক কূপমণ্ডূকতা ও কুসংস্কার দূরীকরণ এবং সমাজবিরোধী কার্যক্রম থেকে নিবৃত থাকার জন্য জনসাধারণকে উৎসাহিত করতে হবে।
নীতিমালার খসড়ায় বলা হয়েছে, চলচ্চিত্র নির্মাণ ও প্রদর্শনের ক্ষেত্রে মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও চেতনা, রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি সমুন্নত রাখতে হবে। চলচ্চিত্রে কোনোভাবেই রাষ্ট্রবিরোধী বা জনস্বার্থবিরোধী বক্তব্য প্রচার করা যাবে না। চলচ্চিত্রে বিভ্রান্তিকর ও অসত্য তথ্য পরিবেশন করা যাবে না। চলচ্চিত্রের সংলাপে অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ ভাষা পরিহার করতে হবে বলেও নীতিমালার খসড়ায় বলা হয়েছে।
নীতিমালায় চলচ্চিত্রের সংজ্ঞা নিরূপণ করে দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘চলচ্চিত্র বলতে যেকোনো ধরনের চলমান চিত্রকে বোঝানো হবে, যা নির্মিত হয়েছে প্রেক্ষাগৃহ বা চলচ্চিত্র প্রদর্শনের জন্য নির্ধারিত হল বা স্থানে প্রদর্শনের জন্য। সেই অর্থে স্বল্পদৈর্ঘ্য ও পূর্ণদৈর্ঘ্য কাহিনীচিত্র, প্রামাণ্য চলচ্চিত্র, অ্যানিমেশন বা নিরীক্ষাধর্মী চলমান চিত্রকে চলচ্চিত্র বলা হবে।’
মন্তব্য চালু নেই