জ্বালানি তেল সংকট, উৎপাদন ব্যাহত
চট্টগ্রাম দোহাজারী পিকিং পাওয়ার প্ল্যান্ট বন্ধের পথে
চট্টগ্রামের দোহাজারী পাওয়ার প্লান্টে জ্বালানি তেলের সংকটের কারণে উৎপাদনে প্রভাব পড়ছে সাম্প্রতি পটিয়া ধলঘাট সীমান্তে ঘটে যাওয়া ফানের্স তেলবাহি ওয়াগন দুর্ঘটনাটি। জ্বালানি তেলের অভাবে বন্ধ হওয়ার পথে চট্টগ্রাম দোহাজারী ১০০ মেগাওয়াট পিকিং পাওয়ার প্ল্যান্ট।
প্ল্যান্টটিতে আর মাত্র একদিন চালু রাখার মত জ্বালানি তেল মজুদ রয়েছে। প্ল্যান্টটি বন্ধ হয়ে গেলে চট্টগ্রামজুড়ে বাড়তে পারে ব্যাপক লোডশেডিং। প্ল্যান্ট কর্তৃপক্ষ জানায়, বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে তেল নিয়ে যাওয়ার সময় গত ১৯ জুন শুক্রবার বোয়ালখালী উপজেলার বেগুরা ও পটিয়া ধলঘাট সীমান্ত সেতু ভেঙে রেলের ফানের্স তেলবাহী ওয়াগন হারগিজ খালে পড়ে যায়। ফলে প্রয়োজনীয় জ্বালানি তেল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি।
দোহাজারী বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আরিফুর রহমান ভূঁইয়া জানান, বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ১৫ দিনের ফার্নেস অয়েল মজুদ থাকা অবস্থায় তেল সরবরাহ করা হয়। সে হিসেবে গত শুক্রবার রেলের ওয়াগনে করে তেল নিয়ে আসা হচ্ছিল। তেলবাহী ওয়াগনটি খালে পড়ে গেলেও এ পর্যন্ত সেটি উদ্ধার করা হয়নি।
তিনি জানান, ভেঙে যাওয়া সেতুটির মেরামত কাজ শুরু হলেও তা শেষ হতে কতদিন লাগতে পারে তার কোন নিশ্চয়তা নেই। গাড়িতে করে বা অন্য কোন উপায়ে তেল সরবরাহের কোন সিস্টেমও এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে নেই। রেলের ওয়াগন থেকে সরাসরি তেলের ডিপোতে মজুদ করার সিস্টেম রয়েছে। গাড়িতে করে আনা হলে আবার সিস্টেম পাল্টাতে হবে। ফলে সেতু মেরামত না হওয়া পর্যন্ত তেল আনার কোন উপায় নেই।
তিনি বলেন, বিদ্যুৎ কেন্দ্রে এ পর্যন্ত যে পরিমাণ ফার্নেস অয়েল মজুদ রয়েছে তা দিয়ে আর একদিন বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব। এরপর যে কোন সময় বন্ধ হয়ে যেতে পারে কেন্দ্রটির বিদ্যুৎ উৎপাদন। আর এতে চট্টগ্রামে বেড়ে যেতে পারে লোডশেডিং। তিনি আরও বলেন, এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে প্রতি ঘণ্টায় ২০ মেট্রিক টন ফার্নেস অয়েল লাগে। দৈনিক ১০ ঘণ্টা চালালে ২০০ মেট্রিক টন ফার্নেস তেল প্রয়োজন হয়।
তেল সরবরাহের বিষয়ে জানতে চাইলে রেলওয়ের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক মফিজুর রহমান বলেন, বৃষ্টির কারণে খালে পড়া ওয়াগন উদ্ধার ও সেতুর মেরামত কাজে বিলম্ব হচ্ছে। তবে পুরো ব্রিজটি আমরা মেরাতম করছি। আগামী চার-পাঁচদিনের মধ্যে সেতুর মেরামত কাজ শেষ হবে বলে মনে করছি। এরপর আমরা ট্রায়াল দেব। ট্রেন চলাচল শুরু হলে বিদ্যুৎ কেন্দ্রে তেল সরবরাহ করা সম্ভব হবে।
ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আরিফুর রহমান ভূঁইয়া আরও জানান, বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির তেলের মজুদ ফুরিয়ে যাওয়ার বিষয়টি কর্তৃপক্ষ আমাদের জানিয়েছেন। কিন্তু সেতু মেরামত স¤পন্ন করে ট্রায়াল দেওয়ার আগে জ্বালানি তেল সরবরাহ দেওয়ার বিষয়ে আমরা নিরুপায়। তারা অন্য কোন উপায়ে তেল আনার ব্যবস্থা না করলে কেন্দ্রটির বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়েও যেতে পারে।
মন্তব্য চালু নেই