ঘুষ নেয়ার অভিযোগ মিথ্যা, রাজনৈতিক : শিক্ষামন্ত্রী
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছ থেকে ঘুষ নিয়ে সার্টিফিকেট বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অবৈধ কার্যক্রম পরিচালনার সুযোগ দেয়ার যে অভিযোগ এনেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) তা সম্পূর্ণ মিথ্যা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় সংসদে বেসরকারি সদস্যদের সিদ্ধান্ত-প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় শিক্ষামন্ত্রী এ কথা বলেন।
টিআইবির উদ্দেশে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘অভিযোগের পক্ষে আপনাদের কাছে কী কী তথ্য-প্রমাণ আছে তা হাজির করুন, না হয় আপনাদের বক্তব্য প্রত্যাহার করে জাতির কাছে ক্ষমা চান।’
টিআইবির নাম উল্লেখ না করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশে একটি প্রতিষ্ঠান আছে যারা নিজেদের আন্তর্জাতিক সংস্থা বলে দাবি করে। দু’দিন আগে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে বিভিন্ন ধরনের মনগড়া তথ্য দিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছে।’
তিনি বলেন, ‘টিআইবি যে অভিযোগ করেছে তার পক্ষে তাদের কাছে কোনো তথ্য-প্রমাণ নেই। মিথ্যা তথ্য দিয়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্যই মনগড়া এসব রিপোর্ট প্রকাশ করে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘টিআইবি যদি অবিলম্বে অভিযোগের পক্ষে তথ্য-প্রমাণ জাতির সামনে হাজির করতে না পারে তাহলে বোঝা যাবে শুধুমাত্র সরকারকে বেকায়দায় ফেলতেই সংস্থাটি এসব অজুহাত সৃষ্টি করছে।’
শিক্ষামন্ত্রী অবিলম্বে টিআইবিকে তথ্য-প্রমাণ হাজির করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘গবেষণা রিপোর্টের নামে যেসব অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে এর পক্ষে কী কী তথ্য-প্রমাণ আছে তা হাজির করুন। নইলে বক্তব্যে প্রত্যাহার করে জাতির কাছে ক্ষমা চান। টিআইবি প্রমাণ না দিলেও আমরা নিজেরাই এসব বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছি। আজ থেকেই তদন্ত শুরু হচ্ছে। জাতির সামনে আমরা সঠিক তথ্য তুলে ধরবো।’
নাহিদ বলেন, ‘আমরা যখন সরকারের দায়িত্ব নেই তখন দেশে ৫৬টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছিল। এসব বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার ক্ষেত্রে যেটুকু আইন ছিল তা ছিল প্রায় অচল। কঠোর আইন না থাকায় তখন এসব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজই ছিল সার্টিফিকেট বিক্রি করা ও মুনাফা অর্জন করা। তাছাড়া এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো কাজ ছিল না।’
তিনি বলেন, ‘এখন দেশে ৭৯টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। ক্ষমতায় এসেই আমরা আইন সংশোধন করেছি। আইনটি সংশোধনের ফলে এখন আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অবৈধ কার্যকলাপ করার কোনো সুযোগ নেই। আর যখনই কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি তাৎক্ষণিক তদন্ত করে তা বন্ধ করে দিয়েছি। কিন্তু হাইকোর্ট থেকে স্থিতাবস্থা নিয়ে এসব বিশ্ববিদ্যালয় তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছে।’
উল্লেখ্য, গত ৩০ জুন এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এর প্রতিবেদনে বলা হয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ক্লাস না করে, পরীক্ষা না দিয়ে টাকার বিনিময়ে সার্টিফিকেট পাওয়া যায়। শিক্ষা খাতটি মুনাফাভিত্তিক খাতে পরিণত হওয়ায় ট্রাস্টিবোর্ড নিয়ে দ্বন্দ্ব, ক্যাম্পাস দখল, শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট, উদ্যোক্তাদের সামাজিক, রাজনৈতিক প্রভাবের কাছে তদারকি বা নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ অসহায় হয়ে পড়েছে।
এ রিপোর্ট প্রকাশের পর গতকাল সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী ১৫টি বিশ্ববিদ্যালয় সার্টিফিকেট বিক্রি করে বলে স্বীকার করেন।
মন্তব্য চালু নেই