ঘুষ চেয়ে মা-ছেলেকে নির্যাতন, ফাঁসলেন ৩ এসআই

পঞ্চাশ হাজার টাকা ঘুষের দাবিতে এক যুবক ও তার মাকে মারধরের অভিযোগে নলছিটি থানার তিন উপপরিদর্শকের (এসআই) বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

রোববার (২৩ এপ্রিল) ঝালকাঠির বিশেষ জজ আদালতে এ নালিশি মামলা দায়ের করেছেন নির্যাতিত যুবকের মা সেলিনা বেগম।

১৯৪৭ সালের দুর্নীতি দমন আইনের ৫ (২) ধারায় করা নালিশি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ঝালকাঠি বিশেষ জজ আদালতের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মো. ইখতিয়ারুল ইসলাম মল্লিক কোনো আদেশ না দিয়ে আগামী ২৬ এপ্রিল শুনানির দিন ধার্য করেছেন।

মামলায় বিবাদীরা হলেন- নলছিটি থানার এসআই বিপ্লব কুমার মিস্ত্রী, এসআই ফিরোজ ও এসআই জসিম। বাদী সেলিনা বেগম নলছিটি উপজেলার তৌকাঠি গ্রামের মৃত ফারুক হোসেনের স্ত্রী।

মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী তপন কুমার সরকার জানান, গেল ৩০ মার্চ রাত ৩টার দিকে নলছিটি থানার এসআই বিপ্লব কুমার, ফিরোজ ও জসিম ৫/৬ জন কনস্টেবলসহ তৌকাঠি গ্রামের মৃত ফারুক হোসেনের বাড়িতে গিয়ে দরজা খুলতে বলেন। ফারুক হোসেনের স্ত্রী সেলিনা বেগমের (৫৩) দরজা খুলতে দেরি হলে পুলিশ কর্মকর্তারা দরজা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে সেলিনা বেগমের দুই ছেলে দিনমজুর সজিব ও রাজিবকে মারধর শুরু করে।

সেলিনা বেগম ছেলেদের বাঁচানোর চেষ্টা করলে তিন এসআই তাকেও মারধর করেন। মারধরের কারণ জানতে চাইলে তিন এসআই বলেন, তোর ছেলেরা মাদকের ব্যবসা করে। এখন আমাদের পঞ্চাশ হাজার টাকা দিবি না হলে তোর ছোট ছেলেকে ধরে নিয়ে মাদক (গাঁজা) মামলায় চালান দেব।

সেলিনা বেগম টাকা না দেয়ায় পুলিশ তার ছোট ছেলে রাজিবকে গ্রেপ্তার করে নলছিটি থানায় নিয়ে যায় এবং রাজীবের কাছে এক পুড়িয়া গাঁজা পাওয়া গেছে বলে প্রচারণা চালায়। পরদিন ৩১ মার্চ সকালে নিরীহ দিনমজুর রাজীবকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে এ খবর ছড়িয়ে পড়লে গ্রামের কয়েকশ’ মানুষ নলছিটি থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। বিক্ষোভের কারণে নলছিটি থানা পুলিশ রাজীবকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়।

বিক্ষোভের সময় পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অভিযুক্ত তিন এসআইসহ কনস্টেবলদের নলছিটি থানা থেকে প্রত্যাহারের আশ্বাস দিলেও প্রত্যাহার করা হয়নি। এ ব্যাপারে সেলিনা বেগম পুলিশের আইজি, ডিআইজি এবং বরিশাল দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ দায়ের করে কোনো সুফল না পেয়ে রোববার আদালতে মামলা দায়ের করেন।



মন্তব্য চালু নেই