‘ঘুষ গ্রহণকারী’ ধরার পর হামলার কবলে দুদক কর্মকর্তা
সিলেট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে অভিযানে নামে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। পৌনে ৫টার দিকে এক কর্মচারীকে আটক করার সময় দুদক কর্মকতাদের সঙ্গে কার্যালয়ের কর্মচারীদের বাগবিতাণ্ডা হয়। এসময় অভিযুক্ত কর্মচারী আজিজুর রহমান ভয়ে স্ট্রোক করেন।
এ ঘটনার পর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের কর্মচারীরা দুদকের সহকারী পরিচালক রেবা হালদারকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। খবর পেয়ে মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এসএম রোকন উদ্দিনের নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে কর্মচারীদের সরিয়ে দিয়ে দুদক কর্মকতাদের উদ্ধার করে।
এর কিছুক্ষণ আগে কর্মচারীদের সঙ্গে হাত-হাতি শুরু হয়। এসময় দুদকের কর্মকর্তা মিসবাহ উদ্দিন আহমদ চৌধুরীর কপালে আঘাত লেগে ফেটে গেছে। তাদের দুইজনকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ব্যবসা-বাণিজ্য শাখা থেকে অফিস সহকারী আজিজুর রহমানকে আটক করে দুদক। তবে বাইরে নিয়ে আসার সময় অন্য কর্মচারীদের সঙ্গে দুদকের বাকতিতাণ্ডা শুরু হয়। এক পর্যায়ে আজিজুর রহমানকে ছিনিয়ে নেন কর্মচারীরা। এসময় তারা জেলা প্রশাসকের অনুমতি সাপেক্ষে আটকের দাবি জানান।
আজিজুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ কী তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। পরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে দুদক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে জেলা প্রশাসনের ও কর্মচারিদের রুদ্ধদ্বার বৈঠক চলে।
এদিকে, জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে দুদকের অভিযানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করে দুদকের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন কর্মচারীরা। সন্ধ্যা ৬টার দিকে বৈঠক চলাকালে অফিস সহকারী আজিজুর রহমান (৫০) অসুস্থ হয়ে জেলা প্রশাসকের রুমে সবার সামনে মাটিতে পড়ে যান। এক পর্যায়ে আজিজুর রহমান স্ট্রোক করেছেন বলে জানান জেলা প্রশাসক জয়নাল আবেদীনসহ অন্য কর্মকর্তারা।
জেলা প্রশাসক তাকে গাড়িযোগে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। ঘটনার সময় জেলা প্রশাসকের প্রধান গেট ও নিচের গেট বন্ধ করে দেন কর্মচারীরা।
এ ঘটনায় দুদক কর্মকর্তা মিসবাহ উদ্দিন আহমদও আহত হয়েছেন। কর্মচারীদের সঙ্গে হাত হাতির সময় তার কপালে আঘাত লেগে ফেটে গেছে। তাকেও সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় জেলা প্রশাসক অফিসের কর্মচারীদের তোপের মুখে পড়েন দুদক কর্মকর্তারা। জেলা প্রশাসক অফিসের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা দুদকের অভিযোগকে মিথ্যা দাবি করে আন্দোলন করছেন। এ নিয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয় প্রাঙ্গণে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
এর আগে দুর্নীতি দমন কমিশন সিলেট অফিসের পাঁচ কর্মকর্তা ও চারজন পুলিশ সদস্য বিকেলে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে অফিস সহকারী আজিজুর রহমানকে আটক করতে যান। তাদের কাছে তথ্য ছিল, ওই কর্মচারীর কাছে ঘুষের টাকা রয়েছে। ঘটনাস্থলে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এসএম রোকন উদ্দিন বলেন, দুদকের অভিযান নিয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের কর্মচারীদের সঙ্গে দুদক দলের ভুল বুঝাবুঝি হয়েছিল। তবে পুলিশ ঘটনাস্থলে বিষয়টি মীমাংসা করে।
ওসামানী হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. আবদুছ ছবুর মিঞা জেলা প্রশাসক অফিসের একজন কর্মচারীর হার্ট অ্যাটাক হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মন্তব্য চালু নেই