ফখরুলকে বাঁচার অধিকার দিন
গয়েশ্বর-খোকাসহ ৩৫ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
রামপুরা থানার একটি হত্যা মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ ৩৫ বিএনপি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নিয়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লা আদালতে অনুপস্থিত ওইসব নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে তদন্ত কর্মকর্তার দায়ের করা অভিযোগপত্র আমলে নেন। এরপর বিচারক অনুপস্থিত ওইসব নেতাকর্মীদেরকে পলাতক উল্লেখ করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
আগামী ২৭ জানুয়ারি গ্রেপ্তার সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য করেছেন আদালত।
এ মামলার উল্লেখযোগ্য অপর আসামিরা হলেন- বিএনপি নেতা সাদেক হোসেন খোকা, সালাউদ্দিন আহমদ, শফিকুল ইসলাম বাদশা, হাবিবুর রহমান হাবিব প্রমুখ।
আদালত এদিন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ ২১ জনের এবং আগে থেকে পলাতক খোকাসহ ১৪ জনের বিষয়ে তাদের আইনজীবীরা কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
এ মামলাটিতে চলতি বছরের ২০ মার্চ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ ৪৯ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন রামপুরা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মামুনুর রশিদ।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর বিএনপি-জামায়াতের ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’ কর্মসূচি উপলক্ষে রামপুরা থানাধীন মালিবাগ চৌধুরীপাড়ায় ককটেল বিস্ফোরণ, গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মানসুর প্রধানিয়া নামে এক ব্যক্তি মারা যায়। পরদিন ওই ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করেন উপ-পরিদর্শক (এসআই) আল মামুন।
ফখরুলকে বাঁচার অধিকার দিন, সরকারকে বিএনপি
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে কারাগারে পাঠানোয় অত্যন্ত উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দলটি। তার শারীরিক অব্স্থা নিয়ে তাদের শঙ্কার কথাও জানিয়েছেন। তাকে সুস্থভাবে বাঁচার অধিকার দেয়ার জন্য সরকার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি। আদালত বিষয়টি মানবিকভাবে দেখবেন বলেও আশা করেছে দলটি।
মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়ায় দলটির মুখপাত্র ড. আসাদুজ্জামান রিপন এ কথা বলেন।
মঙ্গলবার মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সিএমএম আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে আদালত তা নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এর কিছু আগেই তিনি সিঙ্গাপুর থেকে চিকিৎসা নিয়ে ফিরেছেন।
আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, ‘আমরা প্রত্যাশা করেছিলাম, নিম্ন আদালত তার স্বাস্থ্য ঝুঁকির বিষয়টি মানবিকভাবে বিবেচনা করে তাকে জামিন দেবেন যাতে তিনি তার স্বাস্থ্য সুরক্ষায় নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে পারেন।’
সরকারকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘বিরোধী দলের সাথে রাজনীতি করবেন রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায়। কিন্তু কাউকে তিলে তিলে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়া হবে অত্যন্ত অমানবিক।’
আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অনেক দিন ধরেই অসুস্থ। তার হৃদরোগ সহ ঘাড়ে ক্যারোটিড আর্টারিতে ছিদ্র রয়েছে। এ বছর প্রায় ছয় মাস কারাভোগের পর উচ্চ আদালত তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জামিন প্রদান করায় তিনি যুক্তরাষ্ট্র এবং সিঙ্গাপুরে কয়েক দফা চিকিৎসা নেন। কিন্তু তার ক্যারোটিড আর্টারিতে ছিদ্রটির অবস্থান খুবই জটিল হওয়ায় তা শৈল্য চিকিৎসার জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় তাঁর অস্ত্রোপচার সম্ভব হয়নি।’
তিনি জানান, কয়েক দিন আগেও মির্জা ফখরুল সিঙ্গাপুরে চিকিৎসার জন্য ফলোআপে যান এবং এ মাসের ২৪ তারিখে সিঙ্গাপুরে তার আরো উন্নত চিকিৎসার জন্য যাওয়ার তারিখ ছিল।
এসময় তিনি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ মিথ্যা মামলায় জর্জরিত কারারুদ্ধ সব নেতার মুক্তির দাবি জানান তিনি।
সরকার ছায়ার সঙ্গে শত্রু শত্রু খেলায় লিপ্ত হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘বিএনপির নেতৃবৃন্দকে অকারণেই সরকার শত্রু ভাবছে।’
প্রসঙ্গত, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আপিল বিভাগের নির্দেশে মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তার জামিন আবেদন নাকচ করে দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
নেতাদের কারাগারে প্রেরণে বিএনপির উদ্বেগ
যশোর জেলা বিএনপির ১০ নেতাকর্মীকে কারাগারে প্রেরণের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দলটি।
মঙ্গলবার বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠনো এক সংবাদ বিবৃতিতে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক মো. আব্দুল লতিফ জনি স্বাক্ষরিত এ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলামের ছেলে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত ও যশোর সদর থানা বিএনপির সভাপতি মারুফ ইসলামসহ ১০ জন নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলায় কারাগারে প্রেরণের ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন।
বিবৃতিতে আসাদুজ্জামান রিপন নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে তাদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান।
মন্তব্য চালু নেই