গোয়েন্দা সংস্থাকে হুঁশিয়ারি খালেদা জিয়ার
গোয়েন্দা সংস্থাকে হুঁশিয়ার করে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেন, ‘আমি সকল সরকারি এজেন্সি সম্পর্কে জানি। আমরাও দেশ পরিচালনা করেছি। কিন্ত এজেন্সিগুলোকে তাদের জুরিসডিকশন মেনে কাজ করতে হবে।
কারণ সব কাজের জন্য তাদেরকেও্ জবাবদিহি করতে হবে। কাউকেই ছাড়া হবে না।
শনিবার বিকালে জামালপুরের জনসভায় তিনি সাম্প্রতিক বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডের ঘটনাগুলো তুলে ধরে বলেছেন, “এই আওয়ামী লীগ গুম করেছে, খুন করেছে। আওয়ামী লীগ একটি সন্ত্রাসী দল, আওয়ামী লীগ একটি ছিনতাইকারী দল।
সন্ত্রাস দমনে গঠিত র্যাবকে আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করছে দাবি করে এই বাহিনী বিলুপ্ত করার দাবিও জানান বিএনপি চেয়ারপারসন।
খালেদা জিয়া বলেন, সরকারকে বিএনপির সাথেই আলোচনায় বসতে হবে। এর বিকল্প কোনো পথ নেই। বিএনপি বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় বড় দল।
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, অবৈধ সরকারের সকল কাজই অবৈধ। এই অবৈধ সরকার যেসব আইন করবে সব কিছুই অবৈধ। তাই আওয়ামী লীগও অবৈধ।
সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে দাবি করে এর সঙ্গে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের জড়িত থাকার অভিযোগ তুলেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারকে ‘অবৈধ’ আখ্যায়িত করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচনের দাবিও জানান তিনি।
ঢাকা থেকে রওনা হয়ে বিকাল ৪টার দিকে জনসভাস্থল জামালপুর জিলা স্কুল মাঠে পৌঁছেন খালেদা। মঞ্চের উঠলে দলের নেতা-কর্মীরা করতালি দিয়ে তাদের নেত্রীকে স্বাগত জানায়।
বিএনপির জামালপুর জেলা সভাপতি ফরিদুল কবির তালুকদার শামীমের সভাপতিত্বে জনসভায় বিভিন্ন উপজেলা থেকে বিএনপি নেতা-কর্মীরা যোগ দিয়েছেন। শেরপুর ও ময়মনসিংহের বিভিন্ন উপজেলা থেকেও এসেছেন অনেক।
সমাবেশে অনেকের হাতে ধানের শীষ প্রতীক, জিয়াউর রহমান, তারেক রহমান ও খালেদা জিয়ার বড় বড় প্রতিকৃতি রয়েছে। এসব ব্যানারের পাশাপাশি বিএনপির মহাসচিব প্রয়াত ব্যারিস্টার আব্দুস সালাম তালুকদারের নামে ডিজিটাল ব্যানারও দেখা গেছে। সালাম তালুকদারের বাড়ি জামালপুরে।
৫ জানুয়ারি দশম সংসদ নির্বাচন বর্জনের পর রাজধানীর বাইরে এটা খালেদা জিয়ার চতুর্থ জনসভা। সর্বশেষ গত ২৩ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জনসভায় তিনি বক্তব্য রাখেন।
দুপুর ২টায় জামালপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফরিদুল কবির তালুকদারের সভাপতিত্বে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের জনসভা শুরু হয়।
মঞ্চে উপস্থিত রয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমানউল্লাহ আমান, খায়রুল কবির খোকনসহ ২০দলীয় জোটের নেতারা।
বিএনপি’র সাবেক এমপি নিলোফার চৌধুরী মনি, সিরাজুল হক, জেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি আমজাদ হোসেন, রশিদুজ্জামান মিল্লাতের সমন্বেয়ে একটি গ্রুপ এবং বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এমএ কাইয়ুম, সাবেক কেবিনেট সচিব এসএম হালিম, বর্তমান জেলা বিএনপি’র সভাপতি ফরিদুর কবীর তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক ওয়ারেস আলী মামুনের সমন্বয়ে অন্য একটি গ্রুপে পৃথক পৃথকভাবে কর্মী নিয়ে জনসভায় উপস্থিত হয়েছে।
শনিবার বেলা বাড়ার সাথে সাথে ট্রাক, বাস, টেম্পু, মোটসাইকেল, ভ্যান, রিকশাযোগে এবং পায়ে হেঁটে মানুষ জনসভাস্থলে আসতে শুরু করে।
দেখা গেছে, বিভিন্ন জেলা ও থানার নেতা, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি সংবলিত ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে স্লোগান দিতে দিতে নেতাকর্মীরা মাঠে প্রবেশ করছেন।
ইতোমধ্যে জামালপুর জেলা শহর ছাড়াও দেওয়ানগঞ্জ, বকশিগঞ্জ, সরিষাবাড়ি, মেলানদাহ, মাদারগঞ্জ, ইসলামপুর থানা এবং শেরপুর জেলার শ্রিবরদি, মালিতাবাড়ি, নকলা, ঝিনাইগাথি উপজেলার নেতাকর্মীরা মাঠে উপস্থিত হয়েছেন।
এছাড়া ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইলের নেতাকর্মীরাও জনসভাস্থলে উপস্থিত হয়েছেন।
অন্যদিকে, জনসভাস্থলে জোটের অন্যতম শরিক দল জামায়াত ইসলামীর নেতাকর্মীরাও ছোট ছোট মিছিলসহ বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে যোগ দিয়েছেন।
বিচারপতি অভিশংসনের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে এবং দ্রুত নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন নির্বাচন দেওয়ার দাবিতে আয়োজিত এই জনসভায় সভাপতিত্ব করছেন জামালপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফরিদুল কবির তালুকদার শামীম।
মন্তব্য চালু নেই