গোলাপগঞ্জে যৌতুকের দাবীতে গৃহবধূ শিলাকে পাশবিক নির্যাতন

আজিজ খান, গোলাপগঞ্জ (সিলেট) প্রতিনিধি: সিলেটের গোলাপগঞ্জের আমুড়া নয়াটুল এলাকায় যৌতুকের দাবীতে দু‘সন্তানের জননী এক গৃহবধূকে আটকে রেখে নিযার্তনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বুধবার রাতে গৃহবধূর ভাই ব্যবসায়ী সুহেদ আহমদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে গোলাপগঞ্জ থানা পুলিশ আহত গৃহবধূকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠায় ।

বতর্মানে আহত গৃহবধূ সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩ তলার ৮নং ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন। আহত গৃহবধূর নাম শিলা বেগম (৩৫) স্বামী মো. মঈনুল হোসেন (৪০), সে আমুড়া নয়াটুল গ্রামের মৃত তমছির আলীর পুত্র।

অভিযোগ সূত্রে জানাযায়, ২০০৯ ইং সালে বড়বোন শিলা বেগমকে মঈনুলের সাথে বিয়ে দেন সুহেদ আহমদ। বিয়ের ক‘দিন পর সুহেদ আহমদ তাদের সংসার সুখের হওয়ার জন্য একটি পাকা দালান ঘর তৈরি করে দেন। প্রথম পুত্র সন্তান জন্ম নেবার পর মঈনুল হোসেন প্রবাসে যাবার জন্য তার স্ত্রী শিলাকে মারধর করে তার ছোট ভাই সুহেদের কাছে ২ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। দাবী অনুযায়ী সুহেদ তার জমি বিক্রি করে সেই টাকা পরিশোধ করেন। ২য় সন্তান মেয়ে জন্ম নেয়ার পর সে আবারো ৫ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবী করে। সুহেদ টাকা না দেয়ার অপারগতা জানালে তার বড় বোনের স্বামী মঈনুল তার বোন শিলাকে দড়ি দিয়ে বেঁধে মারধর করে ।

সুহেদের স্ত্রী রুমা বেগম ও তার ভাবী পারভিন আক্তার মঈনুলের বাড়িতে শিলাকে দেখতে গেলে মঈল, মঈনুলের ভাই আজমল ও মঈনুলের চাচাতো ভাই আব্দুস সবুর তাদের সামনে শিলাকে লাঠি দিয়ে মাটিতে ফেলে এলোপাথারি মারধর করে এবং আত্নীয়দের গালিগালাজ করে তাড়িয়ে দেয়। পরে রাতে শিলা সুহেদের স্ত্রীকে ফোন করে জানায় তার স্বামী মঈনুল, মঈনুলের ভাই আজমল ও মঈনুলের চাচাতো ভাই আব্দুস সবুর তাকে আজ রাতে প্রাণে মেরে ফেলার জন্য দা, দড়ি এনে রেখেছে যদি দাবীকৃত যৌতুকের টাকা (বুধবারের) আজকের রাতের মধ্যে পরিশোধ না করা হয় ।

বোনের কথা শুণে সুহেদ আহমদ গোলাপগঞ্জ থানায় গিয়ে বিষয়টি জানান । পরে গোলাপগঞ্জ থানা পুলিশ সুহেদকে সাথে করে নিয়ে তার বোন শিলাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠায় ।

আহত শিলা জানান, যৌতুকের দাবীতে বিয়ের পর থেকেই ওরা আমাকে পাশবিক নির্যাতন করে আসছে । গত দু‘দিন থেকে আমার স্বামী আমাকে এক ঘরে বেঁধে রেখে টাকার জন্য আমাকে লাঠি দিয়ে পেটায় । আমি আমার স্বামীর বড় বোন আফিয়া বেগমকে বলেছিলাম আমাকে ডাক্তারে পাঠাও আমি মরে যাবো । আমার স্বামী একথা শুনে আমাকে দড়ি আর দা দেখিয়ে বলেন এমনিতেই আজ রাতে টাকা না পেলে তকে মেরে ফেলবো । পরে আমি লুকিয়ে সুহেদের স্ত্রীকে ফোন করে সব বিষয় জানাই । এরপর রাতে পুলিশ আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায় ।

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে গোলাপগঞ্জ থানার ওসি এ.কে.এম শিবলী জানান, সুহেদ আমাকে বিষয়টি জানালে আমি তাৎক্ষনিক এসআই জাফরকে ঘটনাস্থলে ফোর্স দিয়ে পাঠাই এবং আহত গৃহবধূকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠাই। এব্যাপারে গোলাপগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই