গোপন মিশনে জামায়াত

দেশকে অস্থিতিশীল করতে ভেতরে ভেতরে ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে জামায়াত-শিবির।এবার প্রকাশ্য রাজনীতির ময়দান ছেড়ে গোপন মিশনে নেমেছে দলটি শত শত নেতাকর্মী।

এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে গোপন বৈঠক করার সময় বেশ কয়েকজনকে আটকও করা হয়েছে।

পুলিশ বলছে, তাদের জিজ্ঞাসাবাদে এরই মধ্যে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য বের হয়ে এসেছে। এখনই এব্যাপারে বিস্তারিত কিছু বলতে চাইছেন না পুলিশ কর্মকর্তারা।

দলের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের বিরুদ্ধে মৃত্যুপরোয়ানা জারি করার পর থেকেই মূলত দেশজুড়ে একটা অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করা যাচ্ছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন,দেশকে অস্থিতিশীল করতে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র চলছে।

এছাড়া পুলিশের বিভিন্নসূত্র জানিয়েছে,দুই বিদেশি হত্যা,রাজধানীর মিরপুরে পুলিশ হত্যা,পুরান ঢাকায় তাজিয়া মিছিলে বোমা হামলার বিষয়টি একই সূত্রে গাঁথা।এছাড়া নিরাত্তার অজুহাতে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট টিমের ঢাকা সফর বাতিল করার বিষয়টি একসূত্রে গাঁথা।

একাধিক গোয়েন্দা প্রতিবেদনও সেরকমই ইঙ্গিত দিয়েছে বলে জানা গেছে।সরকার বিষয়টি টের পেয়ে এরই মধ্যে সারাদেশে অভিযান শুরু করেছে। পুলিশ এরই মধ্যে কিছু কিছু নাশকতার ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দিয়েছে।

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলাগুলোর রায়ের আগে-পরে রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘোষণার পথ থেকে সরে এসে নতুন কর নাশকতার পথে অগ্রসর হচ্ছে জামায়াত-অভিযোগ পুলিশের।

জানা গেছে মুজাহিদের ফাঁসি ঠেকাতে যে নতুন ষড়যন্ত্র নিয়ে আগাচ্ছিল দলটি তা পুলিশের কাছে এরই মধ্যে ফাঁস হয়ে গেছে।

তাদের অপকর্ম ঠেকোতে তৎপর পুলিশ দেশের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে জামায়াত-শিবিরের শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।তাদের কাছ থেকে নাশকতার জন্য মজুদ গড়ে তোলা বিপুল গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

গত বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর গাবতলীতে তল্লাশি চালানোর সময় এক শিবির কর্মীর ছুরিকাঘাতে পুলিশের এএসআই ইব্রাহীম মোল্লা নিহত হন।এ ঘটনায় মাসুদ নামে একজনকে তাৎক্ষণিকভাবে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

পুলিশের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, গ্রেপ্তারকৃত মাসুদকে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জামায়াত-শিবিরের ষড়যন্ত্রের কথা জানতে পারে। এরপর তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী অভিযান চালিয়ে রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে এক মেস থেকে বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ উদ্ধার করে পুলিশ।এ সময় তিনজনকে আটক করা হয়। এরপর অভিযান চালানো হয় মাসুদের গ্রামের বাড়ি বগুড়ায়।সেখান থেকেও জামায়াত-শিবিরের বহু নেতাকর্মীকে আটক করা হয়। দেশের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

জানতে চাইলে পুলিশের সহকারী মহাপরিদর্শক (মিডিয়া) নজরুল ইসলাম বলেন, ‘পুলিশ হত্যা ও তাজিয়া মিছিলে বোমা হামলা একই সূত্রে গাঁথা। স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি পূর্ব পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনা ঘটিয়েছে।’

শনিবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পুরান ঢাকার হোসনি দালানের তাজিয়া মিছিলে বোমা হামলায় আহতদের দেখতে যান পুলিশের মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক। তিনি সাংবাদিকদের জানান, একাত্তরের স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিই পুলিশ হত্যা ও তাজিয়া মিছিলে হামলার জন্য দায়ী। তারা পরিকল্পিতভাবেই এসব হামলা করছে।

পুলিশ সদস্য হত্যার ঘটনায় আটক মাসুদকে জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বের হয়ে এসেছে দাবি করে আইজিপি বলেন, ‘দেশব্যাপী অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করার পরিকল্পনা হয় বগুড়ায়। সেখান থেকেই বিভিন্ন গ্রুপ ঠিক করা হয়। তাদেরকে বিভিন্ন জায়গায় হামলার দায়িত্ব দেয়া হয়। নতুন মিশন নিয়ে তারা কাজ শুরু করে। তাবে তাদেরকে খুঁজে বের করে কঠোর শাস্তি দেয়া হবে।’

এসব বিষয়ে জামায়াত নেতাদের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তাদের অধিকাংশই আত্মগোপনে।ফোন করেও তাদের বক্তব্য জানা িসম্ভব হয়নি।তবে শনিবার রাতে পাঠানো এক বিবৃতিতে পুলিশ সদস্য ইব্রাহিম মোল্লা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জামায়াত-শিবির জড়িত বলে পুলিশের মহাপরিদর্শক যে বক্তব্য দিয়েছেন, তার প্রতিবাদ জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য হামিদুর রহমান আযাদ বিবৃতিতে বলেন, যথাযথ তদন্ত ছাড়াই আইজিপি জামায়াতকে দায়ী করে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এছাড়া আজ এক বিবৃতিতে সংগঠনটি বলেছে- তাজিয়া মিছিলে বোমা হামলার জন্য জামায়াতকে দায়ী করা অনভিপ্রেত। তারা এ ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছে।ঢাকাটাইমস



মন্তব্য চালু নেই