রিয়াজ রহমানের ওপর হামলা
গুলি না অন্যকিছু, এখনো জানে না পুলিশ!
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী রিয়াজ রহমানের ওপর গুলি চালানো হয়েছিল কী না এ বিষয়টি পুলিশ এখনো নিশ্চিত নয়। এ জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের রিপোর্টের অপেক্ষায় আছে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। এদিকে ঘটনার ৩ দিন পরও খোঁজ মেলেনি এ ঘটনার গুরুত্বপূর্ণ প্রত্যক্ষদর্শী রিয়াজ রহমনের গাড়িচালকের। পুলিশের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, এ ক্ষেত্রে তাদের অসহযোগিতা করছে রিয়াজ রহমানের পরিবার।
এদিকে গত মঙ্গলবার রাত ৮টা ৩৫ মিনিটে গুলশানের ৫৪ নম্বর রোডে রিয়াজ রহমানের ওপর হামলার ঘটনার দুইটি ভিডিও ফুটেজ এখন পুলিশ ও র্যাবের হাতে। র্যাবের কাছে ১০ সেকেন্ড ও পুলিশের কাছে ৪৫ সেকেন্ডের ভিডিও ফুটেজ রয়েছে। এ সংক্রান্ত আরেকটি ভিডিও ফুটেজ আছে গুলশানের ৫৪ নম্বর রোডে বাটা সেন্টারে। কিন্তু বৃহস্পতিবারও পুলিশ সেখান থেকে ভিডিও ফুটেজটি উদ্ধার করতে পারেনি।
তদন্তের বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ‘রিয়াজ রহমানের ওপর হামলার ঘটনায় কারা লাভবান হবে- এ বিষয়টি মাথায় রেখে তদন্ত কাজ চালানো হচ্ছে। তদন্তে ব্যক্তিগত শত্রুতা, পারিবারিক বিষয় ও রাজনৈতিক বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হচ্ছে।’
পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার লুৎফুল কবীর জানান, ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রিয়াজ রহমানের চিকিৎসকরা পুলিশের কাছে একটি রিপোর্ট দেবে। রিয়াজ রহমানের শরীরে গুলির আলামত নাকি বোমার স্প্লিন্টারের আলামত অথবা তিনি কিভাবে আহত হয়েছেন এ সংক্রান্ত রিপোর্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানাবে।
তিনি জানান, ঘটনাস্থলের আলামত যাচাই করে সিআইডি একটি রিপোর্ট পুলিশের কাছে দিয়েছে। তবে তিনি রিপোর্টটি এখনো পড়েননি। রিপোর্টে হামলার ধরন হিসেবে কী উল্লেখ করা হয়েছে তা তিনি শুক্রবার জানাবেন।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার শেখ নাজমুল আলম বলেন, ‘গুলশান থানার পাশাপাশি ডিবি ঘটনাটি ছায়া তদন্ত করছে। ঘটনাটি তদন্তের জন্য গাড়িরচালককে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তার গ্রামের বাড়ি ও ঢাকার ঠিকানাও পুলিশকে জানানো হচ্ছে না। এ ঘটনা তদন্তের জন্য গাড়িচালক একটি গুরুত্বপূর্ণ সূত্র। কিন্তু গাড়ি চালককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিয়াজ রহমানের পরিবারের পক্ষ থেকে অসহযোগিতা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের চলমান অবরোধের মধ্যে মঙ্গলবার রাতে গুলশানে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে আসার পর তার উপদেষ্টা রিয়াজকে গুলি চালানোর পাশাপাশি তার গাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়।
ওইদিন এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, রিয়াজ রহমানের প্রাইভেটকারটি গুলশান দুই নম্বরের ওয়েস্টিন হোটেলের সামনে পৌঁছলে হঠাৎ তিন-চারটি মোটরসাইকেলে করে দুর্বৃত্তরা এসে তার গাড়িতে ভাঙচুর চালায়। এর পরপরই চালানো হয় গুলি। রিয়াজ রহমানের কোমরে ও পায়ে চারটি গুলি লাগে।
গুলিবিদ্ধ অবস্থাতেই গাড়ি থেকে হামাগুড়ি দিয়ে নেমে পাশের একটি ভবনে গিয়ে লোকজনের সাহায্য চান তিনি। আর এরই মধ্যে দুর্বৃত্তরা আগুন ধরিয়ে দেয় রিয়াজ রহমানের গাড়িতে।
পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় র্যাব ও গুলশান থানার পুলিশ। স্থানীয়দের সহায়তায় পুলিশ রিয়াজ রহমানকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানেই অস্ত্রোপাচার করা হয় রিয়াজ রহমানের শরীরে। চিকিৎসকরা জানান, রিয়াজ রহমানের পায়ে ও কোমরের নিচে চারটি গুলি লেগেছে। তার প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে।
মন্তব্য চালু নেই