» ফলো আপ :

‘গুলি করল পুলিশ, মামলাও করল পুলিশ’

ব্যবসায়ী ফয়েজ আলী সরকারকে গুলির ঘটনায় মামলা করতে চাইলে পুলিশ তা নেয়নি। উল্টো তাকে আসামি করে মামলা করেছে পুলিশ। যার বিরুদ্ধে চাঁদা দাবি ও পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করার অভিযোগ, পুলিশের সেই এসআই বাদী হয়ে মঙ্গলবার মামলাটি করেছেন। এ ঘটনায় ফয়েজ আলীর পরিবার অসহায় হয়ে পড়েছেন ।

কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ফয়েজের সম্পৃক্ততা না থাকলেও তার বিরুদ্ধে পিকেটিং ও পুলিশের উপর হামলার অভিযোগ করা হয়েছে। ফয়েজ আলীর স্ত্রী রেহানা ফয়েজ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এই দেশে কি কোনো বিচার নাই? গুলি করল পুলিশ, মামলাও করল পুলিশ। এটা কেমন বিচার?’

এ বিষয়ে গুলিবিদ্ধ ফয়েজ আলী সরকার জানান, সোমবার ওই এলাকায় কোনো পিকেটিংয়ের ঘটনা ঘটেনি। এটি ছিল পুলিশের সাজানো ঘটনা। তা ছাড়া তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। তিনি একজন ব্যবসায়ী।

ফয়েজ আলী আরো জানান, তার কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছিলেন এসআই জয়নাল। গত প্রায় এক মাস ধরে বিভিন্ন সময়ে আজমপুরের আইয়ূব মার্কেটে তার দোকান এসএম নিপু এন্টারপ্রাইজে গিয়ে চাঁদা দাবি করেন জয়নাল। চাঁদা না দিলে বিএনপি-জামায়াতের ক্যাডার বানিয়ে মামলায় আসামি করার হুমকি দিয়েছিলেন তিনি। ঘটনার সময় ফয়েজের সঙ্গে ১ লাখ ২০ হাজারেরও বেশি টাকা ছিল। তাকে গুলি করে এসআই জয়নাল ওই টাকা নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে দক্ষিণখান থানার ওসি শামীম অর রশীদ তালুকদার বলেন, ‘তারা (ফয়েজ ও তার পরিবার) মিথ্যা বলছে। পুলিশ কখনো চাঁদা দাবি করতে পারে না। তারা বিএনপি-জামায়াতের লোক। অবরোধের পিকেটিংকালে পুলিশের উপর তারা হামলা করে। এ সময় ধস্তাধস্তিতে এসআই জয়নালের পিস্তল থেকে গুলি বের হলে ফয়েজ গুলিবিদ্ধ হয়।’

এদিকে ফয়েজের ভাই আয়েশ আলী বলেন, ‘থানায় যেহেতু আমাদের মামলা নেয়নি, আমরা আদালতে মামলা করব।’

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ফয়েজকে কেন্দ্র করে গোয়েন্দা পুলিশ ও দক্ষিণখান থানা পুলিশের তৎপরতা থাকলেও তাকে এখনো গ্রেফতার দেখানো হয়নি।

দক্ষিণখান থানার ওসি জানান, এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় সুস্থ হলেই ফয়েজকে গ্রেফতার করা হবে।

প্রায় একই রকম ঘটনা ঘটেছিল গত বছরের ২২ অক্টোবর শেরেবাংলা নগর এলাকায়। সেদিন এসআই আনোয়ার কর্তৃক অটোরিকশাচালক শাহ আলমকে ধরে এনে পায়ে পিস্তল ঠেকিয়ে ‍গুলি করা হয়েছিল। এ ঘটনায় ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা তদন্তে প্রমাণ পেলে ওই দিনই এসআই আনোয়ারকে গ্রেফতার ও ওসি আব্দুল মোমিনকে প্রত্যাহার করে নেন। এদিকে এ ঘটনায় উল্টো শাহ আলমের বিরুদ্ধে ছিনতাই মামলা হয় এবং তাকে গ্রেফতার করা হয়। শাহ আলম এখন কারাগারে রয়েছেন, কিন্তু এসআই আনোয়ার এখন জামিনে মুক্ত।



মন্তব্য চালু নেই