গুলশান ট্র্যাজেডি: ‘আমার গর্ভের সন্তান বাবার মুখ দেখলো না’
শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার সাইফুল ইসলাম চৌকিদার ছিল পরিবারের একমাত্র রোজগেরে লোক। ঢাকার গুলসান হলি আর্টিসান রেস্টুরেন্টে জঙ্গি হামলায় নিহত লাশের সারিতে সাইফুল ইসলাম চৌকিদার।
গত শুক্রবার রাতে রেস্টুরেন্টে জঙ্গিদের হামলায় বিদেশীসহ প্রায় ২০জন নিহত হয়। সাইফুল ঐ রেস্টুরেন্টে পিজ্জা তৈরির বাবুর্চির কাজ করতেন। দীর্ঘ ১০বছর জার্মানীতে কাটিয়ে দেশে এসে বছর দেড় যাবৎ হলি আর্টিসান রেস্টুরেন্টে কাজ শুরু করেন তিনি। সাইফুলের দুই সন্তান স্ত্রী ও মাকে নিয়ে সাইফুলের সাজানো সুখের সংসার জঙ্গিদের গুলিতে স্তব্দ হয়ে গেল।
নড়িয়ায় কলুকাঠি গ্রামে সাইফুল ইসলাম চৌকিদারের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় হৃদয় বিদারক দৃশ্য। ১০বছরের মেয়ে সামিয়া বাবার মৃত্যুর খবরে বাকহীন। ৭বছরের মেয়ে ইমলি খুঁজে ফিরছে বাবাকে। ক্ষনে ক্ষনে ডুকরে কেঁদে উঠছে স্ত্রী সোনিয়া আক্তার।
সাইফুলের স্ত্রী সোনিয়া আক্তার বলেন, গত শুক্রবার ইফতারের পূর্বে ওর সাথে আমার ফোনে শেষ কথা হয়েছে। তারপর আর যোগাযোগ হয়নি। রেস্টুরেন্টে জঙ্গি হামলার খবর পেয়ে বার বার ফোন করেছি। মোবাইল বেজেই চলছে কেউ কথা বলেনি। আমার মেয়েরা এখন কাকে বাবা বলে ডাকবে ? আমার গর্ভের সন্তান বাবার মুখ দেখলো না।
সাইফুল ইসলাম চৌকিদারের মা সমেরা বেগম কাঁদতে কাঁদতে বলেন, সাইফুল বাড়ি এসে সকলের সাথে ঈদ করবে বলেছিলো। জঙ্গিরা ওকে লাশ বানিয়ে পাঠাচ্ছে। ঢাকার আত্মীয় স্বজনরা আমার বাবার লাশ সনাক্ত করেছে। আগামীকাল বাড়িতে আনবে স্বজনরা।
আমার ছেলের কি দোষ ছিল, কেন বিনা দোষে মরতে হল ? আমার নাতনিরা কাকে বাবা বলবে ?
জেলা প্রশাসক মো: মাহমুদুল হোসাইন খান বলেন, আমি দাপ্তরিকভাবে এখনো কোন তথ্য পাইনি।
মন্তব্য চালু নেই