গুলশান কার্যালয়ে যোগাযোগ পুনঃস্থাপনে জাতিসংঘে আবেদন বিএনপির
চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে অবিলম্বে টেলিফোন, ফ্যাক্স, ইন্টারনেট ও ক্যাবল সংযোগসহ সকল যোগাযোগ ব্যবস্থা পুনঃস্থাপনের জন্য জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থাকে পদক্ষেপ নিতে আবেদন জানিয়েছে বিএনপি।
বুধবার দলের যুগ্ম-মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদ প্রেরিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার আবাস্থল গুলশান কার্যালয়ের টেলিফোন, ফ্যাক্স, ইন্টারনেট, ব্রডব্যান্ড ও ক্যাবল সংযোগসহ সকল যোগাযোগ ব্যবস্থা পুনঃস্থাপনের ব্যবস্থা নিতে আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ছিলাম। কিন্তু বোবা সরকার তাতে কর্ণপাত করেনি। আমরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সব মানবাধিকার সংস্থা, সংগঠন এবং মানবাধিকার কর্মীদেরকে গুলশান কার্যালয়ের পরিস্থিতি পরিদর্শন পর্যবেক্ষণ ও অনুধাবন করে বিশ্বের কাছে তা তুলে ধরারও আহ্বান জানাই।’
তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ব্যবসায়ী অবৈধ আওয়ামী সরকার মুক্তিযুদ্ধের সকল আকাঙ্ক্ষা ও অর্জনকে বিনষ্ট করে জাতির ভবিষ্যৎ অধিকারকেও হরণ করেছে। বিতর্কিত পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে (অনুচ্ছেদ-৭ বি) সংবিধানের প্রায় এক-তৃতীয়াংশকেই অপরিবর্তনযোগ্য করে দেওয়া হয়েছে।’
সালাহ উদ্দিন বলেন, ‘কিন্তু কোনো সংসদই পরবর্তী সংসদের হাত-পা বেঁধে দিতে পারে না। সার্বভৌম সংসদ ও রাষ্ট্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণের ভবিষ্যৎ অধিকার হরণ সভ্য দুনিয়ার কোনো রাষ্ট্রেই স্বীকৃত পন্থা নয়। এটি সরাসরি বেআইনী।’
তিনি বলেন, ‘এই সেই আওয়ামী লীগ যারা চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে বাকশাল কায়েম করে তৎকালীন সংসদকে পুনর্বার আর এক মেয়াদের জন্য নির্বাচিত ঘোষণা করেছিল। আওয়ামী লীগের ইতিহাস সাংবিধানিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতা কুক্ষিগত করার ইতিহাস। এদের হাতে আজ গণতন্ত্র, মানবাধিকার, মৌলিক অধিকার, বিচার ব্যবস্থা, সংসদ ও সর্বোপরি সমগ্র রাষ্ট্র ব্যবস্থা জিম্মি হয়ে পড়েছে। গণতন্ত্র খেকো এই অবৈধ সরকারকে অবিরাম সংগ্রামের মধ্য দিয়ে উৎখাতের কোনো বিকল্প নেই।’
সালাহউদ্দিন বলেন, ‘গণতন্ত্র মুক্তি আন্দোলনে প্রতিদিন পুলিশ বাহিনী বুলেটে ক্ষতবিক্ষত করছে অসংখ্য আন্দোলনকারীদের। বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গুলি করে লাশ ফেলে রাখা হচ্ছে খালে-বিলে-বেড়িবাঁধে। ক্রসফায়ারের ধরন পাল্টে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট করে হত্যা করা হয়েছে যশোরের মনিরামপুরের ইউসুফ ও লিটনকে। দুই পায়ে গুলি করে চিরতরে পঙ্গু করা হয়েছে ঢাকা কলেজের শিবির নেতা আবদুল হামিদকে, মোহাম্মদপুরের জামায়াত নেতা নাজমুল হাসান ও আবুল কাশেমকে। অসংখ্য বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীকে প্রতিদিন গুম, খুন ও অপহরণ করা হচ্ছে দেশব্যাপী।’
তিনি বলেন, ‘প্রচার মাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করে, কুক্ষিগত বিচার ব্যবস্থার মাধ্যমে শেখ হাসিনা তার অবৈধ শাসন চালিয়ে যাওয়ার যে সংকল্প নিয়েছে তাতে জনসাধারণের সকল স্বপ্ন ধূলিস্যাৎ হতে বসেছে।’
দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদসহ সকল নেতাদের মিথ্যা মামলায় রিমান্ডে নিয়ে মানসিক নির্যাতন করা হচ্ছে দাবি করে সালাহউদ্দিন বেআইনী রিমান্ড বন্ধ করে তাদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান।
একই সঙ্গে সাবেক এমপি নাজিমুদ্দিন আহমেদ ও আশরাফ উদ্দিন নিজানকে গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তিনি। তিনি তাদের তাদের ও দেশব্যাপী চলমান অবরোধ ও হরতালে গ্রেফতার সকল রাজবন্দীদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন।
মন্তব্য চালু নেই