গাইবান্ধায় হাতে লেখা প্রাচীন কোরআন
গাইবান্ধায় খড়ের তৈরি কাগজে হাতে লেখা অন্ততঃ ২০০ বছর আগের পুরনো পবিত্র কোরআন শরীফের সন্ধান মিলেছে। এটি বর্তমানে অক্ষত অবস্থায় থাকলেও রক্ষণাবেক্ষণ অভাবে বিনষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
কোরআন শরীফটি বর্তমানে গাইবান্ধা শহরের সার্কিট হাউজ সংলগ্ন সুখনগর এলাকার বাসিন্দা অ্যাডভোকেট সেকেন্দার আযম আনাম আখওয়ান্দের তত্ত্বাবধানে রয়েছে।
সেকেন্দার আজম গাইবান্ধা সদর উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা সাবেক জেলা শিক্ষা অফিসার মরহুম আব্দুল মান্নান আখওয়ান্দের ছেলে। তিনি জানান, তার বাবার দাদা ফইম উদ্দিন আখাওয়ান্দ কোরআন শরীফটি নিজ হাতে লিখেছেন। তিনি বিশেষ পদ্ধতিতে খড় দিয়ে তৈরি কাগজ এবং শিমের বীজ আগুনে পুড়িয়ে কালি বানিয়ে বাঁশের কলম দিয়ে কোরআন শরীফের প্রতিটি হরফ লিপিবদ্ধ করেন।
১৯৬০ সালে রংপুরে অনুষ্ঠিত শিক্ষা সংস্কৃতি মেলায় দূলর্ভ এ কোরআন শরীফটি প্রদর্শিত হয়। সে সময় কোরআন শরীফটি একনজর দেখার জন্য দূর-দূরান্তের হাজার হাজার দর্শনার্থী মেলায় আসেন।
এটি সংরক্ষণের ধারাবাহিকতা সম্পর্কে সেকেন্দার আজম জানান, মরহুম ফইম উদ্দিন আখওয়ান্দ মৃত্যুর পর তার ছেলে মাগন আখওয়ান্দ এটি সংরক্ষণ করেন। পরবর্তীতে মাগন আখাওয়ান্দ কোরআন শরীফটি তার ছেলে মরহুম আব্দুল মান্নান আখওয়ান্দের তত্বাবধানে দেন। গত ২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর তার মৃত্যুর পর এটি সংরক্ষণের ভার তার উপরে পড়ে।
কোরআর শরীফটির লেখক ফইম উদ্দিনের শিক্ষা জীবন সম্পর্কে তিনি জানান, মরহুম ফইম উদ্দিন আখওয়ান্দের বাবার জোতদারি ছিল। বিলাস বহুল জীবনযাপন তার ভাল লাগতো না। ছোট বেলা থেকেই তিনি ইসলামী ধারার সাদা-মাটা জীবনযাপন পছন্দ করতেন। কিশোর বয়সে বাবার অঢেল সম্পদ আর সুখের মায়া ছেড়ে তিনি অজানার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমান। কিছুদিন পর বাড়ি ফিরে লেখাপড়ার জন্য ভারতে যান। এরপর উপমহাদেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করে ফইম উদ্দিন আখওয়ান্দ আরবী ও ফারসি ভাষায় পান্ডিত্য লাভ করেন। এ বিশেষ পন্ডিত্যের জন্য ভারতে তিনি “আখওয়ান্দ” (জ্ঞানী) উপাধী লাভ করেন।
মুসলমানদের ধর্মীয়গ্রন্থ প্রাচীন পবিত্র এ কোরআন শরীফটি জাতীয় পর্যায়ে সংরক্ষণের দাবি জানিয়েছেন আখওয়ান্দ পরিবারের বর্তমান সদস্য ও স্থানীয়রা।
মন্তব্য চালু নেই