গর্ভাবস্থায় চাইনিজ খাবার খাওয়ার ক্ষেত্রে থাকুন সতর্ক

আপনি কি সন্তানসম্ভবা ? আপনি কি চাইনিজ খাবার খেতে পছন্দ করেন? তাহলে আপনার জানার প্রয়োজন আছে চাইনিজ খাবার আপনার জন্য নিরাপদ কিনা। চাইনিজ খাবারের রন্ধন প্রণালী নিয়ে বিভিন্ন ধরণের মিথ প্রচলিত আছে বিশেষ করে গর্ভাবস্থার জন্য। এদের মধ্যে একটি মজার মিথ হচ্ছে যে মায়েরা গর্ভাবস্থায় চাইনিজ খাবার খান তাদের সন্তান দুষ্ট প্রকৃতির হয়। গর্ভাবস্থায় চাইনিজ খাবার এড়িয়ে চলার কারণগুলো হচ্ছে-

চাইনিজ খাবার রান্নার সময় অনেক বেশি পরিমাণে চিনি যুক্ত সস ব্যবহার করা হয় যা গর্ভবতী নারীর জন্য না খাওয়াi ভালো। এতে প্রচুর ভিনেগারও ব্যবহার করা হয়, বিশেষ করে সুশি তৈরিতে। চাইনিজ রাইস তৈরিতেও ভিনেগার ব্যবহার করা হয়, যার ফলে এটি লবণাক্ত ও মিষ্টি হয়ে থাকে। ডায়েটিশিয়ানরা অন্তঃসত্ত্বা নারীদের সোডিয়াম ও ফ্যাট জাতীয় খাবার খেতে অনুৎসাহিত করেন।

অনেকেই প্রশ্ন করতে পারেন যে, চীনা নারীরা যদি প্রেগনেন্ট অবস্থায় চাইনিজ খাবার খেয়ে সুস্থ বাচ্চা জন্ম দিতে পারেন তাহলে আমরা কেন পারব না? চাইনিজ খাবারের প্রধান অভিযুক্ত উপাদানটি হচ্ছে MSG বা মনোসোডিয়াম গ্লুটামেট। এই উপাদানটি চাইনিজ খাবার প্রস্তুতিতে ব্যপকভাবে ব্যবহৃত হয়। চাইনিজ খাবারের স্বাদ বাড়ানোর জন্য ব্যবহার করা হয় অ্যাজিনোমটো, এটি হচ্ছে গ্লুটামিক এসিড সোডিয়াম লবণ যা একটি অপ্রয়োজনীয় অ্যামাইনো এসিড। তাছাড়া এটি এক্সাইটোটক্সিন এর শ্রেণীভুক্ত। MSG ক্রমবর্ধমান মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর। প্রতিবেদনে জানানো হয় যে, MSG ও এস্পারটেম(অন্য একটি এক্সাইটোটক্সিন) চাইনিজ খাবারে অনেক বেশি পরিমাণে থাকে, যা নির্দ্বিধায় প্লাসেন্টাল বাঁধা অতিক্রম করে এবং ক্রমবর্ধমান ভ্রুনের মস্তিস্ককে উত্তেজিত করে। MSG তে যে উত্তেজক নিউরোট্রান্সমিটার থাকে তা জন্মের পরে অটিজম, সিজোফ্রেনিয়া ও সেরিব্রাল পালসির মত রোগের কারণ হতে পারে। চিকিৎসা বিজ্ঞানে আশংকা করা হয় যে, খুব ছোটবেলায় MSG গ্রহণের ফলে শিশুদের মধ্যে ভবিষ্যতে অপরাধমূলক আচরণ ও অনিয়মিত সহিংসতার প্রবণতা সৃষ্টি করতে পারে।

The NSW Food Authority একটি সংবিধিবদ্ধ সরকারি প্রতিষ্ঠান যা খাদ্য নিরাপত্তা ও সঠিক লেবেল এর ক্ষেত্রে সহযোগিতা করে। এই প্রতিষ্ঠানটি প্রেগনেন্ট নারীদের জন্য কিছু খাবার সম্পূর্ণ নিষেধ করেছে। কিছু খাবারকে সতর্কতার সাথে গ্রহণেরও নির্দেশ দিয়েছে। কিছু খাবারকে ব্ল্যাক লিস্টে ফেলার কারণ হচ্ছে এগুলোতে প্রাণঘাতী ব্যাকটেরিয়া যেমন- লিস্টেরিয়া ও সালমোনেলা থাকে।

NSW এর মতে যে খাবারগুলো খাওয়া যাবে না :

সালামি ও মুরগী(যদি ৭৫০ ডিগ্রী তাপে বা এরচেয়ে বেশি তাপে রান্না করা হয়), কাঁচা মাংস বা ঠিকমত রান্না না করা মাংস, দোকানের সুশি, পনির(৭৫ ডিগ্রী বা তারচেয়ে বেশি তাপে যদি প্রস্তুত করা না হয়), আইসক্রিম, মেয়োনেজ এবং প্যানকেক। এছাড়াও প্রস্তুত বা প্যাকেটজাত সালাদ, সূর্যমুখী ও সয়াবিনের স্প্রাউট ইত্যাদি।

NSW এর মতে যে খাবারগুলো সতর্কতার সাথে খেতে হবে :

বেঁচে যাওয়া মুরগীর মাংস যা ৬০ ডিগ্রী তাপমাত্রার নীচে পুনরায় গরম করা হয়নি যা একই দিনে প্রস্তুত করা হয়েছে, পনির ও কাস্টারড প্যাকেট খোলার ১-২ দিনের মধ্যে খাওয়া উচিৎ এবং রেফ্রিজারেটরে সংরক্ষন করা উচিৎ।

NSW এর মতে যে খাবারগুলো খাওয়া যাবে :

ঘরে রান্না করা মুরগীর মাংস এবং যেদিন খাবেন সেই দিনই রান্না করুন, ঘরে তৈরি সুশি এবং তাজা টোফু, সয়া ও দই দিয়ে প্রস্তুত করুন। যে কোন উপাদান কেনার পূর্বে প্যাকেটের লেবেলটি ও সংরক্ষণ পদ্ধতি ভালো করে পড়ে নিন।

পরবর্তীতে চাইনিজ খাবার খাওয়ার আগে খুব ভালো করে উপাদানগুলো দেখা নিন এবং কম সস যুক্ত খাবার নিন।



মন্তব্য চালু নেই