খোলামেলা শরীর প্রদর্শনে নয়, বর্ণপ্রথার বলি জ্যাকলিন মিথিলা

মিডিয়ায় কাজ করা কিংবা খোলামেলা শরীর প্রদর্শনের জন্য নয়, বরং বর্ণ প্রথার শিকার হয়ে শেষ পর্যন্ত আত্মহত্যার পথ বেছে নেন মডেল ও আইটেম কন্যা জ্যাকলিন মিথিলা। তার মৃত্যুর পর সুইসাইড নোট ও তার বাবার স্বীকারোক্তিতে এমনটাই অনুমেয়।

ভালোবেসে গোপনে উৎপলকে বিয়ে করেছিলেন জ্যাকলিন মিথিলা। তার গর্ভে সন্তানও আসে। কিন্তু স্বামীর প্ররোচনায় শেষ পর্যন্ত গর্ভপাতও করেছিলেন মিথিলা। কিন্তু এতোসব কিছুর জন্য ক্ষোভ ছিলো না মিথিলার, যতোটা স্বামীর পরিবারের বর্ণ প্রথা তাকে আহত করেছিল।

মিডিয়ায় কাজ করা কিংবা খোলামেলা শরীর প্রদর্শন মোটেও স্বামীর পরিবারের কাছে সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়নি। বরং সবকিছু ছাপিয়ে সামাজিক মর্যাদা, পারিবারিক স্ট্যাটাসই বড় হয়ে আসে। কারণ মিথিলার বাবা ছিল একজন নাপিত, অন্যদিকে স্বামী উৎপলের মা একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা। আর এসব উঁচু নিচু বিষয় তুলে প্রায়শই মিথিলাকে কথা শোনাত উৎপলের পরিবার।

বর্ণপ্রথা একসময় মিথিলার মনকে বিষিয়ে তুলে। এমনকি স্বামীর পরিবার থেকে মিথিলাকে সরে দাঁড়ানোর জন্য প্রচুর টাকার দেয়ারও নাকি প্রস্তাব করেছিলেন কেউ। আর এসব বিষয়ে প্রতিদিন বিষে উঠতো মিথিলার মন। এসব নিয়েই টানাপোড়েনে ছিলেন। প্রায়শই ফেসবুকে আত্মহত্যা বা মৃত্যুর কথা বলতেন।

শেষ দিকে অবস্থা ছিল আরো বেগতিক। কারণ যে উৎপলের সঙ্গে সাত বছরের সুসম্পর্ক ছিল তা যেনো বিয়ের পর বদলে যেতে থাকে। ২০১৬ সালে বিয়ে করলেও সাত বছর ধরে প্রেম করেছেন তারা। মৃত্যুর আগে স্বামীকে একটি চিঠিও লিখে গেছেন মিথিলা। যেখানে স্বামীর কাছে অভিযোগের ভঙ্গিতে লেখা ছিল, ‘রুপা বউদি আমাকে ফোন করে বলেছে যত টাকা লাগে আমাকে দিবে, তার বিনিময়ে তোমাকে ছেড়ে দিতে। উনি আমাকে রাস্তার মেয়ে ভেবেছে। এরচেয়ে বড় অপমান একটা মেয়ের পক্ষে কী হতে পারে?’

নিজেকে বাংলার স্বঘোষিত সানি লিওন দাবি করতেন মডেল ও আইটেম গার্ল জ্যাকলিন মিথিলা। নানা বিতর্কিত কাণ্ড করে নজর কাড়তে চেয়েছিলেন মিডিয়ার। কিন্তু খ্যাতি পাওয়ার আগেই গলায় দড়ি দিয়ে ফেব্রুয়ারর ৩ তারিখে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন তনি।



মন্তব্য চালু নেই