৫২ তাসে ৫৩ খেলা
খেলা এখন জুয়াতে পরিণত

রাজশাহী: বাজির জগতে মারবেল দিয়ে শুরু। প্রথমে বাজিতে মারবেলের মাধ্যমে টাকা ধরা হয়। একটি মারবেল দিয়ে আর একটি মারবেলকে মারতে পারলে টাকা দেওয়া হয়। এই মারবেলের বাজিকে বলা হয় ভোজ। মারবেল দিয়ে কয়েক ধরনের বাজি খেলা যায়। এ খেলাগুলো হলো বাগাডুলি, কেটাব, ভন্ডার, পাক্কু ইত্যাদি।
এতো গেলো ছেলেবেলার খেলা। একটু বড় হলে শুরু হয় ক্যারাম বোর্ড এখানকার বাজিটা একটু অন্য রকমের বাজি। দুজন দুই হাতে দাড়িয়ে পয়েন্টের মাধ্যমে গেম দেওয়া হয়। এতে যে গেম দিতে পারবে সে মোটা অংকের টাকা পাবে।
এটাই শেষ নয় ক্যারামে চলে এন্ট্রির বাজি। নির্দিষ্ট টাকার মাধ্যমে এন্ট্রি ধরতে হবে। এবং একের পর এক রাউন্ড পার হয়ে ফাইনাল খেলতে হয়। এখনে যারা এন্ট্রি খেলে তাদের পাশে দাড়িয়ে বাজিকররা টাকা ধরে।
বাজি জুয়ার জগতে ভালো অবস্থানে রয়েছে তাস। শোনা যায় ৫২ তাসে ৫৩ খেলা।
আসোলে কি তাই? হলে হতে পারে। এই তাস দিযে বিভিন্ন ধরনের খেলা হয়। জুয়া খেলোয়াড়দের নিয়মিত ডায়ালগ লাখ নয়লে ফাঁক। জুয়াতে জিতলে রাতারাতি লাখপতি নয়তো সর্বস্ব হারিয়ে বসে।
জুয়াড়ি বলেন, তাসে খেলা যায় না, এমন খেলা খুব কম আছে। জুয়ার জগতে তাস এখনও সবার ওপরে আছে। শুধু ৫২ তাসে ৫৩ খেলাই নয় এতে নাম না জানা আরও অনেক খেলা-খেলা যায়।
ক্রিকেট বাজির জগতে প্রথমে অবস্থান করছে। শুধু বিশ্বকাপই নয় অন্যান্য প্রিমিয়ার লীগ, বা আইপিএল খেলায় জয়-পরাজয়ের টার্গেট নিয়ে প্রকাশ্যে চলছে লাখ-লাখ টাকার বাজি।
এছাড়াও বাজিকররা আসক্ত হয়ে নগদ টাকা, মোবাইল, মটরসাইকেল, স্বর্ণসহ ঘরের মূল্যবান জিনিসপত্র বিক্রি করছে। এদের মধ্যে রয়েছে অল্প বয়সী শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে যুবক ও ব্যবসায়ী।
পেশাদার জুয়াড়িদের জন্য যেন সুযোগে পরিণত হয়েছে আইপিএল’র খেলা। দিনের পর দিন বৃদ্ধি পাওয়া এই টি-টুয়েন্টি ক্রিকেট নিয়ে বাজি ধরার প্রবণতা বন্ধে প্রশাসনের সক্রিয়তা জরুরী।
ক্রিকেটে বিভিন্ন দেশের ক্রিকেটারদের অংশগ্রহণে টি-টোয়ান্টি খেলাকে বাজির অন্যতম মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছেন বাজিকররা। ১শ টাকা থেকে শুরু করে লাখ টাকার বাজি চলে ক্রিকেট খেলার জয়-পরাজয়কে ঘিরে।
এমনও দেখা যায় টাকার অংক বড় করতে খেলার উপর নির্ভর করে ২ দলে বিভক্ত হয়ে বাজি ধরে তারা। বাজিকরদের মধ্যে দেখা যায়, শিক্ষার্থী, কিশোর, যুবক, ব্যবসায়ী ও পেশাদার জুয়াড়ি রয়েছে।
আবার দেখা গেছে, খেলায় জয়-পরাজয় ছাড়াও প্রতি বল অথবা ওভারে হাজার টাকা বাজি ধরছে ছোট-বড় সকলে। আর এই বাজি ধরাকে কেন্দ্র করে ঘটছে নানা অঘটন। এমন কোন দিন নেই বাজিকে ঘিরে মারধরের ঘটনা ঘটছে না।
এতে অনেকে সর্বস্ব হারাচ্ছে সৃষ্টি হচ্ছে পারিবারিক কলহ। ক্রিকেট বাজি নিয়ে অনেক সময় দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি থেকে শুরু করে হত্যার মতো ঘটনাও ঘটেছে।
গত বছরে রাজশাহীর গোদাগাড়িতে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট নিয়ে বাজি জেতার টাকা আনতে গিয়ে মাসুম আলী (৩০) নামের এক যুবক খুন হয়েছেন। উপজেলার নিমতলা পদ্মা নদীসংলগ্ন পেয়ারাবাগান থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত মাসুমের পিতার নাম পিতা আবু তালেব।
গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি এসএম আবু ফরহাদ জানান, এ ঘটনার রহস্য উন্মোচন করা সম্ভব হয় নি। তবে এ মামলায় এজাহারভুক্ত সাত জনকে আটক করেছে পুলিশ।
ফুটবল খেলায় যে বাজি চলে না তা কিন্তু নয়। এখানে গোল নিয়ে চলে বাজি।
বিশ্বকাপ ফুটবল খেলার বাজি একটু ভিন্ন নামে পরিচিত ইস্টুবাজি। ফুটবল খেলা নিয়ে লাখ লাখ টাকার রমরমা জুয়া চলছে সারা দেশে।
দেখা যায় বিভিন্ন এলাকার হাট-বাজার, দোকান, বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে মোড়ে নানা বয়সের লোকজন ফুটবল নিয়ে নগদ অর্থ বাজি ধরে। প্রথম পর্বের খেলায় তেমন একটা বাজি না থাকলেও। দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে ব্যাপক ভাবে বাজি খেলা শুরু হয়। ফাইনাল খেলায়ও কয়েক কোটি টাকার খেলা হতে পারে।





























মন্তব্য চালু নেই