খেজুর গাছের মাথায় নামাজ!
খেজুর গাছের মাথায় উঠে অভিনব কায়দায় নামাজ আদায় করলেন বাগমারার মোজাম্মেল হোসেন মোজাম।
শুক্রবার জুমার নামাজের পর দুর্গাপুর মহিলা কলেজের মাঠের দক্ষিণ পাশের একটি খেজুর গাছের মাথায় উঠে নামাজ আদায় করেন তিনি। এ সময় শত শত উৎসুক জনতা ভিড় জমান তার নামাজ পড়ার দৃশ্য দেখতে।
খেজুর গাছের মাথায় নামাজ!প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেনের আমন্ত্রণে শুক্রবার দুপুরে দুর্গাপুরে আসেন বাগমারা উপজেলার আক্কেলপুর এলাকার মোজাম্মেল হোসেন মোজাম। দুপুরে জুমার নামাজ শেষে দুর্গাপুর মহিলা কলেজ মাঠের দক্ষিণ পাশের প্রায় ২০ থেকে ২৫ ফিট উঁচু একটি খেজুর গাছে উঠে অভিনব পদ্ধতিতে চার রাকাত নফল নামাজ আদায় করেন তিনি। ঘটনাটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে শত শত উৎসুক জনতা ভিড় জমায় তার নামাজ পড়ার দৃশ্য দেখতে।
এ সময় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম, সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুল মান্নান ফিরোজ, সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র তোফাজ্জল হোসেন, প্রচার সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুর রবও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে মোজাম্মেল হোসেন মোজাম বলেন, এখানে কোনো জাদুবিদ্যা প্রয়োগ করেননি তিনি। মানুষ কোনো বিষয় নিয়ে যদি অধ্যাবসায় করে তাহলে তার কাছে অসাধ্য কিছুই নেই। এটি তার অধ্যাবসায়েরই ফল।
তবে এভাবে নামাজ পড়া অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ বলেও স্বীকার করেন তিনি। কেননা পড়ে গিয়ে হাত-পা ভাঙার ভয় থাকে। তাছাড়া খেজুর গাছের কাঁটার আঘাত তো রয়েছেই।
আরো একটি সংশ্লিষ্ট সংবাদ, গত জুন মাসের বগুড়ার সংবাদ
৩০ ফুট খেজুর গাছের ডগায় নামাজ পড়লেন এক যুবক
বিকেল চারটা। ঘটনাস্থল বগুড়া শহরের সেউজগাড়ী আমতলা মোড়। চারদিকে মানুষ। যানবাহন চলছে স্বাভাবিক। হঠাৎ সেখানে আগমন ঘটে অনুমান পঁচিশ বছর বয়সী আব্দুর রহিম নামের এক যুবকের। সাদা টুুপি ও সাদা আলখেল্লা পরা শশ্রূধারি এই যুবকটি ঘটালেন এক অবিশ্বাস্য ঘটনা। তিনি সেখানে এগিয়ে গেলেন ৩০ফুট লম্বা এক খেজুর গাছের দিকে। এরপর চোখের পলকে উঠে পড়লেন গাছটির ডগায়। তারপর সেখানে দু’রাকাত নফল নামাজ আদায় করলেন। নামাজ শেষে গাছের ডগার উপর বসে দেখালেন কিছু শারীরিক কসরত। কখনও তিনি ডালগুলোর উপর শুয়ে চারদিকে ঘুরলেন, আবার কখনও খেজুরের ডালের উপর শুয়ে দু’পা আকাশের দিকে দিয়ে রাখলেন, ততক্ষণে গাছের নীচে ও তার আশপাশে জড়ো হয় শত শত মানুষ। রাস্তায় থমকে যায় বহু গাড়িও। সবাই অবাক দৃষ্টিতে তার নামাজ আদায়ের দৃশ্য দেখছিলেন। অনেকে গাছের আশে পাশের ভবনের ছাদে উঠে মোবাইল ফোনে সেই চিত্র ধারণ করেন। কিছুক্ষণ গাছের ডগায় থাকার পর তরতরিয়ে আধা মিনিটেরও কম সময়ে নিচে নেমে আসেন। তিনি গাছটির ডগায় উঠেছিলেন একই ভাবে। নিচে তাকে পেয়েই ঘিরে ধরে কৌতুহলী মানুষ। সবাই তার কাছে দোয়া চান। কেউ কেউ স্বেচ্ছায় তাকে টাকা পয়সাও দেন। খাবারও নিয়ে আসেন তার জন্য। এরপর তিনি সেউজগাড়ি জামে মসজিদে আসরের নামাজ আদায় শেষে দ্রুত সেখান থেকে চলে যান।
এর আগে তার সাথে কথা হয় এই প্রতিবেদকেরও। প্রতিবেদককে তিনি জানান তার বাড়ি বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার বুড়িগঞ্জ ইউনিয়নের জামুরহাট বেলকুচা গ্রামে। বাবার নাম নীল চাঁন মন্ডল। তিনি বিবাহিত। তার অভাবের সংসার। শহরে কামারগাড়ি আন্ত: থানা বাস টার্মিনালের একজন শ্রমিক তিনি। কিছুদিন আরএস ও সুমি এন্টারপ্রাইজ নামের দু’টি বাসে হেলপার হিসাবে কাজও করেছেন। তিনি দাবি করেন, বছর দুয়েক আগে থেকে তার মধ্যে আধ্যাত্মিক শক্তিভর করে। দেখা হয় এক কামেল মানুষের সাথে। তিনিই তাকে এই পথ বাত্লে দেন। শিখিয়ে দেন পবিত্র কোরআন শরীফ থেকে তিনটি সুরা। এই সুরাগুলো পড়েই তিনি খেজুর গাছে ওঠেন বলে তিনি জানান। তিনি বলেন প্রথমে একটি সুরা পড়ে তিনি গাছের গোড়ায় পানি দেন। এরপর দ্বিতীয় সুরা পড়ে দ্রুত গাছে ওঠেন। তৃতীয় সুরা পড়ে তিনি গাছের মাথায় ওঠে বসেন। সেখানে গাছের ডগায় তিনি পবিত্র রমজান মাস শুরুর আগে মহান আল্লাহর উদ্দেশ্যে দু’রাকাত নফল নামাজ আদায় করেন। তবে এই অসাধ্য কিভাবে সাধন করলেন তিনি কিছুই জানেন না উল্লেখ করে তিনি দাবি করেন একটি অলৌকিক শক্তি তাকে সাহায্য করেছে। খেজুর গাছের পাতায় অসংখ্য কাঁটা থাকলেও তিনি অক্ষত অবস্থায় ছিলেন।
অনেকে তার এই কান্ড দেখে বিস্মিত হয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শী মেহেদী হাসান রাব্বী জানান তার বাবা রেজাউলের হোটেলের পাশে এই খেজুর গাছটি। তিনি বলেন সাধারণ মানুষের পক্ষে খেজুর গাছের মাথার উঠে নামাজ পড়া সম্ভব নয়। ঈমানদার মুসলামন বলেই তিনি এটা পেরেছেন। আল্লাহ তাকে সাহায্য করেছেন। তবে আরেক প্রত্যক্ষ দর্শী ফুয়াদ হাসান জানান লোকটি হয়তো অনেক দিন হলো এটা প্র্যাকটিস করছিলেন। আজকাল ডিসকভারী চ্যানেলে অবিশ্বাস্য অনেক কিছুই দেখা যায়। যা মানুষই করে।
এ ব্যাপারে বগুড়া বাইতুর রহমান সেন্ট্রাল মসজিদের ইমাম মনোয়ার হোসেন জানান গাছের উপর কেন, মসজিদেই তো নফল নামাজ পড়া যায়। তবে তার সাথে কোন অলৌকিক শক্তি আছে কিনা তা বলতে পারবেন না। বগুড়া স্টেডিয়াম ফাঁড়ির ইনচার্জ এস আই সাইদুল আলম জানান, তিনিও এ ঘটনার একজন প্রত্যক্ষদর্শী। তিনি নিচে দাঁড়িয়ে থেকে খেজুর গাছের উপর তার নামাজ পড়ার দৃশ্য দেখেছেন। সাধারণ মানুষের মত তিনিও বিস্মিত হয়েছেন। হয়তো কোন অলৌকিক শক্তি তার সঙ্গে আছে বরে তিনি মনে করছেন। শুধু একজন মানুষের পক্ষে এটা করা অসম্ভব বলে তার ধারণা।
মন্তব্য চালু নেই