খুলবে কবে ফেসবুক?

সামাজিক যোগাযোগের জনপ্রিয় মাধ্যম ফেসবুক, ভাইবার কবে নাগাদ খুলে দেয়া হচ্ছে তা নিয়েই চলছে জল্পনা-কল্পনা। ফেসবুক ব্যবহারকারীদের মধ্যে এনিয়ে উৎকণ্ঠার শেষ নেই।

জানতে চাইলে টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেছেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের পরই ফেসবুক, ভাইবারসহ যেসব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ রযেছে তা খুলে দেয়া হবে। কবে নাগাদ এগুলো খোলা হবে- সে বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলেননি তারানা হালিম।

সূত্র জানায়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে আলোচনা করে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ নিয়েই যথাসময়ে ফেসবুক খুলে দিতে বিটিআরসিকে নির্দেশ দেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তবে কতদিন বন্ধ থাকবে তা স্পষ্ট করেনি মন্ত্রণালয়।

এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ফেসবুক বন্ধ রাখায় সন্ত্রাসীরা বাধ্য হয়ে মোবাইল ফোনে আলাপ করছে। এতে সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করা সহজ হচ্ছে।

শিগগিরই ফেসবুক খুলে দেয়া হবে কি না জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা এটি নিয়ে বসবো। আলোচনা করে তারপর ব্যবস্থা নেব। আমি আগেই বলেছি ফেসবুক সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।

এদিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সবুজসংকেত পেলেই ফেসবুক, ভাইবার, হোয়াটসঅ্যাপসহ সামাজিক যোগাযোগের কয়েকটি মাধ্যম খুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

বিটিআরসির একটি সূত্র জানায়, সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশনা অনুসারে ফেসবুক বন্ধ করা হয়েছে। ওই পর্যায় থেকে নতুন নির্দেশনা না আসলে ফেসবুক খুলবে না।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের মধ্যে তরুণরাই বেশি। তারা অনেকেই এখন সেবাটি চালুর জন্য অপেক্ষা করছেন। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী জহির রায়হান বলেন, ‘নিরাপত্তার জন্য ফেসবুক সাময়িক বন্ধ হতেই পারে। কারণ দেশের নিরাপত্তা সবার আগে। কিন্তু কবে আবার এটি চালু হবে-সেটা জানতে পারলে ভালো হতো।’

সুমাইয়া নামে আরেক ফেসবুক ব্যবহারকারী বলেন, ‘বন্ধুদের ফেসবুকে মিস করছি। তারপরও ফেসবুক বন্ধ হলে যদি দেশের ভালো হয় তো হোক। কিন্তু এটি আবার চালু হবে কবে?’

ফেসবুক বন্ধ থাকায় অনলাইন ব্যবসায়ীরা বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। আলামিন নামে এক অনলাইন ব্যবসায়ী জানান, ‘ব্যবসা এখনও পুরোপুরি বুঝে উঠতে পারিনি। লাভও যা হচ্ছিল খুব বেশি নয়। যে কারণে নিজস্ব কোনো ওয়েবসাইট করে নেয়ার অবস্থা তৈরি হয়নি। কে জানতো এমন করে হঠাৎ বন্ধ হবে ফেসবুক? তা না হলে বিকল্প কিছু চিন্তা করা যেতো।’

আলামিনের মতো এমন প্রায় কয়েকশ উদ্যোক্তা আছেন যাদের ব্যবসার মূল প্লাটফর্মই ছিল ফেসবুক। ওয়েবসাইট খোলার মত অবস্থা যাদের নেই ফেসবুকের ওপর নির্ভরশীলতা তাদেরই বেশি। তাছাড়া ওয়েবসাইট যাদের আছে তাদেরও পণ্যের প্রচার ও প্রসারের জন্য ফেসবুকে আসতে হয়েছে। সেই হিসেবে, ই-কমার্সে মন দিয়েছেন এমন কেউ নেই যে, ফেসবুক বন্ধ হয়ে যাওয়া ক্ষতির মুখে পড়তে হয়নি তাদের।

গত ১৮ নভেম্বর যুদ্ধপরাধের দায়ে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী এবং জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের চূড়ান্ত রায় ঘোষণার পর আচমকাই বন্ধ করে দেয়া হয় ইন্টারনেট, ফেসবুক, ভাইবার, হোয়াটস অ্যাপসহ সামাজিক যোগাযোগের বেশ কয়েকটি মাধ্যম। ঘণ্টা খানেক বাদে ইন্টারনেট সেবা চালু হলেও ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো কবে খুলে দেয়া হবে তা এখনও নিশ্চিত করে বলতে পারেনি সরকারের সংশ্লিষ্টরা।



মন্তব্য চালু নেই