খুলনায় সেপটিক ট্যাংক থেকে বাবা-মেয়ের লাশ উদ্ধার

খুলনা নগরের একটি বাড়ির দুটি সেপটিক ট্যাংক থেকে পারভীন সুলতানা (২৬) নামের বেসরকারি ব্যাংকের এক কর্মকর্তা ও তাঁর বাবা ইলিয়াস হোসেনের (৭০) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

দুজনের গলায় ওড়না প্যাঁচানো ছিল। হত্যার আগে পারভীন ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে মনে করছে পুলিশ।

নগরের বুড়ো দরগা এলাকার তিন নম্বর দরগা রোডের এপি ভিলা থেকে গত শুক্রবার রাত ১১টার দিকে লাশ দুটি উদ্ধার করা হয়। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল শনিবার নগরের বসুপাড়া কবরস্থানে লাশ দুটি দাফন করা হয়েছে। এ ঘটনায় গতকাল বিকেলে নিহত পারভীনের বড় বোন নার্গিস মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। গতকাল বিকেল পর্যন্ত কাউকে আটক করা হয়নি। তবে সন্দেহভাজন হিসেবে তিন প্রতিবেশীকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ।

পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, তিন বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে ছোট পারভীন দুই বছর আগে এক্সিম ব্যাংকের কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন। গত ঈদুল আজহার পর মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার আশিকুর রহমানের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। আশিক ঢাকায় একটি ট্রাভেল এজেন্সিতে কর্মরত। চাকরির সুবাদে পারভীন খুলনায় বাবা ইলিয়াস হোসেনকে নিয়ে বড় বোন নার্গিসের বাড়িতে থাকতেন। ওই বাড়ির সেপটিক ট্যাংকের ভেতরেই লাশ দুটি পাওয়া যায়।

পারভীনের ভাই রেজাউল আলম বলেন, শুক্রবার রাতে বড় বোন নার্গিস ঢাকা থেকে ফোন করে তাঁকে জানান যে ছোট বোন পারভীন ও বাবা ইলিয়াসের ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। এরপর তিনি রাতেই তিন নম্বর দরগা রোডের ওই বাড়িতে গিয়ে দেখতে পান, মূল ফটকে তালা দেওয়া। এরপর সীমানাপ্রাচীর টপকে ভেতরে গিয়ে দেখেন, বাইরে একটা বাল্ব জ্বলছে। কিন্তু কাউকে খুঁজে পাননি তিনি। এরপর উঠানের দিকে যেতে যেতে সেপটিক ট্যাংকের ভেতরে একটি পা দেখতে পান। কাছে গিয়ে পাশাপাশি দুটি ট্যাংকে দুজনকে গলায় ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় দেখতে পান। খবর দিলে পুলিশ গিয়ে লাশ দুটি উদ্ধার করে। রেজাউল জানান, গত ঈদুল ফিতরের সময়ও বাড়িটিতে চুরি হয়েছিল। ওই ঘটনায় লবণচরা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করা হয়।

রেজাউল জানান, বড় বোনের ফোন পাওয়ার সময় তিনি পিকচার প্যালেস এলাকায় ছিলেন। তাঁর বাসা সোনাডাঙা এলাকায়। পারভীনের স্বামী আশিকুর রহমান বলেন, ঈদের পরপরই পারভীনকে তিনি ঢাকায় স্থায়ীভাবে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। অনেক আগে থেকেই এ বিষয়ে চেষ্টা করছিলেন। দুর্বৃত্তরা বাড়িটি থেকে ৪০-৫০ হাজার টাকা এবং ৫-৬ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে গেছে বলেও দাবি আশিকুরের।

হত্যাকারীদের আসল উদ্দেশ্য কী ছিল, তা নিয়ে সংশয়ে পুলিশ। লবণচরা থানার ওসি সরদার মোশারফ হোসেন বলেন, ডাকাতি শেষে দুজনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হতে পারে। দুটি লাশের গলায় শ্বাসরোধের চিহ্ন রয়েছে। পারভীনের লাশটি বিবস্ত্র অবস্থায় উদ্ধার করা হয় জানিয়ে তিনি বলেন, পারভীনকে হত্যার আগে ধর্ষণ করা হতে পারে। বাড়িটির বাইরে থেকে একটি বড় হাঁসুয়া উদ্ধার এবং একটি কক্ষের ভেতর থেকে সিগারেটের টুকরা আলামত হিসেবে জব্দ করা হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই