খালেদা পরাজিত সৈনিক: নৌমন্ত্রী শাজাহান খান
দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার আদালতে আত্মসমর্পণ ও গুলশান কার্যালয় ছেড়ে নিজ বাসভবন ফিরোজায় ফিরে যাওয়ার পর এক সমাবেশে নৌমন্ত্রী শাজাহান খান বলেছেন, ‘খালেদা জিয়া পরাজিত সৈনিকের মতো বাসায় গেছেন।’
সরকার পতনের আন্দোলনে নেমে বেগম জিয়ার কার্যালয়ে অবস্থান করার বিষয়টিকে প্রথম থেকেই ভালো চোখে দেখছিলেন না আওয়ামী লীগ নেতারা। এ জন্য বিভিন্ন সময়ে ক্ষমতাসীন নেতারা তার ব্যাপক সমালোচনাও করেছেন।
গ্রেপ্তারি পরোয়ানা মাথায় নিয়ে একমাসেরও বেশি সময় কার্যালয়ে অবস্থানের পর আজ রোববার আদালতে আত্মসমপর্ণ করে জামিন পান বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। জামিন নিয়ে তিন মাস পর তিনি পা রাখেন নিজ বাসা ফিরোজায়।
রোববার বিকেলে মানিকমিয়া এভিনিউয়ে শ্রমিক-কর্মচারী-পেশাজীবী-মুক্তিযোদ্ধা সমন্বয় পরিষদের গণপদযাত্রা পূর্ব এক সমাবেশে নৌমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সাহসের সঙ্গে লড়াই করেছি। এ লড়াইয়ের প্রথম ধাপে বিজয় হয়েছে। তিনি (খালেদা জিয়া) এখন পরাজিত সৈনিক।
মন্ত্রী বলেন, ‘খালেদা জিয়া অবরোধ ডেকেছিলেন। সেই অবরোধের মধ্যদিয়ে তিনি আজকে নিজেই গাড়ি নিয়ে গেছেন। তার অবরোধ তিনিও মানেন না, আর দেশের জনগণও মানে না।’
গত ১৬ ফেব্রুয়ারি এই শ্রমিক-কর্মচারী-পেশাজীবী-মুক্তিযোদ্ধা সমন্বয় পরিষদের ব্যানারে বিএনপিপ্রধানের কার্যালয় ঘেরাও করতে যাওয়া মিছিলে হাতবোমা বিস্ফোরণে ১১ জন আহত হন। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় খালেদার কার্যালয়ে তল্লাশির অনুমতি পেয়েছিল পুলিশ।
বেগম জিয়া যখনই ক্ষমতায় গেছেন তখনই শ্রমিকদের ওপর আঘাত করেছেন- এমন অভিযোগ করে শাজাহান খান বলেন, ‘মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বরকে দিয়ে চাঁদাবাজি করেছেন। তার হাত রক্তে রঞ্জিত। আপনার বিচার এই বাংলার মাটিতেই হবে।’
আওয়ামী লীগের এই নেতা আরো বলেন, ‘আমরা বীরের জাতি। আমরা কখনই মাথা নত করি না। আমরা কাপুরুষ নই। লড়াই করে যাবো। তার (খালেদার) সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথে থাকবো।’
জাসদ সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘খালেদার নেতৃত্বে দেশে আগুন সন্ত্রাস চালানো হয়েছে। সেই সন্ত্রাসে দেশে শতাধিক মানুষ অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা গেছেন। এই প্রত্যেকটি হত্যার জন্য তার বিচার হবে। সরকারের কাছে আমার ফরিয়াদ খালেদা আগুন সন্ত্রাস চালিয়ে যে হত্যাকাণ্ড চালিয়েছেন তার বিচার দাবি করছি।’
ইনু বলেন, ‘এই আগুনসন্ত্রাসী খালেদার রাজনীতি বাংলাদেশে চিরতরে বন্ধ করে দিতে হবে। এই আগুনসন্ত্রাসীদের কারণে দেশে জানমালের কোনো নিরাপত্তা নেই।’
সমাবেশ থেকে ছয় দফা কর্মসূচিও ঘোষণা করেন নৌ-মন্ত্রী। কর্মসূচিতে রয়েছে- ১২ এপ্রিল থেকে ২৯ এপ্রিল ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় জনপ্রতিনিধি, শ্রমিক, কর্মজীবী 22মুক্তিযোদ্ধাসহ সব শ্রেণি পেশার মানুষদের নিয়ে সভা সমাবেশ ও মতবিনিময় সভা, ৩০ এপ্রিল রাজধানীর শাহবাগে বিকেল ৪টায় মে দিবস উপলক্ষে জনসমাবেশ, পেট্রোলবোমা হামরায় নিহত শ্রমিক কর্মচারীদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন, ১লা মে সকল শ্রমজীবী,কর্মজীবী সংগঠনের আয়োজনে সংহতি প্রকাশ ও অংশগ্রহণ, মে ও জুন মাসে দেশব্যাপী জঙ্গিবাদ নির্মূল শান্তি ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জনতার অভিযাত্রা কর্মসূচি পালিত হবে, ১০ জুন ২০ দলীয় জোটের হরতাল ও অবরোধে পেট্রোল বোমায় মানুষ হত্যা, শিক্ষা ব্যবস্থা ও ব্যবসা বাণিজ্য ধ্বংসসহ নাশকতা ও সন্ত্রাসের প্রতিবাদে দেশব্যাপী ধিক্কার দিবস পালিত হবে, ৩০ জুন আদমজীতে শ্রমিক সমাবেশ।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন- সংসদ সদস্য শিরিন আকতার, ডা. এনামুর রহমান এনাম, সড়ক ও পরিবহন লীগের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের চেয়ারম্যান হেলাল মোরশেদ খান প্রমুখ।
গণপদযাত্রাটি মানিক মিয়া এভিনিউ থেকে শুরু হয়ে ফার্মগেট, কাওরানবাজার ও বাংলামোটর হয়ে শাহবাগে গিয়ে শেষ হয়।
মন্তব্য চালু নেই