খালেদার হুঁশিয়ারিতে বিএনপিতে আতঙ্ক, সংশয়!

সাংগঠনিক পুনর্গঠন করতে গিয়ে কেউ যেন পকেট কমিটি না করে নেতাদের এমন নির্দেশনা দিয়েছেন বিএনপি প্রধান বেগম খালেদা জিয়া। দলীয় প্রধানের এমন বক্তব্যকে নেতাকর্মীরা সাধুবাদ জানালেও এ নিয়ে আতঙ্কে আছেন সুবিধাবাদী নেতারা। তবে যথাযথ মনিটরিং না হলে নির্দেশনা বাস্তবায়ন নিয়ে আছে সংশয়ও।

যদিও প্রকাশ্যে খালেদা জিয়ার এমন বক্তব্যের ফলে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের কানে পানি যাবে এমন ধারণা দলের কর্মীদের।

সম্প্রতি দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে মঙ্গলবার দলের ৩৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় খালেদা জিয়া পুনর্গঠন কাজে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদেরপকেট কমিটি না করার নির্দেশ দেন।

তিনি বলেন, “আমরা ঘর গুছানো শুরু করেছি। দলের মধ্যে অনেকে আছেন যাদের বয়স হয়েছে তারা ঠিক মতো কাজ করতে পারেন না। আবার অনেকে আছেন যারা ঘরে বসে মোবাইলে বলে আমি এই করেছি সেই করেছি। কিন্তু তাদেরকে রাজপথে দেখা যায় না। আমি সব খবর জানি।”

এসময় তিনি কাদেরকে মূল্যায়ণ এবং কোন নেতাদের পদ না দিয়ে পেছনের সারিতে রাখতে হবে সেই নির্দেশনাও দেন।

খালেদা জিয়া যখন এই প্রসঙ্গে কথা বলছিলেন তখন নেতাকর্মীরা হাততালি দিয়ে একে স্বাগত জানায়। অন্যদিকে অনুষ্ঠানে উপস্থিত অনেক কেন্দ্রীয় নেতাকে বিমর্ষ দেখাচ্ছিল।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, খালেদা জিয়ার এমন বক্তব্যের পর কেন্দ্রীয় নেতাদের অনেকে নড়েচড়ে বসতে শুরু করেছেন। বলাবলি হচ্ছে, এখন আর আগের মতো কমিটি করে নিয়ে গেলে খালেদা জিয়ার অনুমোদন মিলবে না। সন্দেহ হলে তিনি যাচাই বাছাই করে অনুমোদন দিবেন।

এদিকে প্রকাশ্যে খালেদা জিয়ার এমন বক্তব্যে দায়িত্ব প্রাপ্ত নেতারা অনেকটা অবাক হয়েছেন বলে জানা গেছে।

বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য যিনি পুনর্গঠনের কাজে যুক্ত আছেন তিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, চেয়ারপারসন আগের চেয়ে অনেক কঠোর অবস্থানে আছেন। যে কোনো মূল্যে দলের সাংগঠনিক শক্তি ফিরিয়ে আনতে তিনি বদ্ধপরিকর। তবে বিষয়টি কারো খারাপ লাগলেও দলের জন্য ইতিবাচক। ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ণের সুযোগ বাড়বে।”

যদিও খালেদা জিয়ার এমন বক্তব্যের প্রতিফলন নিয়ে অনেকের মনে সংশয় আছে। নেতাকর্মীরা বলছেন, খালেদা জিয়া নিজে মনিটরিং করতে পারলে ফলাফল আসবে। আর তা না করতে পারলে সুবিধাবাদীরাই সুযোগ পাবে। তবে সেটা কতটা সম্ভব হবে তা সময়ই বলে দিবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অবঃ) মাহবুবুর রহমান বলেন, “চেয়ারপারসন নিজে দল পুনর্গঠনের কাজটি তদারকি করছেন। তিনি এই ধরণের বক্তব্য দিয়ে স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করতে সহকর্মীদের পরামর্শ দিয়েছেন। এটা অবশ্যই ইতিবাচক। এতে দল লাভবান হবে।”

প্রত্যেকটি দলে সুবিধাবাদী থাকে এমন দাবি করে তিনি বলেন, “সব সময়ই দলের মধ্যে কিছু সুবিধাবাদী থাকে তাদেরকে চিহ্নিত করতে হবে। এরা দলের জন্য ক্ষতিকারক। এদের জন্য যোগ্যরা স্থান পায় না।”



মন্তব্য চালু নেই