খালেদাকে অবরুদ্ধ করার নেপথ্যে

গুলশানে নিজের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বেশ কিছুক্ষণ অবরুদ্ধ থাকার পর পুলিশের ব্যারিকেড তুলে নেয়া হলেও শনিবার দিবাগত রাতটা সেখানেই কাটানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই তিনি বাসায় ফিরবেন। বাসায় গেলেই অবরুদ্ধ হতে পারেন এজন্য রাতে সেখানেই থেকে যাচ্ছেন এমন তথ্যই পাওয়া গেছে বিএনপির পক্ষ থেকে।

এদিকে গুলশানের অবস্থানরত গোয়েন্দ সূত্রে জানা গেছে, খালেদা জিয়া গুলশানের কার্যালয় থেকে সরাসরি বাসায় যেতে পারবেন। এতে কোনো বাধা নেই। তবে বাসা থেকে অন্যকোথাও যেতে পারবেন না। বাইরে যেতে চাইলে প্রয়োজনে পুলিশ বলপ্রয়োগ করবে। আর যদি তিনি বাসায় যেতে না চান তাহলে কার্যালয়েই থাকতে হবে।

একাধিক গোয়েন্দা সূত্র জানায়, খালেদা জিয়া শনিবার রাতে যখন তার গুলশান কার্যালয়ে আসেন তখনও নিরাপত্তা ব্যবস্থা অন্য সব সমযের মতই ছিল। কিন্তু হঠাৎ গোয়ান্দা কর্মকর্তারা জানতে পারেন যেকোনো অজুহাতে খালেদা জিয়া নয়াপল্টনে যেতে পারেন। সেখানে যেতে পারলেই তিনি সেখানে থেকে যাবেন এবং সেখানে থাকলে নেতাকর্মীরা সমাবেশ করার চেষ্টা করবে। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে। নেতাকর্মীদের তখন সামলানো যাবে না।

শনিবার দিবাগত রাত ১১টার দিকে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা খবর পান বিএনপি যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী নয়াপল্টন কার্যালয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে খালেদা জিয়া নয়াপল্টনে রিজভীকে দেখতে গিয়ে সেখানে থেকে যাবেন। এই খবর নিশ্চিত হওয়ার পরই চিকিৎসার কথা বলে রিজভীকে নয়াপল্টন থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। একই সঙ্গে খালেদা জিয়া যাতে নয়াপল্টন যেতে না পারেন সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্যরা তার গুলশান কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয়।

এসময় খালেদা জিয়া তার কার্যালয় থেকে বের হতে চাইলে পুলিশ মূল ফটক আটকে রাখে। অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন তিনি। এর এক ঘণ্টা পর রাত পৌনে ১টার দিকে পুলিশের যে গাড়ি ফটকের সামনের রাস্তা আটকে রাখা ছিলে তা সরিয়ে নেয়া হয়।

পুলিশের এক কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম তখন বলেন, উনি (খালেদা) বাসার যাওয়ার জন্য অলরেডি পারমিটেড।

রাত সাড়ে ৩টা পর্যন্ত খালেদা জিয়া তার গুলশান কার্যালয় থেকে বের হবেন সেই অপেক্ষায় সেখানেই অবস্থান করছে পুলিশ।

এদিকে খালেদা জিয়ার বাসভবনের সামনেও বালুর ট্রাকের আদলে পুলিশের দুটি পিকআপ ভ্যান রাখা হয়েছে। সেখানেও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

গুলশান কর্যালয় সূত্র জানায়, পুলিশ চাইছে খালেদা জিয়া যেন কার্যালয় থেকে বাসায় যান। সেখানে গেলেই তাকে গৃহবন্দী করা হবে। আর এ জন্যই আপাতত কার্যালয়ে অবস্থান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

জানা গেছে, রাত ১টা ২০ মিনিটের দিকে খালেদা জিয়ার বাসভবন থেকে তার নিত্য ব্যবহার্য বিভিন্ন সামগ্রী কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। সামগ্রীগুলো নিয়ে আসেন বাসভবনের একজন আয়া ও তিনজন নিরাপত্তাকর্মী। একটি কালো লাগেজ, একটি প্লাস্টিকের একটি ছোট ব্যাগ ও একটি শপিং ব্যাগে করে তার নিত্য ব্যবহার্য জিনিসপত্র কার্যালয়ের ভেতরে আনা হয়। এর মধ্যে নিত্য ব্যবহার্য জিনিসপত্রের পাশাপাশি শুকনো খাবার এবং ওষুধ-পথ্যও রয়েছে।

এছাড়া রাত পৌনে ৩টার দিকে তার বাসভবন থেকে পিকআপ ভ্যানে করে একটি খাট কার্যালয়ে আনা হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই