খানাখন্দে ভরা ঘাটাইল-সাগরদিঘী রাস্তার বেহাল দশা
ঘাটাইল সদরের সাথে ঘাটাইল-সাগরদিঘী যোগাযোগের প্রধান সড়কটির অবস্থা একেবারে বেহাল। দীর্ঘ দিন ধরে সড়কটি যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। । পেচারআটা, মাকড়াই, গাঞ্জানা, কুশারিয়া, ল্যাংড়াবাজার ইত্যাদি স্থানে গভীর খানাখন্দে ভরা। খানাখন্দের কারনে প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা। বিকল হচ্ছে যানবাহন আর দুর্ভোগ পোহাচ্ছে জনসাধারণ।
গতকাল ১৬ অক্টোবর (শুক্রবার) সরেজমিন গিয়ে সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রায় দুই যুগ আগে সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর এই রাস্তাটি নির্মাণ করে। ২০১২-২০১৩ অর্থ বছরে কারপেটিং ও পিছ ঢালাই করা হলেও বর্তমানে খানা খন্দে ভরে গেছে এ সড়কটি। সড়কটি অপ্রশস্ত হওয়ায় প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। প্রায় ৪০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এ সড়ক দিয়ে ধলাপাড়া, সন্ধানপুর, রসূলপুরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রায় ৫০টিরও অধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, শিশু, বৃদ্ধ প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করলেও মেরামতের ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি কর্তৃপক্ষ। এছাড়া অঞ্চলটি পাহাড়ি অঞ্চল থাকায় এখানে প্রায় সকল প্রকার কৃষি ফসল উৎপাদন হয়। বিশেষ করে ফল-শাকসবজি আনারস ও কলা চাষের জন্য খ্যাত এই অঞ্চলটি। যা ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে কৃষকরা। আর তাদের যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম হচ্ছে এই সড়কটি। তাই এই উপজেলার আঞ্চলিক সড়কগুলোর মধ্যে অন্যতম ব্যস্ততম সড়ক এটি। জরাজীর্ণ এ সড়কে বাস, ট্রাক, মাহিন্দ্র, ইজিবাইকসহ বিভিন্ন ভারি যানবাহন থেকে শুরু করে প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করে।
ঘাটাইলের ধলাপাড়া বাজার বাসস্ট্যান্ডে কথা হয় সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক সাথে আব্দুস সালাম এর তিনি জানান, প্রায় প্রতিদিনই আমাদের গাড়ি নষ্ট হয়। চাকা পাংচার হয়, এক্সেল ভেঙে যায়। বড় গাড়ির সাথে মাঝেমধ্যেই অটোরিকশার ধাক্কা লাগে। সপ্তাহে কমপে দুই-তিনবার গাড়ি গ্যারেজে নিতে হয়। ফলে যা আয় করি তার বেশির ভাগই গ্যারেজে চলে যায়। তিনি বলেন, রোগী নিয়ে হাসপাতালে যেতেও খুব সমস্যা হয়; বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে। এ জন্য দ্রুত রাস্তাটি দু’পাশে বাড়ানো দরকার এবং খুব দ্রুত সংস্কারের প্রয়োজন। তা না হলে মেরামত করেও খুব বেশি লাভ হবে না।
সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক জহিরুল ইসলাম জানান, অনেক সময় রাস্তার গর্ত পাশ কাটিয়ে চলার সময় এক অটোরিকশার সাথে অপর অটোরিকশার ধাক্কা লাগে। তা ছাড়া লোড গাড়ি কাঁচা রাস্তায় নামিয়ে সাইড নিতে পারে না। মাকড়াই এলাকার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, কমপে তিন-চার বছর ধরে রাস্তাটির এই খারাপ অবস্থা দেখতেছি। এতে আমাদের সবারই খুব সমস্যা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী ফজলুল কবির সাংবাদিকদের বলেন, গুনগত মানে পাতলা ও বন্ডিং (বিটুমিনের কংক্রিট ধারনক্ষমতা) কম ব্যবহারের কারণে গরমের মৌসুমে এ ধরনের নিম্নমানের বিটুমিন ব্যবহারে তৈরি সড়কগুলোর বেহাল অবস্থা হয়। তিনি আরো বলেন বিটুমিন গলানোর কাজে জুটের ব্যবহার ও তাপমাত্রা তারতম্যের কারণে ১ থেকে ২ বছরের মধ্য পিচগুলো উঠে গিয়ে রাস্তায় খানা খন্দের সৃষ্টি হয়ে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। তিনি রাস্তা তৈরিতে নিম্নমানের বিটুমিন ব্যবহার থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেন।
মন্তব্য চালু নেই