ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রেখে বেরোবিতে নিয়োগ পরীক্ষা

বেরোবি প্রতিনিধি : রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের(বেরোবি) একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রেখে পুলিশের উপ-পরিদর্শক(এসআই) পদে তিন দিনব্যাপী নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে বৃহস্পতিবার। নিয়োগ পরীক্ষায় কারণ দেখিয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ইবরাহীম কবীর স্বাক্ষরিত এক নোটিশে এই নির্দেশ দেয়া হয়। এদিকে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্র জানায়, বাংলাদেশ পুলিশের ২০১৬ সালের বহিরাগত ক্যাডেট উপ-পরিদর্শক (এসআই) নিয়োগ লিখিত পরীক্ষার কেন্দ্র হিসেবে বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন এবং ক্যাফেটরিয়া ভবন ব্যবহার করা হবে। পরীক্ষায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার স্বার্থেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

এদিকে একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তে পূর্ব নির্ধারিত ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ রেখেছে কয়েকটি বিভাগ। পরীক্ষা বন্ধের সিদ্ধান্তে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় ওঠে। পরীক্ষা স্থগিতের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০১২-১৩ শিক্ষার্থীরা জানান, এমনিতেই জটের কারণে ২০১৫ সালের পরীক্ষা ২০১৭ সালে দিতে হচ্ছে। তারপরও পরীক্ষা বন্ধ রাখায় সিদ্ধান্ত আমাদের প্রতি একধরণের অত্যাচার।

বিশ্বস্থ সূত্রে জানা যায়, গত ২৬ জানুয়ারি কর্মকর্তাদের অসহযোগিতার মধ্যে অনুষ্ঠিত একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় উপ-পরিদর্শক (এসআই) নিয়োগ লিখিত পরীক্ষার বিষয়টি উপস্থাপন করা হলে তা সমস্বরে প্রত্যাখ্যান করেন সভার সদস্যবৃন্দ। এরপর ২৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভাতেও বিষয়টি উপস্থাপন করা হয়নি। পরে সিন্ডিকেট সদস্যদের ফোন দিয়ে অনুমতি নেন উপাচার্য।

বিষয়টি জানতে চাইলে সিন্ডিকেট সদস্য ও অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো: মোরশেদ হোসেন বলেন, বিষয়টি আমাকে টেলিফোনে জানানো হয়েছে। সিন্ডিকেটের অন্যতম সদস্য ও পুলিশের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তার অনুরোধেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তাবিউর রহমান প্রধান বলেন, আমরা অনেক কষ্ট করে পরীক্ষার ব্যবস্থা করি। পরীক্ষা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ভালো কিছু নয়।

এ ব্যাপারে কথা বললে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. তুহিন ওয়াদুদ জানান, শিক্ষক স্বল্পতাসহ বিভিন্ন কারণে বিশ্ববিদ্যালয়টি পিছিয়ে রয়েছে। তাই পরবর্তীতে নিয়োগ পরীক্ষা বিশ্ববিদ্যালয়ে না নিতে প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাই।

বিষয়টি নিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. একে এম নূর-উন-নবীর সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, পুলিশ প্রশাসন থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে নিয়োগ পরীক্ষা এখানে নেয়ার ব্যাপারে জানালে প্রথমে দ্বিমত পোষণ করি। পরে শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে এবং সিন্ডিকেট সদস্যের অনুরোধেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই