ক্রিকেট ছেড়ে বিচিত্র পেশা বেছে নিয়েছেন এই ক্রিকেটাররা

ক্রিকেট থেকে অবসরের পর অন্য পেশায় যোগ দিয়েছেন, এমন ক্রিকেটারের সংখ্যা বিরল নয়। অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফের মতো কেউ বেছে নিয়েছেন পেশাদার বক্সিং, ইমরান খানের মতো কেউ আবার বেছে নিয়েছেন রাজনীতি। কেউ আবার খেলার সূত্রে পাওয়া পুলিশ বা রেলের চাকরি করছেন। বেশ কয়েক জন ক্রিকেটার আছেন, যাঁরা অবসরের পর অদ্ভুত সব পেশা বেছে নিয়েছেন। এঁদের মধ্যে কেউ আজ ট্যাক্সিচালক, তো কেউ ব্যান্ডের লিড গিটারিস্ট। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক এমনই কয়েক জন ক্রিকেটারকে, যাঁরা অবসরের পর বিচিত্র পেশা বেছে নিয়েছেন।

আর্থার মেইলি: অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ২১ টেস্টে ৯৯ উইকেট পাওয়া মেইলি ক্রিকেট থেকে অবসরের পর কয়েক বছর সাংবাদিকতা করেন। পরে সিডনিতে একটি মাংসের দোকান খোলেন।

মাইক ব্রিয়ারলি: ব্যাটসম্যান ব্রিয়ারলির চেয়ে অধিনায়ক ব্রিয়ারলিকেই বেশি মনে রেখেছে ক্রিকেটবিশ্ব। যে ৩১ টেস্টে ইংল্যান্ডকে নেতৃত্বে দিয়েছেন, তার মধ্যে দল জিতেছে ১৭টিতে, হেরেছে চারটিতে। এ হেন ব্রিয়ারলি ক্রিকেট ছেড়ে লেখক এবং সাইকো অ্যানালিস্টের কাজ নেন। তিনি ব্রিটিশ সাইকো অ্যানালিটিকাল সোসাইটির প্রেসিডেন্ট।

অ্যাডাম হোলিওক: এক সময়ে ইংল্যান্ডের ওয়ান ডে অধিনায়ক অবসরের পর বহু কোটির সম্পত্তি মামলায় জড়িয়ে সর্বস্বান্ত হন। দ্রুত রোজগারের আশায় ভয়ঙ্কর কেজ ফাইটিংকে পেশা হিসাবে বেছে নেন অ্যাডাম।

অ্যান্ড্রু ফ্লিন্টফ: বোথাম পরবর্তী ইংল্যান্ডের সেরা অলরাউন্ডার ফ্লিন্টফের কেরিয়ার ছোট হয়ে গিয়েছিল পরপর কয়েকটি চোটের কারণে। ক্রিকেট থেকে অবসরের পর পেশাদার বক্সিং শুরু করেন তিনি। ম্যানচেস্টারে তাঁর প্রথম ম্যাচে প্রতিপক্ষকে হারিয়ে নজরও কাড়েন ফ্লিন্টফ।

ডেভিড লরেন্স: ইংল্যান্ডের হয়ে মাত্র পাঁচটি টেস্ট খেলার পর এক মারাত্মক দুর্ঘটনায় ক্রিকেট কেরিয়ার শেষ হয়ে যায় লরেন্সের। দমে না গিয়ে শরীরচর্চা শুরু করেন তিনি। ৫০-এর লরেন্স এখন পেশাদার বডিবিল্ডার।

কার্টলে অ্যামব্রোজ: ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেস স্বর্ণযুগের শেষ সৈনিক বলা হয় কার্টলে অ্যামব্রোজকে। কোর্টনি ওয়ালশের সঙ্গে জুটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বহু হারা ম্যাচ জিতিয়েছেন তিনি। ২০০০ সালে ক্রিকেট থেকে অবসরের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের জনপ্রিয় ব্যান্ড ‘ড্রেড অ্যান্ড দ্য ব্যাল্ডহেড’এর সঙ্গে যুক্ত হন তিনি। গত ১৬ বছর ধরে ওই ব্যান্ডের লিড বেস গিটারিস্ট অ্যামব্রোজ।

ক্রিস লিউয়িস: একটা সময় তাঁকে ইংল্যান্ডের পরবর্তী ইয়ান বোথাম বলা হত। ৩২টি টেস্টে ৯৩টি উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। লোয়ার মিডলে ব্যাটিংও করতেন বেশ ভালই। ক্রিকেট থেকে হঠাত্ অবসরের পর অপরাধ জগতের সঙ্গে জড়িয়ে যান ক্রিস। বেশ কয়েক বছর ধরেই পুলিশের নজরে ছিলেন। ২০০৯ সলে মাদক চোরাচালানের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। দোষ প্রমাণ হওয়ায় ১৩ বছরের জেল হয় লিউয়িসের।

ক্রিস ওল্ড: ১৯৭২ থেকে ১৯৮০ পর্যন্ত ইংল্যান্ড বোলিং আক্রমণের অন্যাতম প্রধান মুখ ছিলেন ওল্ড। টেস্টে তাঁর প্রথম শিকার ছিলেন সুনীল গাওস্কর। অবসরের পর একটি রেস্তোরাঁ খোলেন ওল্ড। কর্নওয়েলের সেই রেস্তোরাঁ ওল্ডের হাতে তৈরি মাছ এবং চিপসের জন্য বিখ্যাত ছিল।

ডেভিড শেপার্ড: ইংল্যান্ডের হয়ে ২২টি টেস্ট খেলেছিলেন এই ব্যাটসম্যান। তাঁকে বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান বলা হত। ২৩০টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে ৪৫টি শতরান করা শেপার্ড ক্রিকেট থেকে অবসরের পর যাজক হন। ২০০৫ সালে ক্যান্সারে মৃত্যু হয় তাঁর।

আরশাদ খান: পাকিস্তানের হয়ে বেশ কয়েক বছর ক্রিকেট খেলেছেন এই অফ স্পিনার। এশিয়ান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপজয়ী পাক দলের সদস্য ছিলেন তিনি। ২০০১ সাল পর্যন্ত দলের নিয়মিত সদস্য থাকার পর বাদ পড়েন তিনি। বছর চারেক পরে ফের এক দিনের দলে ডাক পেলেও ছাপ ফেলতে পারেননি। অবসরের পর অস্ট্রেলিয়া পাড়ি দেন আর্শাদ। সেখানে এখন ট্যাক্সি চালান তিনি।-আনন্দবাজার



মন্তব্য চালু নেই