কোন দেশে কীভাবে বিয়ে হয়

বিয়ে শুধু দু’টি মানুষের মধ্যে নয়, দু’টি পরিবারের মধ্যেও নতুন সম্পর্কের সূচনা করে৷
নিজের মনের মানুষকে পাওয়ার মধ্যদিয়ে নতুন জীবন শুরু হয়। তবে বিয়ের আগে প্রেম বা বন্ধুত্ব থাকলে ভুল বোঝাবুঝির সুযোগ থাকে কম, দাম্পত্যজীবনও হয় মধুময়৷ পরবর্তীতে উপহার নির্বাচনেও অসুবিধা হয় না৷

জার্মানি বা ইউরোপের দেশগুলোতে সাধারণত ভালোভাবে পরিচয়ের পরই মানুষ বিয়ে করে বা অনেকে না করেও একসাথে বসবাস করে৷ তবে বিয়ের আগে একে-অপরের পছন্দ-অপছন্দ, সখ, ইচ্ছে– এসব খুব ভালো করে জেনে নিয়েই সারাজীবন একসাথে থাকার প্রতিশ্রুতি দেয়া বা বিয়ের মতো বড় সিদ্ধান্তটি নেয়া উচিত বলে মনে করেন জার্মানির পারিবারিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ ব্যার্নহার্ড ভল্ফ৷

মুসলিম বিয়ে

সাক্ষীর উপস্থিতিতে বিয়ে পড়ানো হয়৷ দেনমোহর ধার্য করা হয় ছেলের আর্থিক সামর্থ্য ও অবস্থান অনুযায়ী৷ বিয়ের সময় একজন উকিল থাকেন৷ তিনি প্রথমে কনেকে জিজ্ঞাসা করেন, সে বিয়েতে রাজি আছে কি-না৷ কনে রাজি থাকলে বরকেও একই প্রশ্ন করা হয়৷ এরপর দোয়া কালাম করে সম্পন্ন করা হয় বিয়ে৷

হিন্দু বিয়ে 

বিয়ে হয় বেশ কিছু আচার-অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে৷ প্রচলিতনিয়মে প্রথমে বাগদান পর্ব এবং সেখানেই পাটিপত্রে বর-কনের স্বাক্ষর৷ তারপর একে একে আশীর্বাদ, গায়ে হলুদ, তারপর বিয়ের আসর৷ সেখানে দু’টি পর্ব– সাজ বিয়ে ও বাসি বিয়ে৷

সাজ বিয়েতে সাতবার প্রদক্ষিণ শেষে কনে আর বরকে বরণ করে নেয়া হয়৷ হয় মালাবদল৷ আর বাসি বিয়েতে দেবদেবীর অর্চনা শেষে কনের কপালে সিঁদুর দেয় বর৷ তারপর উভয় মিলে সাতবার অগ্নি দেবতাকে প্রদক্ষিণ করেন৷

খ্রিষ্টান বিয়ে

বিয়ের তিন সপ্তাহ আগে পুরোহিতের কাছে বর-কনে নাম লেখান৷ এরপর ‘বান প্রকাশ’ অনুষ্ঠানে বিয়ের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়৷ বিয়ের আগ পর্যন্ত অপশক্তির নজর থেকে রক্ষার জন্য দুজনকে ‘রোজারি মালা’ পরতে হয়৷

বিয়ের দিন ভোরে কনের বাড়ি গিয়ে তাঁকে নিয়ে আসা হয়৷ এসময় বরপক্ষ থেকে দেয়া পয়সা ঘরের মধ্যে ছুড়ে দেন কনে৷ এর অর্থ, বাড়ি ছেড়ে গেলেও, বাড়ির লক্ষী ঘর থেকে চলে যাচ্ছে না৷ এরপর গির্জায় বর-কনে দু’জনের মধ্যে আংটিবদল করা হয়৷

বৌদ্ধ বিয়ে

পাত্র-পাত্রী নির্বাচনের পর সামাজিকভাবে সবাইকে জানিয়ে তারিখ ঠিক করে বৌদ্ধবিহারে পাত্র-পাত্রীকে নিয়ে যাওয়া হয়৷ সেখানে মঙ্গল প্রদীপ জ্বালিয়ে বুদ্ধের পূজা করা হয়৷ ত্রি-স্বরণ পঞ্চশীল পূজার মধ্য দিয়ে বৌদ্ধ ভিক্ষুকের আশীর্বাদ গ্রহণের মাধ্যমে বিয়ে সম্পন্ন হয়৷ এরপর একজন গৃহী তাদের সামাজিক অনুশাসন প্রদান করে৷

জার্মানি বিয়ে

প্রথমে কোর্টে ছোট্ট একটি আয়োজনের মাধ্যমে বিয়েটা সেরে ফেলেন বর-কনেরা৷ পরে অন্য এক সময়ে গির্জায় হয় বিয়ের অনুষ্ঠান৷ গির্জার অনুষ্ঠানের আগের রাতে কনের বাড়ির সামনে সেরামিকের বিভিন্ন জিনিস ভাঙেন বর-কনের পরিবারের সদস্যরা৷ এরপর সেটা পরিষ্কার করেন শুধু বর আর কনে৷ এর মাধ্যমে নবদম্পতিকে দলবদ্ধভাবে কাজ করার প্রয়োজনীয়তা বিষয়ে দীক্ষা দেয়া হয়৷

টিউনিশিয়া বিয়ে

কনের এই পোশাকটির নাম ‘কিসওয়া’৷ হীরা আর মুক্তা দিয়ে সাজানো বিয়ের এই পোশাকটি ব্যয়বহুল হওয়ায় অনেকেই সেটা একদিনের জন্য ধার করে৷ শুধু এক রাতের জন্য ভাড়া হিসেবে দিতে হয় ২৫ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত!

দক্ষিণ কোরিয়া বিয়ে

দক্ষিণ কোরিয়ায় বিয়ের ক্ষেত্রে এখনো প্রচলিত নিয়মগুলো পালন করা হলেও তরুণরা ইদানীং পশ্চিমা ধাঁচের দিকে ঝুঁকছে৷ সে অনুযায়ী তরুণীরা সাদা গাউন আর তরুণরা কালো জ্যাকেট পরে বিয়ে করছেন৷ তথ্যসূত্র : ডয়চে ভেলে



মন্তব্য চালু নেই