আজ না.গঞ্জ-৫ উপনির্বাচন
কে পরবে জয়ের মুকুট
আজ বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের উপনির্বাচন। প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জাতীয় পার্টি (জাপা) মনোনীত সেলিম ওসমান, কৃষক শ্রমিক জনতালীগ মনোনীত শফিকুল ইসলাম দেলোয়ার ও স্বতন্ত্র হিসেবে রয়েছেন এস এম আকরাম ও অ্যাডভোকেট মামুন সিরাজুল মজিদ।
নির্বাচনে চারজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও মূল লড়াইটা হবে জাপা প্রার্থী ও স্বতন্ত্র এস এম আকরামের মধ্যে।
গণরায়ে কে পরবে বিজয়ের মুকুট? এ প্রশ্ন নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা, গুঞ্জ। বন্দর নগরীর ঐতিহ্যবাহী ওসমান পরিবারের সদ্য প্রয়াত সংসদ সদস্য নাসিম ওসমানের এ আসনটি ধরে রাখতে প্রার্থী হয়েছেন তারই ছোট ভাই সেলিম ওসমান। রাজনীতি না করলেও জাপায় যোগ দেয়ার পর পেয়েছেন দলের সমর্থন। হয়েছেন লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী।
সেলিম ওসমানের স্লোগান উন্নয়নের। তিনি নির্বাচিত হতে পারলে নারায়ণগঞ্জে ব্যাপক শিল্পায়ন করবেন। বেকারদের চাকরি পেতে সহায়তা করবেন। কর্মসংস্থানসহ নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। তার পক্ষে মাঠে নেমেছেন ছোট ভাই এমপি শামীম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের এমপি লিয়াকত হোসেন খোকাসহ আওয়ামী লীগ, ব্যবসায়ী ও বিএনপির একটি বড় অংশ।
অন্যদিকে, নারায়ণগঞ্জে সাম্প্রতিক সাত খুনসহ, মেধাবী ছাত্র ত্বকী হত্যা, বিভিন্ন সময়ে খুন গুম আর অপহরণের ইস্যুতে সন্ত্রাসের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করেছেন একই আসনের সাবেক এমপি এস এম আকরাম। তিনি ২০০৩ সালের নারায়ণগঞ্জ পৌরসভা ও ২০১১ সালের নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে মেয়র পদে সেলিনা হায়াৎ আইভীর পক্ষে নির্বাচন করেছেন।
এরই মধ্যে সন্ত্রাসের বিপক্ষে স্লোগান ও লিফলেট বিতরণ করতে গিয়ে জাতীয় পার্টির লোকজনদের প্রহারের শিকার হয়েছেন ওসমান পরিবারের ঘোর বিরোধীতা করা সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বি সহ অন্যরা।
বিএনপি এ নির্বাচন বয়কট ও বর্জন করলেও দলের শীর্ষ নেতারা বলছেন, তারা সন্ত্রাস ও গডফাদারদের বিপক্ষে। এ বক্তব্য ওসমান পরিবারের বিপক্ষেই যাচ্ছে।
অপরদিকে, জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে প্রয়াত এমপি নাসিম ওসমান সম্পর্কে বক্তব্য দিতে গিয়ে ওসমান পরিবারের গুণকীর্তন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার এ বক্তব্যের পর অনেকটাই বদলে যায় নারায়ণগঞ্জের পরিস্থিতি।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা হতে শুরু হবে ভোট গ্রহণ। চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। শীতলক্ষ্যা নদীর পূর্ব ও পশ্চিম পাড়ের ৩ লাখ ৪২ হাজার ৪০৫ জন ভোটার আজ নির্বাচিত করবেন তাদের প্রতিনিধি। তারাই পরাবেন পছন্দের প্রার্থীকে জয়ের মুকুট।
সরকারদলীয় নেতাকর্মীরা আশা করছেন, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থী না থাকায় ভোটাররা মহাজোটের প্রার্থী লাঙ্গল প্রতীকেই ভোট দেবেন।
অন্যদিকে, সাম্প্রতিক সময়ে নারায়ণগঞ্জে খুন, গুম, অপহরণ, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসে অতিষ্ঠ নগরবাসীর মনে শান্তি ফিরিয়ে আনতে ও নারায়ণগঞ্জের কলঙ্ক মুছে দিতে ভোটাররা এসএম আকরামের আনারস প্রতীকে ভোট দেবেন বলে প্রত্যাশা আকরামপন্থিদের।
সেলিম ওসমানের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন এস এম আকরাম। তিনি বলেন, ‘আমি সব সময়ে সন্ত্রাসীদের বিপক্ষে। নারায়ণগঞ্জবাসীও খুন, সন্ত্রাস, খুমের বিপক্ষে। নারায়ণগঞ্জবাসীর মনোভাবের প্রেক্ষিতেই প্রার্থী হয়েছি। কিন্তু সেলিম ওসমানের লোকজন যেভাবে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করেছে। তাতে আমার আশঙ্কা ভোটাররা তাদের ভোট দিতে পারবে না।’
অন্যদিকে সেলিম ওসমান বলেন, ‘শেখ হাসিনা আমাকে নারায়ণগঞ্জে শান্তি প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব দিয়েছেন। যদি নারায়ণগঞ্জের মানুষ আমাকে সহযোগিতা করে, তাহলে আমি নারায়ণগঞ্জকে একটি শান্তির মডেল তৈরি করে শেখ হাসিনাকে উপহার দিবো। এ কারণে দল মত নির্বিশেষে সবাই আমাকে সমর্থন দিচ্ছে।’
প্রসঙ্গত, গত ৩০ এপ্রিল ভারতের একটি হাসপাতালে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম নাসিম ওসমান মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুতে আসনটি শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশিন। সে মোতাবেক আগামীকাল ২৬ জুন ভোটগ্রহণ হবে।
মন্তব্য চালু নেই