কুড়িগ্রামে পশুর হাটে দাম পড়তির দিকে

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি : কুড়িগ্রামে জমে ওঠেনি কোরবাণীর পশুর হাট। ঈদ উপলক্ষে দেদারসে ভারতীয় গরু ঢুকে পড়ায় উৎকণ্ঠায় রয়েছেন খামারীরা। ক্রেতাদের কাছে ক্রমান্বয়ে দেশীয় গরুর চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় খামারীদের পাশাপাশি বাড়ী বাড়ী গরু পালনের আগ্রহের ফলে এবার গরুর দাম পড়তির দিকে। ভাল দামের জন্য হাটে আশানুরুপ মূল্য না পাওয়ায় ভড়কে গেছেন খামারীরা। ফলে লোকসানের আতংকে রয়েছেন।

জেলা প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, জেলায় ১২ হাজার ৪৮৯ গরুর খামারী রয়েছেন। চলতি বছর প্রায় ৫৯ হাজার ২২৯টি গরু মোটাতাজাকরণ করা হয়েছে। এসব গরু কোরবাণীর ঈদকে ঘিরে জেলার ৯ উপজেলার ৩৫টি গরুর হাটে বিক্রি করার পাশাপাশি চলে যেতে পারে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। এছাড়াও ব্যক্তিগত পর্যায়ে করা হচ্ছে গরু মোটাতাজাকরণ। ফলে সংখ্যাটা লাখের কাছাকাছি চলে যাবে। এই বিশাল সংখ্যক গরুর পাশাপাশি ভারতীয় গরু মিলে এবার পশুর হাটগুলি জমে উঠলেও এখন পর্যন্ত চাহিদা মূল্য বাড়েনি।

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার কামারপাড়া গ্রামের হাবিবুর রহমান জানান, ৪ মাস আগে ২২ লাখ টাকায় ২৫টি গরু কিনে খামার গড়ে তোলেন। এই চার মাসে খামারে গরুর খাবার ও পরিচর্যায় খরচ হয়েছে আরো ৮ লাখ টাকা। এখন ক্রেতা ১৯টি গরুর দাম বলছেন ৩২ লাখ। এতে প্রায় ২ লাখ লাভ হচ্ছে হাবিবুরের। কিন্ত হাবিবুরের আশা ছিল ১০ লাখ টাকা লাভ করার।

সদর উপজেলার যাত্রাপুর এলাকার খামারী শাহাজামাল জানান, একেকটি গরুর পিছনে প্রচুর ব্যয় হচ্ছে। দেশীয় গরুর চাহিদার কথা বিবেচনা করে খামারে উৎসাহী হন তিনি। গরুগুলোকে প্রতিদিন খড়, খৈল, ভুসির পাশাপাশি বাজারের মোটা-তাজাকরণ বিভিন্ন খাবার খাওয়ানো হচ্ছে। এতে অনেক লোকবল দরকার হয়। ফলে খামারগুলোতে তৈরি হয়েছে কর্মসংস্থানের নতুন সুযোগ। তবে, অত্যাধিকহারে ভারতীয় গরু প্রবেশের ফলে আশংকায় আছেন খামারীরা। কিছু ব্যবসায়ী দাম যাচাইয়ের জন্য কয়েকটি হাট ঘুরে দেখেছেন দাম এখনো পড়তির দিকে।

সদরের খামার ব্যবসায়ী সুজিত জানান, উন্নয়নে পিছিয়ে পড়া জেলার প্রান্তিক জনগোষ্ঠির মধ্যে খামার স্থাপনে সরকারের আরো সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো দরকার। তবে এই খামারী মনে করেন, শুরুতে দালালরা গরু কেনার ফলে দাম কিছুটা কম হয়। পড়ে এই দালালরাই গরুর দাম বাড়ানোর ফলে হঠাৎ করে গরুর মূল্য আকাশচুম্বি হয়ে ওঠে।

এদিকে কিছু সংখ্যক খামারী কম সময়ে অধিক মুনাফার আশায় গরু মোটাতাজাকরণে ক্ষতিকারক উপাদান ব্যবহার করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। হাট-বাজার থেকে তারা স্ট্ররয়েড গ্রুপের রোডপক্সান, ডেকাসন, স্টেরণ ব্যবহার করছেন। খামারীদের কাছে এটি পামবড়ি নামে পরিাচত।

এ ব্যাপারে জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. দীপক রঞ্জন রায় জানান, জেলায় পশু খামার গড়ে তোলায় লোকজনের মধ্যে আগ্রহ বাড়ছে। দেশীয়ভাবে গরু মোটাতাজাকরণের ফলে জেলার চাহিদা পূরণের পাশাপাশি অন্যান্য জেলায় বিক্রির সুযোগ তৈরী হচ্ছে। যাতে খামারীরা অসাধূ উপায়ে গরু মোটাতাজাকরণ করতে না পারে, এজন্য ক্ষতির দিকগুলো বিবেচনা করে তাদেরকে প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই