কুড়িগ্রামে অপহৃত শিশুকে ১৭ ঘন্টা পর সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ থেকে উদ্ধার
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি : কুড়িগ্রামে অপহরণের ১৭ ঘন্টাপর ১৩মাস বয়সী শিশু আল আমিন তৌফিককে পুলিশ উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ জেলার কামারখন্দ উপজেলার চৌবাড়ী এলাকা থেকে। পুলিশি বৃহস্পতিবার বিকেলে অপহ্নত শিশুটিকে উদ্ধার করে চাচা কবিরের জিম্মায় রেখেছে। অপহৃত শিশুটির পিতা আতাউর করিম স্বপনের খালাতো বোন জান্নাতুল ফেরদৌস রানী (২০) এ অপহরণের মুলহোতা। অপহরণ চক্রের হোতাদের গ্রেপ্তার এবং অপহৃত শিশুটিকে কুড়িগ্রামে আনতে কুড়িগ্রাম সদর থানার অফিসার ইনচার্জের (তদন্ত) নেতৃত্বে পুলিশের একটি বিশেষ টিম সিরাজগঞ্জের পথে রওনা হয়েছে।
কুড়িগ্রাম সদর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুস সোবহান শিশুটি উদ্ধার হওয়ার কথা নিশ্চিত করে বলেন, সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে অবস্থান করছে। কুড়িগ্রাম থানা পুলিশ পরিবারের লোকজন ও আসামী জান্নাতুল ফেরদৌস রানীকে সঙ্গে নিয়ে পুলিশ এখন সিরাজগঞ্জের পথে।
তিনি আরো জানান, চাঞ্চল্যকর শিশু অপহরণের ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার রাত ৮টায়। কুড়িগ্রাম শহরের মিস্ত্রীপাড়া এলাকার ব্যবসায়ী আতাউর করিম স্বপনের দ্বিতীয় সন্তান তৌফিক (১৩মাস) রাতে নিজ বাসা থেকে অপহৃত হয়। অনেকে দেখেছেন বোরখা পড়া এক মহিলা ঘুমন্ত এক শিশুকে নিয়ে যাচ্ছে। এরপর তাঁর কোন অদিস মেলেনি। এরপর খোঁজা-খুঁজি করে হদিস না পেয়ে রাত সাড়ে ৯টার দিকে পুলিশ খবর পায়। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করে অপহৃত শিশুটির পিতা আতাউর করিম স্বপনের খালাতো বোন জান্নাতুল ফেরদৌস রানীকে সন্দেহ করে। তাকে থানায় নিয়ে এসে রাত ভর জিজ্ঞাসবাদ করার পর ভোর রাতে রাণী ঘটনার সাথে নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে। রাণী পুলিশকে জানান, সিরাজগঞ্জের তার বান্ধবী ঐশী’র মাধ্যমে শিশুটিকে রাতেই পাচার করেদেয়। এভাবেই বের হয়ে আসে থলের বেড়াল। এরপর পুলিশ কৌশলে ফাঁদ পাতে ঐশীকে ধরতে। অবস্থা বেগতিক দেখে বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে অপহৃত শিশু তৌফিককে কামারখন্দ উপজেলার চৌবাড়ী বাজারের একটি দোকানের সামন রেখে পালিয়ে যায়। পরে স্বপনের চাচাত ভাই ঐ এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা কবির শিশুটিকে উদ্ধার করে নিজ বাড়িতে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে।
অপহৃত শিশুর পিতা আতাউল করিম স্বপন জানান, পুলিশি চাপের মুখে অপহরনকারীরা আমার গ্রামের বাড়ী সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার চৌবাড়ী গ্রামের বাজারে একটি দোকানের সামনে তৌফিককে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। পরে ঐ এলাকার বাসিন্দা আমার চাচাতো ভাই কবির তাকে উদ্ধার করে আমাকে জানায়। আমি এখন কুড়িগ্রাম পুলিশের সাথে সিরাজগঞ্জের পথে। আমার ধারনা অপহরনকারীরা মোটা অংকের টাকার লোভে আমার শিশু পুত্রকে অপহরণ করে। এদের পিছনে বড় কোন চক্র আছে।
তিনি আরো জানান, ঘটনার সময় ব্যবসায়ী স্বপন তার প্রতিষ্ঠান মিতা ইলেক্ট্রনিক্সে ছিলেন। বাড়ীতে বড় মেয়ে মেধা (৬), একমাত্র ছেলে তৌফিক, স্ত্রী লাকী ও খালাতো বোন জান্নাতুল ফেরদৌস রানী বাসায় অবস্থান করছিল। এর মাঝ থেকে অপহরণের ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ফোর্স নিয়ে বাসার চারদিকে তল্লাশী করে জানা যায়, রানীর বয়সী একটি মেয়েকে ওই সময় এলাকায় অবস্থান করতে দেখা যায়। এক পর্যায়ে বোরখা পড়া একজন ঘুমন্ত এক শিশুকে নিয়ে এলাকা ত্যাগ করে।
অভিযানে অংশ নেয়া কুড়িগ্রাম সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) রওশন জানান, অপহরণের ঘটনার মামলার অন্যতম আসামী জান্নাতুল ফেরদৌস রানীকে নিয়ে অপর আসামী ঐশীকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশ সিরাজগঞ্জে সাড়াশি অভিযান শুরু করেছে। ঐশীকে ধরতে পারলে এর পিছনের হোতাদের সনাক্ত করতে পারবে পুলিশ।
মন্তব্য চালু নেই