পুড়িয়ে হত্যার পর লাশ ফেলে দেয় ডোবায়
কী এমন অপরাধ ছিল স্ত্রী-পুত্রের?
ফরিদগঞ্জের আদশা গ্রামে স্ত্রী ও একমাত্র শিশুপুত্রকে পুড়িয়ে হত্যার পর লাশ ডোবায় ফেলে দেয় রাসেল নামে এক ব্যক্তি। খবর পেয়ে এলাকাবাসী ও শ্বশুরবাড়ি থেকে লোকজন গিয়ে জামাইয়ের বাড়িঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। বিক্ষুব্ধদের নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে আহত হয়েছেন কয়েকজন পুলিশ সদস্যও। এমনকি বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের ছবি তুলতে গিয়ে ধাওয়া খেয়েছেন সংবাদকর্মীরাও।
সবার প্রশ্ন- কী এমন দোষ করেছিল দশমাস বয়সী একমাত্র শিশুপুত্র? বাবা হয়ে ওইটুকুন সন্তানকে পুড়িয়ে ফেলে দিলেন ডোবার পানিতে? যে প্রিয়তম স্ত্রী স্বামীর ডাকে বাবার বাড়ি থেকে ছুটে এসেছিল শ্বশুরবাড়ি, সেও কী এমন দোষ করেছিল? তাকেও পুড়িয়ে হত্যা করে দগ্ধ শরীর ছুঁড়ে ফেলে দেয়া হয়েছে ডোবায়? এমন সব প্রশ্নের কোনো উত্তর খুঁজে পাচ্ছেন না চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার আদশা গ্রামের বাসিন্দরা।
রোববার দুপুরে লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী ফরিদগঞ্জ উপজেলার আদশা গ্রামে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে স্ত্রী-পুত্রকে।
স্ত্রী-পুত্রকে হত্যার পর পালিয়ে গেছেন ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৬নং গুপ্টি ইউনিয়নের আদশা গ্রামের হাজী বাড়ির সিরাজুল ইসলামের ছেলে রাসেল। পুলিশ তার স্ত্রী ফাতেমা বেগম (২০) ও তাদের একমাত্র শিশুপুত্র ফুয়াদের (১০ মাস) পুড়ে যাওয়া মৃতদেহ ডোবা থেকে উদ্ধার করেছে।
বছর দুয়েক আগে রাসেলের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার রাঘরপুর গ্রামের আব্দুল গফুরের মেয়ে ফাতেমা বেগমের। দশ মাস আগে তাদের ঘরে আসে ফুটফুটে সন্তান।
নিহত ফাতেমার ভাই মনির হোসেন জানান, শনিবার রাতে ফাতেমার স্বামী রাসেল ঢাকা থেকে ফিরবে বলে জানালে, তার বোন কোলের শিশুকে নিয়ে স্বামীর বাড়িতে আসে। রোববার সকালে তারা জানতে পারে ফাতেমা ও তার ছেলের লাশ বাড়ির পাশের ডোবায় পড়ে আছে। তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে ডোবায় ভাসা তার বোন ও ভাগিনার লাশ দেখতে পায়। তাদের ধারণা, তার বোন ও ভাগিনাকে পুড়িয়ে হত্যার পর লাশ ডোবায় ফেলে পালিয়ে গেছে ঘাতক রাসেল।
এদিকে, ফাতেমা ও শিশু ফুয়াদের পোড়া লাশ দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে এলাকাবাসী ও রামগঞ্জ থেকে আসা ফাতেমার স্বজনরা রাসেলের বাড়িতে হামলা চালায়। বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। খবর পেয়ে থানা পুলিশ লাশ উদ্ধারের জন্য উপস্থিত হলে বিক্ষুদ্ধ লোকজন তাদের ওপরও হামলা করে। এ সময় এসআই ইকবাল, কনস্টেবল শাহাজাহানসহ দুজন আহত হয়। ছবি তুলতে গেলে সংবাদকর্মীদের ওপরও চড়াও হয় বিক্ষুব্ধরা। পরিস্থিতি ভয়াবহ পর্যায়ে চলে গেছে ফরিদগঞ্জ থানা এবং চাঁদপুর থেকে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।
মন্তব্য চালু নেই