কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী বশির আহমেদ চীর নিদ্রায় সমাহিত হলেন
মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কবরস্থানে চীর নিদ্রায় সমাহিত হলেন কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী বশির আহমেদ। এর আগে স্থানীয় মসজিদে যোহরের নামাজ শেষে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
কিংবদন্তি এই সংগীতশিল্পী শনিবার রাতে মোহম্মদপুরের বাবর রোডের নিজ বাসায় মৃত্যুবরণ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর।
মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক ছেলে, এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তার স্ত্রীর নাম মীনা বশির, ছেলের রাজা বশির ও মেয়ে হুমায়রা বশির।
তিনি ১৯৪০ সালে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। ষাট দশকে চলচ্চিত্রের প্লেব্যাক শিল্পী হিসেবে বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেন বশির আহমেদ। তিনি ১৫ বছর বয়স থেকে ওস্তাদ বেলায়েত হোসেনের কাছে উচাঙ্গ সংগীতের তালিম নেওয়া শুরু করেন। তিনি ওস্তাদ বড়ে গোলাম আলী খাঁর কাছ থেকেও তালিম নেন।
১৯৬০ সালে তিনি কলকাতা থেকে ঢাকায় চলে আসেন। বশির আহমেদ ভারতের অধিবাসী হয়েও, বাংলাদেশে এসে তিনি তার গানের সুর ছড়িয়ে তার ভক্তদের মুগ্ধ করেন। তিনি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের বাংলাদেশ) আহমেদ রুশদী বলে পরিচিত ছিলেন। আহমেদ রুশদী পাকিস্তানি চলচ্চিত্র জগতের বিখ্যাত গায়ক ছিলেন।
ঢাকায় আসার পর বশির আহমেদের ভগ্নিপতি ইসরাত কালভি তাকে সুরকার রবিন ঘোষের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। ইশরাত সাহেব তখন তালাশ ছবির জন্য গান লিখছিলেন। ওই ছবির আরও কিছু গান লিখেছিলেন সুরুর বারাবাঙ্কভি। গানগুলোর সুর দিয়েছিলেন রবিন ঘোষ। তিনি বশির আহমেদকে একটি সুযোগ দিয়েছিলেন নিজেকে প্রমাণ করার জন্য। বশির আহমেদ তালাশ এর জন্য গান গেয়েছিলেন।
তার মধ্যে খুব রোমান্টিক একটি গান- ‘কুছ আপনি ক্যাহিয়ে, কুছ মেরি সুনিয়ে…’ চমৎকার গেয়েছেন। তালাশ ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল ১৯৬৩ সালে। ১৯৬০ সালে সংগীত-সত্য সাহা ও সুভাষ দত্ত পরিচালিত ‘আয়না ও অবশিষ্ট’ ছবিতে গেয়েছেন তার হিট করা গান-অথৈ জলে ডুবে যদি মানিক পাওয়া যায়। ১৯৬৯ সালে ময়নামতি ছবিতে ‘অনেক সাধের ময়না আমার’ এই আবেগী আর বিরহী গান দিয়ে মাত করেন বশির আহমেদ।
জীবদ্দশায় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ অসংখ্য পদক পেয়েছেন বশির আহমেদ। তার স্ত্রী মীনা বশিরও সংগীতশিল্পী। তাদের দুই সন্তান হুমায়রা বশির এবং ছেলে রাজা বশিরেরও গানের অ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছে।
গুণী এই শিল্পীর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও ডেপুটি স্পিকার মোহম্মদ ফজলে রাব্বী মিয়া। আরও শোক জানিয়েছে উদীচী, সংগীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদ।
মন্তব্য চালু নেই