কারাগারের ‘দুঃখগাথা’ বর্ণনা করলেন রওশন
কারাগারের করুণ অভিজ্ঞতার বর্ণনা সংসদে তুলে ধরলেন বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ। এসময় তিনি কারাগারের নোংরা পরিবেশ দূর করে কয়েদিদের থাকার উপযোগী করারও আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রীর প্রতি।
বৃহস্পতিবার দশম সংসদের তৃতীয় অধিবেশনের সমাপনী বৈঠকে এমন অভিজ্ঞতার বর্ণনা দেন রওশন। ‘কী অন্যায়ে’ কারাবরণ করতে হয়েছে তাকে, সে প্রশ্নও রাখেন সবার প্রতি।
রওশন বলেন, ‘আমি যখন জেলে গেলাম, তখন ছোট্ট একটা ঘরে ৫৪ জন কয়েদিকে থাকতে হলো। তাও আবার একটা মাত্র টয়লেট। বিছানাপত্র কিছুই নেই। একটা কম্বল দেয়া হলো। আমার খাওয়াও নেই, সাধারণ কয়েদিদের খাবার নিয়ে আসা হয়েছে আমার জন্য। সেগুলো খাওয়া যায় না, আমি খেতে পারিনি। আমার এমন অবস্থা দেখে পাশের অন্য একজন মহিলা আমার জন্য জেলগেট থেকে চা, বিস্কুট ও কলা নিয়ে আসেন।’
রওশন আরও বলেন, ‘তারপর আমাকে দেয়া হলো কনডেম সেল। দুই হাত বাই তিন হাতের ছোট রুম। সাতদিন কোনো খাওয়া নেই। না খেয়ে আমার একশ ছয় ডিগ্রি জ্বর উঠলো, ইনফেকশান হলো। আমাদের অন্যায় কী ছিল? একটা অভিযোগের জন্য চার রকম শাস্তি হলো আমাদের।’
‘ক্ষমতা ছেড়ে দেয়ার পরে দেশ ছেড়ে যায়নি’ বলেই তাকে এমন শাস্তি ভোগ করতে হয়েছে বলে দাবি করেন রওশন। তিনি বলেন, ‘আমরা দেশ ছেড়ে যাইনি বলে আমাদের নামে মামলার পর মামলা দেয়া হলো। একাধারে ৫৪টি মামলা দেয়া হয়েছে।’
নিজের কারাবরণের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে কারাগারগুলো সংস্কারের দাবি তোলেন প্রথমবারের মতো বিরোধীদলীয় এ নেতা। তিনি বলেন, ‘ওখানে তো মানুষ থাকে। কয়েদিরাও তো মানুষ। জেলগুলো সংস্কার করা হোক। আমি দেখেছি, অনেক মহিলা বিনা কারণে বন্দী আছে, তাদের বের করার কেউ নেই বলে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকেই উদ্যোগ নিতে হবে।’
তার এমন অভিজ্ঞতা বর্ণনার সময় প্রধানমন্ত্রীও ইশারায় বলেন, তিনিও কারাবরণ করেছেন। পাশে থাকা মতিয়া চৌধুরীও একইভাবে তাতে সায় দেন।
মন্তব্য চালু নেই