কারণ তাহলে হোয়াটমোর!
বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে প্রথমবার অধরা শ্রীলংকাকে পর্যদুস্ত করেছিল বাংলাদেশ, ২০০৬ সালে। ওই জয়ের পর বাধনহারা উল্লাসে ফেটে পড়ে সারাদেশ। উত্তাপটা একটু বেশি ছড়িয়েছিল শহীদ চান্দুতে। বাংলাদেশকে জয়ের পথে দেখে ক্রিকেটারদের ফুল দিয়ে বরণের জন্য ব্যাপক আয়োজন করা হয়। আর এটা দেখে বিগড়ে গিয়েছিলেন তখনকার বাংলাদেশ কোচ ডেভ হোয়াটমোর। পরে সংবাদমাধ্যমেও নিজের ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছিলেন। আসলে পেশাদার কোচদের ওসব একটা-দুটো জয়ে তৃপ্তি হয় না! হোয়াটমোরেরও হয়নি।
এরপর বাংলাদেশ গেল ২০০৭ ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে বিশ্বকাপ খেলতে। সেখানে বাংলাদেশ ভারতকে বিপর্যস্ত করে সুপার এইটে উঠে হারিয়ে দিল দক্ষিণ আফ্রিকাকেও। এখনও অবধি বাংলাদেশের কাছে সেরা বিশ্বকাপ সাফল্য ওই ক্যারিবিয়ান বিশ্বকাপই। হোয়াটমোরের ছোঁয়ায় বদলে গিয়েছিল বাংলাদেশ। ঠিক এখন যেমনটা হচ্ছে জিম্বাবুয়ে। এই তো ক’দিন আগের কথা। বাংলাদেশে এসে কি টেস্ট, কি ওয়ানডে- সিরিজ দুটিতেই নাকানিচুবানি খেয়ে গেল জিম্বাবুয়ে। এরই জেরে কোচকে বরখাস্ত পর্যন্ত করে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট বোর্ড।
অথচ সেই জিম্বাবুয়েই এবার অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডে গিয়ে কেমন বদলে গেলা। প্রস্তুতি ম্যাচে হারিয়েছে শ্রীলংকাকে। দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হারলেও, ম্যাচের আগে হেরে বসেনি। লড়াই করে হেরেছে। তাহলে কোন যাদুর স্পর্শে এতটা বদলে গেলো তারা!
মূলতঃ বাংলাদেশ ব্যর্থতার পর স্টিফেন ম্যাঙ্গেঙ্গোকে সরিয়ে দিয়ে নিয়োগ দেয়া হয় অস্ট্রেলিয়ান কোচ ডেভ হোয়াটামোরকে। তার ছোঁয়াতেই রোববার দক্ষিণ আফ্রিকার সেরা বোলিং অ্যাটাকের বিপক্ষে দুর্দান্তভাবে ব্যাট চালিয়েছে জিম্বাবুইয়ানরা। ৩৩৯ রানের জবাবে তারা অলআউট হয়েছে ২৭৭ রানে। হেরেছে ৬২ রানে। কিন্তু তার আগে যে লড়াই করেছে জিম্বাবুয়ে, সেটাই আসলে দেখিয়ে দিচ্ছে হোয়াটমোর ক্যারিশমা।
বাংলাদেশ বিশ্বকাপের সপ্তাহ দুয়েক আগে অস্ট্রেলিয়া গিয়েও চারটি প্রস্তুতি ম্যাচের একটিও জিততে পারেনি। আর জিম্বাবুয়ে বাংলাদেশের কাছে হতশ্রি পারফরম্যান্স প্রদর্শন করলেও প্রস্তুতি ম্যাচে শ্রীলংকার ছুড়ে দেওয়া ২৮০ রান তাড়া করে জিতেছে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ফলাফল না হওয়া ম্যাচেও কিউইদের যথেষ্ট ভুগিয়েছেন জিম্বাবুইয়ানরা। ৩০.১ ওভারে স্কোরবোর্ডে ১৫৭ রান তুলতেই ৭ উইকেট হারিয়ে বসেছিল নিউজিল্যান্ড।
সেই প্রস্তুতি ম্যাচের ধারাবাহিকতাই জিম্বাবুয়ে টেনে এনেছে বিশ্বকাপের মূলমঞ্চে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে শুরুর আগেই হারা নয়, বরং লড়াই করে হেরেছে এলটন চিগুম্বুরার দল। কারও বুঝতে বাকি নেই এটা সম্ভব হয়েছে স্রেফ হোয়াটমোরের কারণে। যেমনটি হয়েছিল শ্রীলংকার বেলায়ও। ১৯৯৬ সালে এই দলটিকে তিনি বিশ্বচ্যাম্পিয়ন বানিয়েছিলেন।
মন্তব্য চালু নেই