কাউন্সিলের আগেই গ্রেপ্তার হতে পারেন মির্জা ফখরুল !

আর মাত্র কদিন বাকি বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলের। বিএনপির কাউন্সিলের আগেই গ্রেপ্তার হতে পারেন মির্জা ফখরুল আলমগীর। কারণ, নাশকতার তিন মামলায় তার জামিনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে কাউন্সিলের ঠিক চার দিন আগে। এখন নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করে তাকে তাকে জামিন চাইতে হবে।

মির্জা ফখরুলসহ দলের অনেকেরই আশঙ্কা, নাশকতার মামলায় তিনি নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করলে জামিন নাও মিলতে পারে। এর আগে একাধিকবার উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী নিম্ন আদালতে জামিন চাইলেও তা তিনি পাননি। ফলে আদালত থেকে সোজা কারাগারে যেতে হয়েছে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবকে।

এবারও তা-ই ঘটতে পারে বলে্- নানা ঘরোয়া আলাপে মির্জা ফখরুল এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।

নাশকতার অভিযোগে পল্টন থানার তিন মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুলের জামিনের মেয়াদ গত ২৯ ফেব্রুয়ারি ১৫ দিন বাড়িয়েছে আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ এ জামিন দেয়। নিয়ম অনুযায়ী এই মেয়াদ শেষে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করে তাকে নতুন করে জামিন চাইতে হবে।

এদিকে দল পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে কাউন্সিলের আগেই বিএনপির চেয়ারপারসন ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান পদে ইতিমধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। কাউন্সিলে মহাসচিবসহ দলের নির্বাহী কমিটি গঠন করা হবে। তবে অন্যান্য পদের চেয়ে বিএনপির পূর্ণ মহাসচিব কে হচ্ছেন তা নিয়ে জল্পনা কল্পনা সবচেয়ে বেশি!

অনেকে বলছেন, এবার ‘ভার’মুক্ত হবেন মির্জা ফখরুল। আবার ভিন্নমতও আছে। অনেকের ধারণা, এই পদে নতুন মুখ আসার সম্ভাবনা আছে। তবে বেশির ভাগ নেতাকর্মী ফখরুলের ‘পূর্ণ’ মহাসচিব হওয়ার সম্ভাবনার কথা বলছেন।

এদিকে নিজের পদ-পদবি নিয়ে কোনো ভাবনা নেই বলে দাবি মির্জা ফখরুলের। তবে তার ঘনিষ্ঠ সূত্রের খবর বলছে, নিজেকে ‘ভার’মুক্ত করতে তিনি (মির্জা ফখরুল) নানামুখী চেষ্টা করে যাচ্ছেন। কাউন্সিলরদের অনেকের সঙ্গেও যোগাযোগ করছেন।

কারণ বিএনপির শীর্ষ নেতাদের একপক্ষ মির্জা ফখরুলকে সরিয়ে অন্য কাউকে মহাসচিব করার পক্ষে কাজ করছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। ফখরুলবিরোধী বলয়ের একজন নীতিনির্ধারণী ফোরামের প্রভাবশালী সদস্যের গণমাধ্যমে দেয়া বক্তব্যে মহাসচিব পদে নিজের আগ্রহের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। তার ওই বক্তব্য ছাপার জন্য ওই প্রতিবেদকের ওপর মির্জা ফখরুল মৃদু ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন বলে জানা গেছে।

তবে জল্পনা-কল্পনা যা-ই হোক, এবার মির্জা ফখরুল মহাসচিব হচ্ছেন বলে দাবি বিএনপির একজন ভাইস চেয়ারম্যানের। বৃহস্পতিবার আলাপকালে তিনি বলেন, “এবার মির্জা ফখরুল ভারমুক্ত হচ্ছেন এটা অনেকটা নিশ্চিত। আমার বিশ্বাস, এই পদে বিকল্প কেউ আসবেন না।”

এদিকে নিজের ভারমুক্ত হওয়া-না হওয়ার আলোচনার মধ্যে কাউন্সিলের আগ মুহূর্তে জামিন মিলবে কি না তা নিয়ে মির্জা ফখরুল আরেক দফা দুশ্চিন্তায় পড়লেন। সম্প্রতি ঘরোয়া আলোচনায় জামিনের মেয়াদ ১৫ দিন বাড়ানো নিয়ে ফখরুল বলেন, “এটা কাউন্সিল বাধাগ্রস্ত করতে এটা সরকারের ষড়যন্ত্র। আর আমার তো নিম্ন আদালত থেকে কখনো জামিন মেলেনি।”

এ বিষয়ে কথা বলতে একাধিকবার মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।

তবে তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া বলেন, “নিয়ম অনুযায়ী তাকে (মির্জা ফখরুল) জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরই আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইতে হবে। এখন জামিন দেয়া-না দেয়া আদালতের বিষয়। এ নিয়ে আগ বাড়িয়ে কিছু বলতে চাই না।” ঢাকাটাইমস



মন্তব্য চালু নেই